চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলতে কি বুঝ

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলতে কি বুঝ
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলতে কি বুঝ

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলতে কি বুঝ

  • অথবা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি?
  • অথবা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের উপর টিকা লিখ।

উত্তর : ভূমিকা : ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার ইতিহাসে লর্ড কর্নওয়ালিশ একজন উল্লেখযোগ্য শাসক। তার শাসনকাল ছিল ব্রিটিশ শাসনের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। 

তিনি যখন গভর্নর জেনারেল হয়ে বাংলায় আসেন তখন বাংলার রাজস্ব ব্যবস্থায় মারাত্মক বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছিল। এই সমস্যার সমাধানে তিনি যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তাই ইতিহাসে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নামে পরিচিত হয়ে আছে ।

→ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত : ১৭৬৪ সালে ব্রিটিশরা বিজয়ী হওয়ার পর ১৭৬৫ সালে ভারা বাংলার দেওয়ানি লাভ করে এবং দ্বৈত শাসনের প্রবর্তন করেন। কিন্তু দ্বৈত শাসনের অব্যবস্থার ফলে ১৭৬৯-'৭০ সালে বাংলায় ভয়াবহ ছিয়াত্তরের মন্বন্তর হয় এবং বাংলার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লোক মৃত্যুবরণ করেন।

এরপর ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস এসে এই অরাজকতা থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য পঞ্চসালা বন্দোবস্তের অনুমোদন দেন। কিন্তু কিছুদিন পর এই পঞ্চসালা বন্দোবস্তও ব্যর্থ হয়। 

এদিকে ১৭৮৪ সালে House of communce এ Pitt India Act আইন পাস করেন। এই Act এর ৩৯ নং ধারায় স্থানীয় আইন ও প্রখার ভিত্তিতে চিরস্থায়ী ভূমি বন্দোবস্তের নির্দেশ দেয়া হয়। 

এ অবস্থায় ১৭৭৫ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশ বাংলার গভর্নর নিযুক্ত হন এবং তিনি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালান। 

তিনি ১৭৯০ সালে পরীক্ষামূলকভাবে একটি পঞ্চসালা বন্দোবস্তের প্রবর্তন করেন এবং ঘোষণা দেন কোম্পানির ডাইরেক্টর সভার অনুমোদন দিলে পরে তিনি এই পঞ্চসালা ব্যবস্থাকেই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের রূপ দান করবেন। 

পরে নানা বিতর্ক ও আলোচনা পর্যালোচনার পরে কোম্পানির ডাইরেক্টর সভা ১৭৯৩ সালের ২২ মার্চ এই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অনুমতি দান করেন। 

ফলে পূর্বের পঞ্চসালা বন্দোবস্ত ব্যবস্থাই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের রূপ পরিগ্রহ করে। লর্ড কর্নওয়ালিশের এই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের মূল উদ্দেশ্যেই ছিল কোম্পানির রাজস্ব নির্দিষ্ট করা। 

এই ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে কোম্পানি তার রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব তাদের তাঁবেদার জমিদার শ্রেণির হাতে অর্পণ করে চিন্তামুক্ত হয়। কিন্তু এই ব্যবস্থার ফলে বাংলার সাধারণ কৃষকগণ চরম নির্যাতন- নিপীড়নের মুখোমুখি পতিত হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৭৯৩ সালের ২২ মার্চ প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত যদিও একটি ভালো উদ্দেশ্য সামনে রেখে প্রবর্তন করা হয় কিন্তু তার মূলে ছিল কোম্পানির রাজস্ব প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, ফলে কোম্পানির দাসানুদাস জমিদাররা রাজস্ব আদায়ের জন্য কৃষক-প্রজাদের উপর নির্মম নির্যাতন শুরু করেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ