কাজা নামাজ কিভাবে পড়তে হয় | ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময় এবং নিয়ত

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় বন্ধু আপনি কি কাজা নামাজের নিয়ত ও কাজা নামাজ আদায় করার নিয়ম ও কাযা নামাজের হাদিস জানতে ইচ্ছুক। যদি তাই হয় তাহলে আপনাকে কাজা নামাজের নিয়ত ও কাজা নামাজ আদায় করার নিয়ম পোস্টে আপনাকে স্বাগতম।

কাযা নামাজের নিয়ত  কাযা নামাযের নিয়ম, বিধান ও হাদিস
কাযা নামাজের নিয়ত  কাযা নামাযের নিয়ম, বিধান ও হাদিস

তো বন্ধুরা আমরা একজন মুস্লিম হিসেবে আমাদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। যদি সেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে কোনো কারনে যদি এক ওয়াক্ত নামাজ কাজা হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আমাদের কাযা নামাজ কিভাবে আদায় করবেন সে বিষয় আমরা আজকের পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছি। 

চল জেনে নিই কাযা নামায পড়িবার নিয়ম। যোহরের, আসরের, মাগরিবের, এশার ও ফজরের কাযা নামাজ পড়ার নিয়ম জানার আগে আমরা নিচের সুচিপত্র টি দেখে নিয় কি কি থাকবে আমাদের আজকের পোস্টে।

সুচিপত্রঃ কাজা নামাজ কিভাবে পড়তে হয় | ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময় এবং নিয়ত | kaja namaj porar niom

কাযা নামাজের হাদিস

যে নামাজের যে সময় নির্ধারিত আছে, সেই সময়ের মধ্যে তাহা আদায় না করিলে জিম্মাদারী হইতে মুক্তিলাভ হয় না। পরে সেই নামাজ অবশ্যই আদায় করিতে হয়। সময় মত পড়ে নাই বা পড়িতে পারে নাই বলিয়া পরেও পড়িতে হইবে না, তাহা নয় । 

বিনা ওজরে-ওয়াজিব নামাজ যথাসময়ে না পড়িলে গুনাহ হয়। সুতরাং বিনা ওজরে শুধু আলস্য হেতু সময় মত নামাজ না পড়ার গুনাহ কিছুতেই করা উচিত নয় ।

বিশেষ কোন ওজরে ফরজ ও ওয়াজিব নামাজ যথাসময়ে পড়িতে না পারিলে পরে তাহা অবশ্যই পড়িতে হয়। নির্দিষ্ট সময় পার হইয়া যাইবার পরে কোন নামাজ পড়িলে তাহা কাযা নামাজ’ নামে অভিহিত হয়।

কাযা নামাজের বিধান

ফরজ নামাযের কাযা আদায় করা ফরয। ওয়াজিব নামাযের কাযা আদায় করা ওয়াজিব। মুসাফির অবস্থায় যে নামায কাযা হয়েছে তা মুকীম অবস্থায় আদায় করা হলে মুসাফিরের মত আদায় করতে হবে। 

আর মুকীম অবস্থায় যে নামায কাযা হয়েছে তা মুসাফির অবস্থায় আদায় করলে চার রাকআতের নামায চার রাকআতই আদায় করতে হবে। (ফতােয়ায়ে আলমগীরী) মা’যুর অবস্থায় সুস্থ অবস্থার নামায কাযা আদায় করলে বসে বা শয়ন করেই সে নামায আদায় করবে। 

যেহেতু মা’যুর অবস্থায় দাড়িয়ে নামায আদায় করা তার জন্য সম্ভব ছিল না। পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে এবং দাড়িয়ে নামায আদায় করতে সক্ষম। হলে পুনরায় সে নামায আদায় করতে হবে না। 

আবার মা'যুর অবস্থায় নামায কাযা হয়ে থাকলে সুস্থ হবার পর তা আদায় করার সময় শয়ন করে বা বসে আদায় করতে হবে না, দাঁড়িয়েই তা আদায় করতে হবে। (ফতােয়ায়ে আলমগীরী)

যে সব কারণে নামাজ কাযা করা যায় 

যদি কারাে মনে এরূপ ধারণা উদয় হয় যে, শত্ৰু অতি নিকটে। সে যদি। নামাযে দাঁড়ায় তাহলে শত্রু তার উপর আক্রমণ করতে পারে অথবা মুসাফির যদি এরূপ ধারণা করে যে, সে নামাযে দাঁড়ালে তার মালপত্র সব কিছু চুরি হয়ে যাবে তাহলে নামায কাযা করা জায়েয আছে। (ফতওয়া ও মাসয়ালা)

সন্তান প্রসব করার সময় ধাত্রীর জন্য নামায কাযা করা জায়েয আছে। কারণ ধাত্রীর সামান্য বিলম্বের কারণে মা ও শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। (গায়াতুল আওতার)

কেউ যদি ঘুমিয়ে থাকে এবং ওয়াক্ত চলে যাবার পর তার ঘুম ভাঙ্গে কেউ যদি নামাযের কথা একেবারে ভুলে যায় এবং নামাযের সময় অতিবাহিত হবার পর মনে পড়ে তাহলে তার এ নামায কাযা আদায় করা ফরয। কিন্তু এ বিলম্বের কারণে তার কোন গুনাহ হবে না। তবে নামাযের ওয়াক্ত হওয়ার পর নামায আদায় না করে ঘুমানাে জায়েয নয়।

কাজা নামাজের নিয়ত বাংলা | kaja namajer niyot

নামাযের নিয়তও আরবীতে করার কোন প্রয়ােজন নেই। আরবীতে নিয়ত করতে হলে কাযা নামায ও ওয়াক্তিয়া নামাযের নিয়ত একই ধরনের। 

তবে পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, কাযা নামাযে অন উসাল্লিয়া শব্দের জায়গায় আন আকদিয়া এবং যে ওয়াক্ত নামাযের কাযা আদায় করা হবে তার নাম উচ্চারণ করার পর আল ফাইতাতি অর্থাৎ অনাদায়ী শব্দটি বাড়িয়ে বলতে হবে। যেমন ঃ ফজরের নামায কাযা হলে নিয়ত করবে ?

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন আকদিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকআতাই সালাতিল ফাজরিল ফাইতাতি ফারদুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।।

বাংলা নিয়ত: আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে বিগত অনাদায়ী ফজরের দুই রাকআত ফরয নামাযের কাযা আদায় করার নিয়ত করলাম আল্লাহু আকার ।।

যোহরের, আসরের, মাগরিবের, এশার ও ফজরের কাযা নামাজ পড়ার নিয়ম

কয়েকজন লােকের নামায যদি কাযা হয়ে থাকে তাহলে তারা এ নামায জামাআতের সাথে আদায় করতে পারবে। ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করার যে নিয়ম রয়েছে, কাযা নামায আদায় করার জন্যও সেই একই নিয়ম প্রযােজ্য হবে। 

যােহর ও আসর নামাযে ইমাম সাহেব চুপে চুপে কিরাআত পাঠ করবে এবং ফজর,মাগরিব ও ইশার নামাযে উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠ করবে। এত ওয়াক্তের নামায দিনে বা রাতে যখনই আদায় করা হােক না কেন।

মুসাফির ও মুকীমের কাযা আদায় করার হুকুম

সফর অবস্থায় যদি কোন মুসাফির ব্যক্তির নামায কাযা হয় আর মুকীম অবস্থায় যদি তার কাযা আদায় করা হয় তাহলে কসররূপেই সে কাযা আদায় করতে হবে। 

আর মুকীম অবস্থার কাযা নামায মুসাফির অবস্থায় আদায় করা হলেও তা পূর্ণ চার। রাকআতই আদায় করতে হবে। (ফতােয়ায়ে শামী)

সুন্নত ও নফল নামাজের কাযা

সুন্নত ও নফল নামাযের কাযা আদায় করতে হয় না। তবে ফজরের ফরয নামাযের পূর্বে যে দু'রাকআত সুন্নত আছে কেবল এই দুই রাকআত সুন্নতের কাযা আদায় করার বিধান রয়েছে। এছাড়া অন্য কোন সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিংবা সুন্নতে যায়েদার কোন কাযা নেই।

যদি ফজরের ওয়াক্তে শুধু ফরয আদায় করা হয়, আর সুন্নত আদায় করা না হয়ে থাকে, তাহলে ইমাম মুহাম্মদ (রহঃ)-এর মতে সূর্য উদয় হওয়ার পর হতে বেলা দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত যে কোন সময় তা আদায় করে নেয়া উত্তম। (বাদায়েউস সানায়ে)। 

যদি ফজরের ফরয ও সুন্নত কোনটিই আদায় করা না হয়, তাহলে যােহরের ওয়াক্ত হওয়ার পূর্বে কাযা আদায় করা হলে ফরয ও সুন্নত উভয়টির কাযাই আদায় করতে হবে। কিন্তু যদি যােহরের ওয়াক্ত হওয়ার পর কাযা আদায় করা হয় তাহলে শুধু ফরয দু'রাকআতের কাযা আদায় করতে হবে, সুন্নতের কাযা আদায় করতে হবে না।

কাযা নামাযের ধারাবাহিকতার বিধান | কাযা নামাযের বিধান | কাযা নামাজের বিধান

নামাজের কাজা পড়িবার বেলায়ও আগের নামাজ আগে এবং পরের নামাজ পরে পড়িবে। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি জোহর, আছর এবং মাগরিব এই তিন ওয়াতের নামাজ পড়িতে পারে নাই। অতঃপর কাজা পড়িবার সময়ে প্রথম জোহরের কাজা, তারপর আছরের কাজা এবং শেষে মাগরিবের কাজা পড়িবে ॥(রাঃ মােঃ)।

যে ব্যক্তি মাত্র এক ওয়াতের নামাজ পড়িতে পারে নাই, সে উহার কাজা না। পড়িয়া পরবর্তী উপস্থিত ওয়াতের নামাজ পড়িলে শুদ্ধ হইবে না। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি মাগরিবের নামাজ পড়িতে পারিল না, সে মাগরিবের কাজা না পড়া পর্যন্ত। এশার নামাজ পড়িবে না। 

প্রথমে মাগরিবের কাজা পড়িবে, তারপর উপস্থিত এশার। নামাজ পড়িবে। দ্রুপ, যে ব্যক্তির একাদিক্রমে দুই, তিন, চারি বা পাচ ওয়াকতের নামাজ ছুট গিয়াছে এবং এইগুলাে ব্যতীত তাহার জিম্মায় অন্য কোন নামাজের। 

কাজা পড়া বাকী নাই, সেই নামাজের ‘তারতীব’ অনুসারে অর্থাৎ প্রথমে ফরজ, তারপর জোহর, তারপর আছর-এই নিয়মে উক্ত ছুট যাওয়া নামাজগুলাে কাজা। পড়িবে। অন্যথায় উপস্থিত ওয়াতের নামাজ শুদ্ধ হইবে না ।(শাঃ তাঃ)।

এক হইতে পাঁচ ওয়াকত পর্যন্ত নামাজ ছুট গেলে প্রথমে এই পাঁচ ওয়াকতের কাজা পড়িতে হইবে, তারপর উপস্থিত ওয়াকতের নামাজ পড়িবে ; আর কাজা পড়িবার বেলায় আগের নামাজ আগেই পড়িতে হইবে। কাজা নামাজ পড়িবার ইহাই সাধারণ নিয়ম।

যে সব কারণে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব নয়

কিন্তু, যে-ব্যক্তির একাদিক্রমে ছয় ওয়াকতের নামাজ ছুট গিয়াছে, সে। ঐগুলাের কাজা না পড়িয়াই উপস্থিত ওয়াকতের নামাজ পড়িলে শুদ্ধ হইবে । পরে সুযােগ মত উক্ত নামাজগুলাের কাজা পড়িবে এবং কাজা পড়িবার সময় তারতীব’ রক্ষা করা অর্থাৎ আগের নামাজ আগে পড়াও তাহার জন্য জরুরী নয়। আরও দুইটি কারণ আছে, যাহাতে কাজা নামাজ জিম্মায় রাখিয়া উপস্থিত ওয়াতের নামাজ পড়া দুরস্ত হয় । যথা :

(১) সময় যদি এইরূপ সংকীর্ণ হয় যে, কাজা নামাজ পড়িতে গেলে উপস্থিত ওয়াকতের নামাজও কাজা হইয়া যাইবে। যেমন, কোন ব্যক্তির পূর্বের দিনের এশা, তাহার পরের দিনের ফজর, জোহর ও আছরের নামাজ ছুট গিয়াছে। এই অবস্থায় মাগরিবের সময়ও উপস্থিত হইয়াছে। এখন সে যদি উপরােক্ত নিয়ম অনুসারে প্রথমে কাজা নামাজগুলাে পড়িতে থাকে, তাহা হইলে তাহার মাগরিবও কাজা হইয়া যাইবে।।

অথবা, কোন ব্যক্তি সূর্যাস্তের অল্পক্ষণ পূর্বে আছরের নামাজ পড়িতে আসিল, অথচ কয়েক ওয়াকতের কাজাও জিম্মায় রহিয়াছে। এই অবস্থায় কাজা নামাজগুলাে পড়িতে গেলে উপস্থিত আছরের নামাজও কাজা হইয়া যাইবে। অনুরূপক্ষেত্রে কাজা না পড়িয়া উপস্থিত ওয়াতের নামাজ পড়া দুরুস্ত হইবে। (হেদায়া) 

(২) কাজা নামাজ জিম্মায় রহিয়াছে, তাহা স্মরণ না থাকা। যেমন, কোন ব্যক্তি ফজরের নামাজ যথাসময়ে পড়িতে পারে নাই। জোহরের সময়ে ফজরের কাজা পড়ার কথা ভুলিয়া গিয়া সে উপস্থিত জোহরের নামাজ পড়িয়া ফেলিল ইহাতে তাহার জোহরের নামাজের কোন ক্ষতি হয় নাই। ফজরের কাজার কথা যখন স্মরণ হইবে, অবিলম্বে তাহা পড়িয়া লইবে । (হেদায়া)

পূর্বে বলা হইয়াছে যে, একাদিক্রমে ছয় ওয়াক্ত কিম্বা উহার অধিক ওয়াকতের কাজা নামাজ একত্র হইলে ‘তারতীব' পালন করা জরুরী নয়। সুতরাং যাহার দশ-বিশ দিনের নামাজের কাজা পড়িতে হইবে, তাহার দৈনিক কিছু কিছু করিয়া কাজা নামাজ পড়িয়া লওয়া উচিত। 

এক দিকে সমস্ত কাজা পড়িয়া লওয়া সম্ভবপর। হইলে তাহাই করিবে। একত্রে কয়েক ওয়াকতের কাজা পড়া সম্ভব না হইলে, অন্ততঃ পাঞ্জেগানা নামাজের প্রত্যেক ওয়াতে ছুট যাওয়া এক-এক ওয়াকতের। কাজা পড়িয়া লইবে । (দোঃ মােখতার)

কাযা নামাযের সংখ্যা জানা না থাকলে করণীয়

কোন ব্যক্তির জীবনে কি পরিমাণ নামায কাযা হয়েছে তা যদি জানা না থাকে তাহলে চিন্তা ভাবনা করে সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করে সে অনুযায়ী অতীতের নামায সমূহের কাযা আদায় করতে হবে। 

যদি সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করতে না পারে তবে অনুমান করে কাযা আদায় করতে থাকবে। যখন মন নিশ্চিত সাক্ষ্য দিবে যে আর কোন কাযা নামায তার দায়িত্বে নেই তখন হতে আর কাযা নামায় আদায় করতে হবে না।

উমরী কাযা নামাজ আদায়ের নিয়ম

হাদীসের ভাষায় উমরী কাযা বলে কোন শব্দ নেই। কাযা নামাযের পরিমাণ যদি ছয় ওয়াক্ত বা ততােধিক হয়, তাহলে ফিকাহর পরিভাষায় এ ধরনের কাযাকে উমরী কাযা নামে অভিহিত করা হয়েছে। 

এ কাযা নামাযগুলাে একাধারে ছয় ওয়াক্তের হতে পারে অথবা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ওয়াক্তের নামায কাযা হয়ে ছয় ওয়াক্ত হতে পারে। 

ছয় ওয়াক্ত বা ততােধিক নামায কাযা হয়ে গেলে তা ওয়াক্তিয়া নামাযের। পূর্বে আদায় করে নেয়ার তারতীব বা ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আর ওয়াজিব থাকে। নিষিদ্ধ এবং মাকরূহ ওয়াক্ত ব্যতীত যে কোন সময় তা আদায় করা যায় । 

বিগত জীবনের কাযা নামাজ আদায়ের নিয়ম

যদি কোন ব্যক্তির অনেক মাস বা কয়েক বছর একাধারে নামায কাযা হয়ে। থাকে তাহলে সে প্রথমত হিসাব করে নিবে কতদিনের নামায সে আদায় করেনি। যত ওয়াক্ত নামায কাযা হয়েছে বলে মনে প্রবল ধারণা হবে, সতর্কতা হিসেবে তার। 

চেয়ে কিছু বেশী ওয়াক্ত হিসাব রাখবে। অতঃপর নামাযের নিষিদ্ধ সময়গুলাে। ব্যতীত অন্য যে কোন সময় কাযা আদায় করতে থাকবে। সহজভাবে আদায় করার । একটি পদ্ধতি হচ্ছে, যখন যে ওয়াক্তিয়া নামাযটি আদায় করবে তখন সে ওয়াক্তের । বিগত জীবনের এক দুই ওয়াক্ত করে কাযা নামায আদায় করবে।

উমরী কাযা নামাজের নিয়ত

উমরী কাযা নামায আদায় করার সময় মনে মনে এ নিয়ত করবে যে, আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে অমুক দিনের অমুক ওয়াক্তের এত রাকআত ফরয। নামাযের কাযা আদায় করার নিয়ত করলাম আল্লাহু আকবার। 

যদি দিন তারিখ নির্দিষ্ট করা সম্ভব না হয় তাহলে, এভাবে নিয়ত করবে যে, আমার জিম্মায় যতগুলাে যােহরের নামায কাযা রয়েছে তার প্রথমটি আদায় করার। নিয়ত করলাম আল্লাহু আকবার। অন্যান্য ওয়াক্তের কাযা নামায আদায় করার। সময়ও অনুরূপভাবে নিয়ত করবে।

মুমূর্ষ ব্যক্তির কাযা নামাজের কাফফারা আদায়

যদি কোন ব্যক্তি কাফফারা আদায় করার জন্য অসিয়ত না করেই মৃত্যুবরণ করে অথবা কাফফারা আদায় করার জন্য প্রয়ােজনীয় সম্পদ রেখে না যায় তাহলে

মৃত ব্যক্তির পক্ষে কাফফারা আদায় করা উত্তরাধিকারীদের উপর ওয়াজিব নয়। তবে মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীরা যদি স্বেচ্ছায় ও সন্তষ্টচিত্তে কাফফারা আদায় করে দেয় তাহলে তা জায়েয আছে।

মৃত ব্যক্তির কাযা নামায ও রােযার কাফফারা আদায় করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্থানে আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের কুপ্রথা চালু রয়েছে। কোন কোন জায়গায় অনাদায়ী নামায-রােযার মােট ফিদিয়া হিসেব করে এর পরিবর্তে একখানা বা ততােধিক কুরআন শরীফ দান করে থাকেন। 

এতে পূর্ণ কাফফারা আদায় হবে না, তবে কুরআন শরীফের বাজার মূল্যের সমপরিমাণ কাফফারা আদায় হবে মাত্র । কারাে মৃত্যুর পর কুরআনখানি, মিলাদ শরীফ, কাঙ্গালী ভােজ ইত্যাদি করা হলে এর দ্বারা কাফফারা আদায় হবে না। পৃথকভাবে তা আদায় করতে হবে ।

যে সব অবস্থায় নামায কাযা হলে তা আদায় করা ওয়াজিব হবে না 

  • পাগল অবস্থায়: কোন ব্যক্তি পাগল অবস্থা হতে সুস্থ হলে পাগল অবস্থায় যে সব নামায আদায় করা হয়নি তার কাযা করা তার জন্য ওয়াজিব নয়। তবে ছয় বা তার অধিক ওয়াক্ত পরিমাণ সময় পাগল অবস্থায় কেটে গেলে তখনই এ বিধান প্রযােজ্য হবে।
  • বেহুশ অবস্থায়, মৃগীরােগ বা অন্য কোন রােগে আক্রান্ত হয়ে ছয় ওয়াক্ত বা তার অধিক সময় বেহুশ অবস্থায় থাকলে এ সময়ের নামাযের কাযা আদায় করা ওয়াজিব নয়।।
  • নাবালেগ অবস্থায়: যে সব নামায আদায় করা হয়নি, বালেগ হবার পর সে সব নামাযের কাযা আদায় করতে হবে না। কারণ নাবালেগ অবস্থায়তাে তার উপর নামায ফরযই হয় নি।
  • মহিলাদের হায়েয ও নেফাসের দিনগুলােতে নামায ফরয থাকে না। তাই এ সময়ের নামাযের কাযা আদায় করতে হবে না। তবে ঐ সময়ের ফরয রােযার কাযা। আদায় করতে হবে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ কাযা নামাজের নিয়ত | কাযা নামাযের নিয়ম, বিধান ও হাদিস

বন্ধুরা আমরা এতক্ষন জেনে কাযা নামাজের নিয়ত | কাযা নামাযের নিয়ম, বিধান ও হাদিস। যদি আজকের এই কাযা নামাজের নিয়ত, কাজা নামাজের নিয়ম বা কাযা নামায পড়িবার নিয়ম, কাযা নামাজের বিধান ও কাযা নামাজের হাদিস পোস্ট টি ভালো লাগে তাহলে নিচে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আর হ্য বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরকে জানাবেন। এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইট টি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ