আব্দুল হাকিম সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর

 আব্দুল হাকিম সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।

আব্দুল হাকিম সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
 আব্দুল হাকিম সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।

উত্তর: বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের শক্তিমান মুসলমান কবিদের মধ্যে আব্দুল হাকিম অন্যতম। তিনি বহু গ্রন্থের প্রণেতা। রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ও ধর্মবিষয়ক আখ্যানের লেখক হিসেবে তিনি সুপরিচিত। 

বটতলার ছাপা পুঁথি সূত্রে জানা যায়, তাঁর পৈতৃক নিবাস নোয়াখালীর সুধারাম গ্রামে। তাঁর পিতা শাহ আব্দুর রাজ্জাকও ছিলেন পীর দরবেশ এবং স্থানীয়ভাবে প্রখ্যাত। তিনি ভণিতায় প্রায়ই নিজেকে শাহ রাজ্জাক নন্দন আব্দুল হাকিম বলে পরিচয় দিয়েছেন।

কবি আব্দুল হাকিমের জন্ম-মৃত্যুকাল সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় নি। তবে গবেষকদের মতে তিনি আনুমানিক ১৬২০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। 'নূরনামা' তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। 

তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হল- ইউসুফ জোলেখা, লালমতি, সয়ফুলমুলুক, শিহাবুদ্দিননামা, নসীহতনামা, কারবালা ও শহরনামা। স্বদেশের ও স্বভাষার প্রতি ছিল তাঁর অটুট ও অপরিসীম প্রেম। 

সেই যুগে মাতৃভাষার প্রতি এমন গভীর ভালবাসার নিদর্শন ইতিহাসের এক বিরল দৃষ্টান্ত এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কালজয়ী আদর্শ। সে সময় যে সকল মুসলমানেরা মাতৃভাষাকে অবহেলা করে আরবি, ফারসিতে কাব্য রচনা করতেন, কবি তাদের নিন্দা করেছেন। 

কবির মুতে, মানুষ মাত্রেই নিজ ভাষায় স্রষ্টাকে ডাকে এবং স্রষ্টা সকলের ভাষাই বোঝেন। কবির তীব্র ক্ষোভ তাদের প্রতি যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেও বাংলার প্রতি তাদের মমতা নেই। তাদের বংশ ও জন্ম পরিচয় সম্পর্কে কবির মনে সন্দেহ জাগে। 

কবি এ কথাও বলেছেন যে, বাংলা ভাষার প্রতি যাদের অনুরাগ ও শ্রদ্ধা নেই, তারা দেশ পরিত্যাগ করুক। কবি আব্দুল হাকিম রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। সুফি সাহিত্যের প্রভাবে তিনি প্রভাবিত হলেও তাঁর কাব্য মানবিকতার দ্যোতক।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ