জুম্মার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি এবং জুম্মার নামাজ পড়ার নিয়ম

বন্ধুরা আজকে আমরা জানব জুম্মার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি এবং জুম্মার নামাজ পড়ার নিয়ম (namaz)। আমরা আরো জানব জুম্মার নামাজ কয় রাকাত, জুম্মার নামাজ কত বা কয় রাকাত ও কি কি, জুম্মার নামাজের ফজিলত, জুম্মার নামাজ পড়ার নিয়ম বা জুম্মার নামাজের নিয়ম। namaz porar niom bangla

জুম্মার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি এবং জুম্মার নামাজ পড়ার নিয়ম
(namaz)

জুম্মার নামাজ (namaz)

জুম্মর দিন যোহরের নামাযের পরিবর্তে দুই রাকাআত জুম্মার নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানদের উপর ফরজ অন্য নামাজ যারা পড়েন না তারাও জুম্মার নামাজ আদায় করেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না কতো রাকাত জুম্মা নামাজ পড়তে হয়।

জুম্মার নামাজের নিয়ম (namaz)

জুম্মার নামাজের নিয়ম একটু অন্য রকম। জুম্মার নামাজ অন্যান্য নামাজের মত নয়। যোহরের নামাজের পরিবর্তে শুক্রবারে মসজিদে পূরুষরা মিলিত হয়ে ৪ রাকাত কাবলাল জুম্মা ২ রাকাত ফরজ নামাজ জামায়াতের সহিত এবং শেষে ৪ রাকাত বা-দাল জুম্মার নামাজ পড়তে হয়। 

কাবলাল জুম্মার ৪ রাকাত নামাজের পর মুয়াজ্জিন আজান প্রদান করেন। আজান শেষে ইমাম সাহেব মিম্বরে দাঁড়িয়ে খুতবা পড়েন। সকলের জন্য অন্তত একটি খুতবা শুনা বাধ্যতামূল এবং খুতবা শেষ হওয়ার পরে ইমাম সাহেবের পেছনে দাঁড়িয়ে ২ রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে হয় সকলকে।

জুম্মার নামাজ কয় রাকাত (namaz)

  • চার রাকাত কাবলাল জুম্মা,
  • দুই রাকাত ফরজ ও
  • চার রাকাত বাদাল জুম্মা।


১ম নিয়ম:

জুম্মার নামাজ পড়তে হয় ৪ রাকাত কাবলাল জুমআ, তারপর খুতবা পাঠের পর ২ রাকাত ফরজ নামাজ তারপর ৪ রাকাত বা’দাল জুমআ আদায় করতে হয়।

২য় নিয়ম:

সেই সাথে জুম্মার দিন তাহিয়্যাতুল অজু ২ রাকাত সুন্নত, দুখলুল মসজিদ ২ রাকাত সুন্নত, ২ রাকাত সুন্নতুল ওয়াক্ত ও নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। তবে ওই নামাজগুলো জুমাআর নামাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।

৪ রাকাত ক্বাবলাল জুম্মার নামাজের নিয়ত

আরবি উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল ক্বাবলাল জুমুআতি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তাআলা,মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতি শারীফাতি আল্লাহু আকবর।

বাংলায় নিয়ত: আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ক্বেবলামুখী হইয়া ৪ রাকআত ক্বাবলাল জুম্মার সুন্নাত নামাজ আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবর।

২ রাকাত জুমআর ফরজ

আরবি উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাক্বিতা আ’ন যিম্মাতি ফারদুজ্জুহরী বিআদায়ি রাকআতাই ছালাতিল জুমুআতি ফারদুল্লাহি তাআলা ইক্বতাদাইতু বিহাযাল ইমামি মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ্ শারিফাতি আল্লাহু আকবর।

বাংলায় নিয়ত: আমি আল্লাহ্র জন্য ক্বেবলা মুখী হইয়া আমার উপর যোহরের ফরজ নামাজ উত্তীর্ন করিতে জুম্মার দুই রাকআত ফরজ নামাজ এই ইমামের পিছনে পড়িতে নিয়ত করিলাম,আল্লাহু আকবর।

সর্বশেষ এই কথায় বলতে পারি, জুম্মার নামাজের দিন বেশ কিছু সুন্নত রয়েছে। যেমন ভালো বা পারলে নতুন জামা বা পাঞ্জাবি পরা, খোশবু নেওয়া, হাত-পায়ের নখ কাটা সুন্নত।

জুম্মার নামাজের ফজিলত (namaz)

মুসলিম উম্মাহর সাপ্তাহিক উৎসবের দিন শুক্রবার। এই দিনকে ‘ইয়াওমুল জুমা’ বলা হয়। আল্লাহ তায়ালা নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও গোটা জগৎকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। 

এই ছয় দিনের শেষ দিন ছিল জুমার দিন। এই দিনেই হজরত আদম (আ.) সৃজিত হন। এ দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এ দিনেই জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নামানো হয়। কেয়ামত এ দিনেই সংঘটিত হবে।

আল্লাহ তায়ালা প্রতি সপ্তাহে মানবজাতির সমাবেশ ও ঈদের জন্য এ দিন নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু পূর্ববর্তী উম্মতরা তা পালন করতে ব্যর্থ হয়। ইসলামের জুমার গুরুত্ব অপরিসীম। 

স্বয়ং আল্লাহপাক কোরান পাকে ইরশাদ করেন ‘হে মুমিনগণ জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের উদ্দেশেও দ্রুত ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর’। সূরা জুমা, আয়াত নং-৯।

তাই জুমার আজানের আগেই সব কর্মব্যস্ততা ত্যাগ করে জুমার নামাজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে মসজিদে গমন করা সব মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। এ দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, তখন মানুষ যে দোয়াই করে তা-ই কবুল হয়। এই দিনের বিশেষ কিছু আমল রয়েছে, যা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

এর মধ্যে কয়েকটি আমল উল্লেখ করা হলো: হজরত আউস ইবনে আউস রা. বলেন, ‘রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি জুমার দিনে ভালোভাবে গোসল করবে, সকাল সকাল প্রস্তুত হয়ে হেঁটে মসজিদে গমন করে ইমাম সাহেবের কাছে বসবে এবং মনোযোগী হয়ে তার খুতবা শ্রবণ করবে ও অনর্থক কর্ম থেকে বিরত থাকবে, তার প্রত্যেক কদমে এক বছরের নফল রোজা এবং এক বছরের নফল নামাজের সওয়াব আল্লাহপাক তাকে দান করবেন।’ (নাসাঈ শরিফ ১৫৫)

হজরত আবু হুরায়রা রাযি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘যে উত্তমরূপে অজু করবে, অতঃপর জুমার মসজিদে গমন করবে এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শ্রবণ করবে তার এ জুমা থেকে পূর্ববর্তী জুমাসহ আরো তিন দিনের গুনাহগুলো কমা করা হবে। 

আর যে ব্যক্তি খুতবা শ্রবণে মনোযোগী না হয়ে খুতবা চলাকালীন কঙ্কর-বালি নাড়ল, সে অনর্থক কাজ করল।’ (মুসলিম শরিফ ১/২৮৩)

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাযি থেকে বর্ণিত আছে যে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করবে তার (ইমানের) নূর-এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে।’ (মেশকাত শরিফ-১৮৯) 

হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, কোনো মুসলমান ওই মুহূর্ত আল্লাহর কাছে যা কিছু প্রার্থনা করবে অবশ্যই আল্লাহপাক তাকে তা দান করবেন। সুতরাং তোমরা ওই মূল্যবান মুহূর্তকে আসরের পর থেকে দিনের শেষ পর্যন্ত তালাশ কর।’ (আবু দাউদ ১/১৫০)।

উপরের এই হাদিসগুলোর দ্বারা প্রমাণিত হয়, জুমার দিনে সব মুসলমানের জন্য কর্তব্য হচ্ছে সব ব্যস্ততা ত্যাগ করে আজানের আগেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে মসজিদে গমন করা, খুতবা মনোযোগ সহকালে শ্রবণ করা, খুতবা চলাকালীন কথার্বাতা বলা থেকে বিরত থাকা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ