শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্ৰীয় প্রশাসন আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্ৰীয় প্রশাসন আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্ৰীয় প্রশাসন আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্ৰীয় প্রশাসন আলোচনা কর
শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্ৰীয় প্রশাসন আলোচনা কর

শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্ৰীয় প্রশাসন আলোচনা কর

  • অথবা, শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্রীয় প্রশাসন সম্পর্কে যা জান লিখ।

উত্তর : পৃথিবীর মহান শাসকদের ইতিহাসে শেরশাহ এক অনন্য নাম ৷ তিনি যেমন ছিলেন মেধাবী তেমনি ছিলেন রণকৌশলী ও সুপ্রশাসক। 

শেরশাহ মুঘল সম্রাট হুমায়ূনকে পরাজিত করেন দিল্লির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন এবং যতদিন ক্ষমতায় ছিলেন তার বেশিরভাগ সময় শেরশাহ রাজ্যবিস্তারে কাটান। তবে এত কিছুর মধ্যে শেরশাহ প্রশাসন ব্যবস্থার সংস্কার করে সুশাসন গড়ে তোলেন ।

→ শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্রীয় প্রশাসন : শেরশাহ তার পুরো সাম্রাজ্যে সামরিক ও বেসামরিক উভয় প্রকার প্রশাসন ব্যবস্থা চালু রাখেন। তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রশাসন তথা রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। শেরশাহের কেন্দ্রীয় প্রশাসন ছিল দুই ধরনের। যথা- 

১. মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ও 

২. দপ্তরভিত্তিক প্রশাসন।

নিম্নে শেরশাহের প্রশাসন আলোচনা করা হলো :

১. মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কেন্দ্রীয় প্রশাসন : কেন্দ্রীয় প্রশাসন ব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিকল্পনা করার জন্য শেরশাহ কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে ৪টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগে ভাগ করেন। এগুলো নিম্নরূপ-

(ক) নিউয়ান-ই-গুজারত : নিউয়ান-ই-ওজারত ছিল কেন্দ্রীয় প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য একটি মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের প্রধান ছিলেন উন্নির। এ বিভাগের কাজ ছিল রাজ্যের আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করা। উজির কয়েকজন সহকারী নিয়ে তার দায়িত্ব পালন করতেন।

(খ) দিউয়ান-ই-আরজ : পিউয়ান-ই-আরজ ছিল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয় মূল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিভাগের প্রধানকে বলা হতো আরিজ-ই-মামলক। তিনি সৈন্য সংগ্রহ, সেনাবাহিনী পঠন ও পরিচালনা, তাদের বেতন ও শৃঙ্খলা রক্ষা প্রভৃতি তত্ত্বাবধান করতেন।

(গ) দিউয়ান-ই-রিসালাত : পিউয়ান-ই-রিসালাত ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ বিভাগের কাজ ছিল বৈদেশিক সম্পর্ক রক্ষ করা। এ বিভাগের প্রধান ছিলেন একজন বৈদেশিক মন্ত্রী। যিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে যোগযোগ রক্ষা করতেন এবং বিদেশ থেকে আগত দূতদের অভ্যর্থনা জানাতেন ।

(ঘ) দিউয়ান-ই-ইনশা : দিউয়ান-ই-ইনশা ছিল মূলত যোগাযোগ দপ্তর। এ বিভাগের একজন মন্ত্রী ছিলেন যিনি রাজকীয় বার্তা ঘোষণা রচনা করতেন। 

প্রাদেশিক প্রশাসক ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে এ বিভাগের মন্ত্রী মত বিনিময় করতেন এবং সরকারি দলিল দস্তাবেজ সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতেন।

২. দপ্তরভিত্তিক কেন্দ্রীয় প্রশাসন : মন্ত্রণালয় ছাড়াও আরো কিছু দপ্তর কেন্দ্রীয় প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এগুলো নিম্নরূপ-

(ক) দিউয়ান-ই-কাজা : দিউয়ান-ই-কাজা ছিল সরকারি উল্লেখযোগ্য একটি দপ্তর। এ দপ্তরের প্রধান ছিলেন কাঞ্জি। তিনি রাষ্ট্রীয় বিচারালয়ের প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করতেন। নিউয়ান-ই-বারীদ ছিল ডাক

(খ) দিউয়ান-ই-বারীন দপ্তর : এ দপ্তরের একজন প্রধানের কাজ ছিল তথ্য সংগ্রহ করা। এ বিভাগের প্রধান রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ঘটনা ঢাক যোগে সংগ্রহ করে তা শেরশাহকে অবহিত করতেন।

(গ) রাজকীয় গৃহস্থালী দপ্তর : রাজকীয় গৃহস্থালী দপ্তরের কাজ ছিল রাজকীয় গৃহস্থালী তত্ত্বাবধান ও সংরক্ষণ করা। শেরশাহের শাসনামলে এ বিভাগে একজন উচ্চপদস্থ তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত ছিলেন। 

তিনি রন্ধনশালার জন্য দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় ও সংগ্রহ করতেন এবং উক্ত বিভাগের কর্মচারীদের তত্ত্বাবধান করতো।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শেরশাহ ছিল আধুনিক বিজ্ঞান মনস্কের অধিকারী। বিশেষ করে তিনি যে কেন্দ্রীয় প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করে গেছেন তা পরবর্তী শাসকদের যথেষ্টভাবে প্রভাবিত করেছে। পরবর্তী মুঘল শাসকগণ তার প্রশাসনের অনুকরণে প্রশাসন গড়ে তোলেন।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্ৰীয় প্রশাসন আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্ৰীয় প্রশাসন আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের শেরশাহের প্রবর্তিত কেন্দ্ৰীয় প্রশাসন আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ