রাজপুত্র কিভাবে রাজকন্যাকে পেলো
রাজপুত্র কীভাবে রাজকন্যাকে পেল
![]() |
রাজপুত্র কীভাবে রাজকন্যাকে পেল |
উত্তর : দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার সম্পাদিত “ঠাকুরমার ঝুলি” গ্রন্থের অন্তর্গত 'ঘুমন্তপুরী' গল্পে একদিন রাজপুত্রের মনে হলো দেশভ্রমণে যাইবে। রাজপুত্র দেশভ্রমণে যাবার সময় লোকজন, মণিমাণিক্য চর অনুচর কিছুই সঙ্গে নিল না। দেশভ্রমণে যাইতে যাইতে একটি রাজপুরী দেখলে পেল।
রাজপুত্র রাজপুরীর ভেতরে গিয়ে দেখতে পেল১৯২এখানকার রাজা মন্ত্রী, সিপাই, পাত্র, মিত্র, ভাট বন্দী সব পাথরের মূর্তি। তখন রাজপুত্র এক কুঠুরিতে গিয়ে দেখতে পেল কত শত প্রদীপ এক সঙ্গে জ্বলিতেছে। কত রকমের ধনরত্ন, কত হীরা, কত মানিক, কত মোতি কুঠুরিতে আর ধরে না।
রাজপুত্র অন্য কুঠুরিতে গিয়ে দেখল হাজার হাজার ফুল, জল নাই চল নাই, কুঠুরির মাঝখানে লাখে লাখে পদ্মফুল ফুটিয়া রহিয়াছে। রাজপুত্র ফুলবনের কাছে গিয়া দেখলেন সোনার খাট, সোনার খাটে হীরার ডাঁট, হীরার ডাঁটে ফুলের মালা ডোলান রহিয়াছে।
সেই মালার নিচে হীরার নলে সোনার পর, সোনার পথে এক পরমা সুন্দরী রাজকন্যা বিভোরে ঘুমাইতেছে। রাজপুত্র রাজকন্যাকে বিভোর হইয়া দেখিতে লাগিল। দেখতে দেখতে কত বছর পার হইয়া গেল কিন্তু রাজকন্যার ঘুম আর ভাঙে না।
হঠাৎ একদির রাজকন্যার শিয়রে সোনার কাঠি আর একদিকে রুপার কাঠি দেখতে পেল। দুই কাঠি হাতে লইয়া রাজপুত্র নাড়িয় চাড়িয়া দেখিতে লাগিলেন। দেখতে দেখতে সোনার কাঠি কখন টুক করিয়া ঘুমন্ত রাজকন্যার মাথায় ভূঁইয়া গেল।
অমনি পদ্মের বল শিউরে গেল, সোনার খাট নাড়িয়া উঠিল, সোনার পাপড়ি করিয়া পড়িল, রাজকন্যা হাত পা নাড়িয়া, গায়ের অলস ভাঙ্গিয়া বসিল। অমনি রাজপুরীর চারিদিকে পাখি ডাকিয়া উঠিল, দুয়ারী দুয়ারে হাঁক ছাড়িল, রাজা মন্ত্রী পাত্র জাগিলেন।
হাজার বছরের ঘুম হইতে যে যেখানে ছিলেন সবাই জাগিয়া উঠিল। এতে রাজা রাজপুত্রের উপর খুশি হয়ে রাজকন্যা এবং রাজত্ব তার হাতে তুলে দিল।