মধ্যযুগের অনুবাদ সাহিত্যের বিভিন্ন ধারার পরিচয় দাও
মধ্যযুগের অনুবাদ সাহিত্যের বিভিন্ন ধারার পরিচয় দাও ।
![]() |
মধ্যযুগের অনুবাদ সাহিত্যের বিভিন্ন ধারার পরিচয় দাও । |
উত্তর:সাহিত্যক্ষেত্রে অনুবাদের ইতিবাচক প্রভাব ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। পৃথিবীর সকল ভাষা ও সাহিত্যের পরিপুষ্টির জন্য অনুবাদমূলক সাহিত্যকর্মের যে ভূমিকা রয়েছে তা সর্বজনবিদিত। বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটে নি।
মধ্যযুগের স্বাধীন সুলতানী আমলে তাদের প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি ও বাংলা ভাষাপ্রীতির কারণে বিভিন্ন শাসক সুলতানের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা সাহিত্যের একটি বিস্তৃত অঙ্গন জুড়ে অনুবাদ সাহিত্যের চর্চা ও চর্যা চলে। যার ফলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রভূত শ্রীবৃদ্ধি সাধিত হয়েছে।
বিভিন্ন ভাষার শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম থেকে অনুবাদের মাধ্যমে নতুন ভাষা কেবল প্রকাশরীতি ও শব্দভাণ্ডারের দিক থেকেই সমৃদ্ধ হয় না, শ্রেষ্ঠত্বের ভাব-কল্পনার সাথেও পরিচিত হতে পারে। বিভিন্ন ভাষা থেকে মধ্যযুগে যেসব কাব্য অনূদিত হয়েছে তার সংখ্যা কম নয়। মধ্যযুগের অনুবাদের ধারাকে ভাষাগত দিক থেকে তিন ভাগে ভাগ করতে পারি- সংস্কৃত ভাষা থেকে, খ. আরবি, ফারসি ভাষা থেকে, গ. হিন্দি ভাষা থেকে।সংস্কৃত ভাষা থেকে অনুবাদ
সংস্কৃত ভাষা থেকে মধ্যযুগে যেসব উচ্চাঙ্গের শিল্পকর্ম অনূদিত হয়েছে তার মধ্যে রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত উল্লেখযোগ্য
রামায়ণ ঃ পনের শতকের গোড়ার দিকে কৃত্তিবাস বাল্মীকি সংস্কৃত রামায়ণের বঙ্গানুবাদ করেন। এটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম অনুবাদ গ্রন্থ। রামায়ণের বাংলা অনুবাদসমূহের মধ্যে সবচেয়ে সফল ও জনপ্রিয় অনুবাদক কৃত্তিবাস।
পণ্ডিতদের মতে, সুলতান রুকনউদ্দিন বরবক শাহের রাজত্বকালে কৃত্তিবাস রামায়ণ অনুবাদ করেছিলেন (১৪৫৯-১৪৭৪)। কৃত্তিবাসের রামায়ণ পাঁচালি কাব্যের আঙ্গিকে রচিত। বাল্মীকির রামায়ণের সারাংশ মাত্র অনুসরণ করে বাঙালির উপযোগী করে এটি রচিত।
রামায়ণে রাম বীর কিন্তু কৃত্তিবাসের হাতে রাম হয়েছেন ভক্তের ভগবান, ক্ষত্রিয়বধূ সীতা হয়েছেন সর্বংসহা পতিপ্রাণগতা বাঙালি বধূ । হযেছে ভ্র.তৃত্বের প্রতীক। সপ্তদশ শতকে অদ্ভুত আচার্য (নিত্যানন্দ আচার্য) স্মায়ণের অনুবাদ করেন। চৈতন্য পরবর্তীকালের শ্রেষ্ঠ রামায়ণ সাহিত্য হিসেবে অদ্ভুতাচার্যের ‘রামায়ণ কথা' বিশেষ গুরুত্ব বহন করে ।
ও অখণ্ডিত উভয় মিলে আরও বেশ কয়েকজন রামায়ণ অনুবাদ করেছেন। এদের মধ্যে ছাড়াও খণ্ডিত