সিরাজউদ্দৌলা তার বড় খালা ঘসেটি বেগমকে রাজপ্রাসাদে এক প্রকার বন্দী করে রাখেন কেন
সিরাজউদ্দৌলা তার বড় খালা ঘসেটি বেগমকে রাজপ্রাসাদে এক প্রকার বন্দী করে রাখেন কেন
![]() |
সিরাজউদ্দৌলা তার বড় খালা ঘসেটি বেগমকে রাজপ্রাসাদে এক প্রকার বন্দী করে রাখেন কেন |
উত্তর: নবাব আলিবর্দী খানের বড় মেয়ে ঘসেটি বেগম। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। তাই ঘসেটি বেগম তার ছোট বোন অর্থাৎ সিরাজউদ্দৌলার মা আমিনা বেগমের দ্বিতীয় পুত্র একরামুদ্দৌলাকে পোষ্যপুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। তার গোপন ইচ্ছা ছিল একদিন এই পোষ্যপুত্র নবাব হবে এবং তিনি নবাবের মাতা হিসেবে রাজকার্য পরিচালনা করবেন। (স্মর্তব্য, আলিবর্দী খানের কোন ছেলে ছিল না।)
কিন্তু যুবক বয়সেই একরামুদ্দৌলা বসন্ত রোগে মারা যায়। ঘসেটি বেগমের স্বামী নওয়াজিস মোহাম্মদ ছিলেন ভগ্নস্বাস্থ্য ও দুর্বল চিত্তের। তার সেনাপতি হোসেন কুলি খাঁর সাথে ঘসেটি বেগমের অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলে অনুমান করা হয় । আলিবর্দী খাঁর ইঙ্গিতে হোসেন কুলি খাঁকে হত্যা করেন সিরাজউদ্দৌলা। এ কারণে সিরাজউদ্দৌলার প্রতি ঘসেটি বেগম বিরূপ। তদুপরি তিনি মনে করেছিলেন যে, পিতার অবর্তমানে ক্ষমতার অধিকারিণী তিনিই হবেন। কিন্তু আলীবর্দী খাঁ মৃত্যুর পূর্বে সিরাজকে সিংহাসনে বসানোয় ঘসেটি বেগম বিক্ষুব্ধ।
ঘসেটি বেগম বাস করতেন মুর্শিদাবাদের সুরম্য মতিঝিল প্রাসাদে। বিক্রমপুরের অধিবাসী রাজা রাজবল্লভ ঢাকায় নওয়াজিস মোহাম্মদের দেওয়ান ছিলেন। রাজা রাজবল্লভের সহায়তায় ঘসেটি সিরাজউদ্দৌলাকে সিংহাসনচ্যুত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নবাব যথাসময়ে এই ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে মতিঝিল প্রাসাদ হতে ঘসেটিকে উৎখাত করে রাজপ্রাসাদে এক প্রকার বন্দী করে রাখেন এবং তার যাবতীয় সোনাদানা বাজেয়াপ্ত করেন।