তাহিরি বংশের উত্থানের ইতিহাস আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো তাহিরি বংশের উত্থানের ইতিহাস আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের তাহিরি বংশের উত্থানের ইতিহাস আলোচনা কর।

তাহিরি বংশের উত্থানের ইতিহাস আলোচনা কর
তাহিরি বংশের উত্থানের ইতিহাস আলোচনা কর

তাহিরি বংশের উত্থানের ইতিহাস আলোচনা কর

উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় শাসন আমলের মধ্যে খলিফা আল মামুন শাসন আমল ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তার আমলে আব্বাসীয় খিলাফতের জ্ঞানবিজ্ঞান, রাজ্যজয়, বিদ্রোহ দমনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখে। 

তার এই সকল বিজয় অসম্ভব হয়েছিল তার যোগ্য, বিচক্ষণ, সেনাপতি তাহিরের প্রচেষ্টায়, সর্বোপরি আল মামুন যখন দেখলেন যে এই সেনাপতি তার সাম্রাজ্যের হুমকিস্বরূপ তখন তার প্রাণনাশের চেষ্টা করলেন অপর দিকে বিচক্ষণ এই তাহির নিজ নামে একটি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে খোরাসানে ।

→ তাহিরি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতার পরিচয় : তাহিরি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাহির ইবনে হুসাইন। তার প্রতিষ্ঠিত এই রাজবংশের নামকরণ করা হয় তার নামানুসারে। এই রাজবংশ ছিল খোরাসানে একটি ক্ষুদ্র রাজবংশ। 

তাহির ছিলেন খলিফা আল মামুনের একজন সেনাপতি, গভর্নর ও পুলিশ প্রধান সাওয়াদের উপদেষ্টা। তার পিতা সহ সব পুরুষেরা আব্বাসীয় খিলাফতের গভর্নর ছিলেন।

→ তাহিরি রাজবংশের প্রতিষ্ঠা : খলিফা মামুনের রাজত্বকালে তাহির ইবন হুসাইন খোরাসানে খারিজী বিদ্রোহ দমন করে সমগ্র পারস্যের অঞ্চলে স্বীয় প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেন। ৮২০ খ্রিস্টাব্দে পূর্বাঞ্চলীয় শাসনকর্তা নিযুক্ত হইয়া মার্ভ হইতে স্বাধীনভাবে রাজত্ব করিতে থাকেন। 

খুত্বা হতে খলিফার নাম বাতিল করে নিজ নামে খুত্বা পাঠ করে তাহিরি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। নিশাপুর ছিল। তাহিরি রাজবংশের রাজধানী। তাহির নিজ নামে খুৎবা পাঠ করলেও খলিফা আল মামুনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন।

→ তাহিরি রাজবংশের উত্থানের কারণ : তাহিরি রাজবংশ বিভিন্ন কারণে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন যেসব কারণে তাদের উত্থান হয় তা আলোচনা নিম্নে করা হলো :

১. আমিন ও মামুনের গৃহযুদ্ধ : আব্বাসীয় খিলাফতে দুই ভ্রাতা খলিফা আল আমিন ও খলিফা আল মামুনের খিলাফত গ্রহণ নিয়ে দ্বন্দ্ব লাগলে আমিন আলী বিন ঈসার নেতৃত্ব খলিফা মামুনের বিরুদ্ধে সৈন্য প্রেরণ করেন। 

অপর দিকে মামুন এই বিদ্রোহ দমন করার জন্য তাহির-এর নেতৃত্ব সৈন্য প্রেরণ করে। দুই পক্ষের যুদ্ধে আমিনের পরাজয় হয়। এরপর তাহির মাদাইন দখল করে বাগদাদ অবরোধ করেন। অবরোধের পর আমির এর পতন হয় এবং তাহাকে হত্যা করা হয়। 

তাই এই যুগান্তকারী বিজয়ের জন্য আব্বাসীয় খলিফা মামুনের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন তিনি এবং আর ফলশ্রুতিতে তিনি তাহিরি বংশ প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করেন ।

২. কেন্দ্রীয় শাসনের দুর্বলতা : আল মামুন যখন তাকে গভর্নরসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ দান করেন তখন তিনি অত্যন্ত যোগ্যতার সাথে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেন যার ফলশ্রুতিতে তিনি খলিফার আস্থাভাজন হিসেবে পরিচয় লাভ করেন। সেই সুযোগে যখন তিনি কেন্দ্রীয় শাসকের দুর্বলতা দেখলেন তখন তিনি নিজে একটি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন ।

৩. আব্বাসীয় সাম্রাজ্যে বিভিন্ন রাজবংশ প্রতিষ্ঠা : তাহির যখন তাহিরি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন তখন ঐ সময়ে আব্বাসীয় খিলাফতের বিভিন্ন অঞ্চলে আরো অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশ প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। যার প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে তাহির এই রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন।

৪. উৎপত্তিগত আদর্শ : তাহির খলিফা মামুনের সেনাপতি হিসেবে যোগদানের পূর্বে অন্যান্য রাজবংশীয় প্রাধান্য ও রাজনৈতিক দিক দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

৫. ইরানি সংস্কৃতির প্রভাব : তাহিরের এই রাজবংশ প্রতিষ্ঠার পিছনে আমরা ইরানি সংস্কৃতির প্রভাব লক্ষ্য করি। এই সম্পর্কে ঐতিহাসিক Boyle বলেন, Iranian culture had been wenered by the dynamic impact of Islamic religion and Arob political dominance (Cambridge History of Islam P-90)

৬. খলিফার সাথে সম্পর্ক : সর্বোপরি তাহিরি রাজবংশ প্রতিষ্ঠার পিছনে আব্বাসীয় খলিফা আল মামুনের সাথে যে সম্পর্ক ছিল এই সম্পর্কের ফলে তাহির আব্বাসীয় খিলাফতের প্রশাসনিক সহ বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও পরামর্শ প্রদান করতেন যার জন্য তিনি এই রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করলেও খলিফা মামুন তার ওপর তেমন কোন হস্তক্ষেপ করেননি।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ৮২০ খ্রিস্টাব্দে খোরাসানে তাহির কর্তৃক যে রাজবংশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে সেই রাজবংশ তৎকালীন আব্বাসীয় খেলাফতের আনুগত্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। 

এর মূলে ছিলেন তাহির ইবনে হুসাইন। তিনি ছিলেন খলিফা আল মামুনের একজন আস্থাভাজন সেনাপতি। এই রাজবংশ ৫২ বছর শাসন করার পর সাফাফারিদের দ্বারা বিতাড়িত হন।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ তাহিরি বংশের উত্থানের ইতিহাস আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম তাহিরি বংশের উত্থানের ইতিহাস আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ