'বিসর্জন' নাটক অবলম্বনে সংক্ষেপে জয়সিংহের পরিচয় দাও
'বিসর্জন' নাটক অবলম্বনে সংক্ষেপে জয়সিংহের পরিচয় দাও
![]() |
'বিসর্জন' নাটক অবলম্বনে সংক্ষেপে জয়সিংহের পরিচয় দাও |
উত্তর: রঘুপতির সহকারী পুরোহিত ও পালকপুত্র জয়সিংহ। রাজপুত তনয় জয়সিংহ আবাল্য রঘুপতির কাছে লালিত বর্ধিত। রঘুপতির শিক্ষায় সে কালিকে ভক্তি করে। রঘুপতির উপর তার দৃঢ় ভক্তি, সে তার পালকপিতা।
ছাগশিশুর জন্য অপর্ণার কান্না জয়সিংহের সংস্কারে আঘাত হানে, সে মানবপ্রেমে উজ্জীবিত হয়। প্রথাধর্ম ও মানবধর্ম তাকে দ্বন্দ্ব বিক্ষুব্ধ করে তোলে। রঘুপতি জানায় দেবী রাজরক্ত চায়- গুরুর কথায় সে রাজা গোবিন্দমাণিক্যকে হত্যাতে উদ্যত হয়, কিন্তু রাজার কাছ থেকে জানতে পারে রঘুপতি কণ্ঠ নকল করে রক্ত চেয়েছে। মানবতা-প্রীতি স্নেহের দিকে জয়সিংহ ঝুঁকে পড়ে।
রঘুপতি জয়সিংহের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়, অভিমান করে। জয়সিংহের কাছে এখন হৃদয় ধর্ম বড়, তবুও সে গুরুর ঋণ শোধ করতে প্রতিজ্ঞা করে- শ্রাবণের শেষরাতে এনে দেব রাজরক্ত। শেষ পর্যন্ত জয়সিংহ নিজের বুকে ছুরি বসিয়ে গুরুর ঋণ পরিশোধ করে। মনুষ্যত্ব-প্রেমপ্রীতি মানবতার প্রতি জয়সিংহ দুর্বল বলেই সে নিজ রক্ত দিয়ে দেবীর পা ধুইয়ে দেবীকে বলেছে— এই যেন শেষ রক্ত হয়।
সে তার আত্মবিসর্জনের মধ্য দিয়ে তার গুরুকে শিক্ষা দিয়েছে যে— হিংসার চেয়ে প্রেম বড়। তার আত্মহননেই রঘুপতির বুকের অগ্নি নির্বাপিত হয়েছে— প্রথাধর্মের চেয়ে যে মানবধর্ম বড় সে জ্ঞান রঘুপতির হয়েছে। এখানেই জয়সিংহ চরিত্রের সাফল্য।