শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক কে ছিলেন

এ. কে. ফজলুল হক কে ছিলেন | এ. কে. ফজলুল হকের পরিচয় দাও

প্রশ্ন ৩.০৯/ এ. কে. ফজলুল হক কে ছিলেন? 

অথবা, এ. কে. ফজলুল হকের পরিচয় দাও ।

উত্তর ভূমিকা : বাঙালিদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যেসব ব্যক্তিবর্গ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে এ. কে. ফজলুল হক অন্যতম। তিনি ছিলেন কৃষক জনসাধারণের মুক্তির দূত, বাংলার গণমানুষের আপনজন, গণশিক্ষা বিস্তারের জনক, উচ্চশিক্ষা প্রসারের মশালধারী, বাঙালি জাতীয়তাবাদের স্রষ্টা এবং দুঃস্থ- অসহায়ের বন্ধু। এ. কে. ফজলুল হক সারাজীবন অপরের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন।

এ. কে. ফজলুল হক কে ছিলেন  এ. কে. ফজলুল হকের পরিচয় দাও
এ. কে. ফজলুল হক কে ছিলেন  এ. কে. ফজলুল হকের পরিচয় দাও

এ. কে. ফজলুল হকের পরিচয় : এ. কে. ফজলুল হক ১৮৭৩ সালে পিরোজপুর জেলার রামপুর থানার সাটুরিয়া গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুহাম্মদ ওয়াজিদ আলী এবং মাতার নাম সায়িদুন্নিসা খাতুন । ছোটবেলা থেকে এ. কে. ফজলুল হক প্রখর মেধার অধিকারী ছিলেন। 

১৮৮৯ সালে এ. কে. ফজলুল হক প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তিনি কৃতিত্বের সাথে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রসায়ন, পদার্থ ও অঙ্ক শাস্ত্রে অনার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করে এ. কে. ফজলুল হক কর্মজীবনের

শুরুতে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। ১৯০৬ সালে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি গ্রহণ করেন। ১৯৩৫ সালে মুসলিম লীগের ঐতিহাসিক সম্মেলনে তেজস্বী বক্তৃতা প্রদানের জন্য লক্ষ্মৌবাসী তাকে 'শেরে বাংলা' বা বাংলার বাঘ উপাধিতে ভূষিত করে। 

এ. কে. ফজলুল হকের কর্মজীবন ছিল বর্ণাঢ্য। কর্মজীবনে তিনি আইনজীবী, ম্যাজিস্ট্রেট, অধ্যাপক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী প্রভৃতি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

এ. কে. ফজলুল ১৯৩৫-৩৬ সালে কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র ছিলেন । এ. কে. ফজলুল হকের রাজনৈতিক জীবনও ছিল বৈচিত্র্যে ভরপুর। এদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য তিনি ১৯১১ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। 

তিনি ১৯১২ সালে মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে ১৯১৪ সালে কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯১৬ সাল থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত তিনি প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। 

১৯১২ সালে এ. কে. ফজলুল হক খুলনা থেকে বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য এবং ১৯২৪ সালে বাংলার শিক্ষামন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯২৭ সালে তিনি 'কৃষক প্রজা পার্টি' নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। 

১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত তিনি অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতির বরপুত্র ও জনদরদি নেতা এ কে ফজলুল হক ১৯৬২ সালে মৃত্যুবরণ করেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, এ. কে. ফজলুল হকের জন্ম এদেশের মানুষের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। এ. কে. ফজলুল হককে সবাই গরিবের বন্ধু বলে জানত। তিনি বাংলা, ইংরেজি, উর্দু ও ফারসি ভাষায় অনর্গল বক্তৃতা দিতে পারতেন। এ. কে. ফজলুল হকের কর্মজীবন ও রাজনৈতিক জীবন ছিল গণমানুষের কল্যাণে নিয়োজিত ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ