মীরজাফর এক ঘৃণিত চরিত্র কেন

মীরজাফর এক ঘৃণিত চরিত্র।— কেন?
মীরজাফর এক ঘৃণিত চরিত্র।— কেন
মীরজাফর এক ঘৃণিত চরিত্র।— কেন?

উত্তর :যে নামটি বাংলার মানুষের উচ্চারণ করতে ঘৃণা হয়, যে নামটি শুনলে বাংলার মানুষ চমকে ওঠে সে নামটি হলো – মীরজাফর অর্থাৎ মীর জাফর আলী খান। সম্পূর্ণ নিঃস্ব অবস্থায় পারস্য থেকে হিন্দুস্থানে আসে মীরজাফর।

 নবাব আলীবর্দী তাকে আশ্রয় দেয়, সে দক্ষ সৈনিক ছিল । তাই নবাব আলীবর্দী বৈমাত্র ভগ্নিকে তুলে দেন মীর জাফরের হাতে, নিযুক্ত করেন সরকারী উচ্চপদে।

মারাঠাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মীরজাফর কিছু কৃতিত্ব দেখিয়েছিল। চাতুর্য ও কৌশলের জোরে নবাবের স্নেহ লাভ করে শেষে সেনাপতি পদে আসীন হয়। নবাব আলীবর্দীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অপরাধে এবং দুর্নীতির অভিযোগে মীর জাফর দু'বার পদচ্যুত হয়। কিন্তু বার বার ক্ষমাপ্রাপ্ত হয় ।

আলিবর্দীর মৃত্যুর পর সিরাজ নবাব হওয়ায় ইংরেজ ও হিন্দু অমাত্যদের সাথে নিয়ে মীরজাফর বাংলার নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ইংরেজের কাছে সম্পূর্ণভাবে সমর্পিত হয়ে মীরজাফর পলাশীর যুদ্ধে সেনাপতি হওয়া সত্ত্বেও ইংরেজদের বিরুদ্ধে তার সৈন্যকে যুদ্ধাদেশ না দিয়ে বরং তাদেরকে মূর্তির মত নিশ্চুপ দাঁড় করিয়ে রাখে। সে পবিত্র কোরান স্পর্শ করে শপথ করেছিল, সর্বদা নবাবের পক্ষে থাকবে।

ক্লাইভের গাধা বলে পরিচিত এবং চিরকালের মীরজাফর স্বহস্তে বাংলার ক্ষমতা তুলে দেয় ইংরেজদের হাতে। ক্লাইভের হাত ধরে সে বাংলার মসনদে মাত্র এক বছরের জন্য বসেছিল । বাংলার স্বাধীনতা সংহারকারী এই সর্বজন ঘৃণ্য মানুষটি দুরারোগ্য কুষ্ঠব্যাধির অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করে সকলের কাছে ঘৃণ্য ও অস্পৃশ্য হয়ে ১৭৬৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মারা যায়। সে এতই জঘন্য যে, বাংলার কোন মানুষ তার নামে সন্তানের নামকরণ করে না। কেউ বেঈমানি করলে তাকে মীরজাফর বলে ডাকা হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ