রোবটিক্স কী | রোবটিক্স বলতে কি বুঝায় ও এর ব্যবহার গুলো কি কি

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছো তোমরা? আজকে জানবো রোবটিক্স কী ও রোবটিক্স বলতে কি বুঝায় এবং রোবটিক্স  এর ব্যবহার গুলো কি কি। যদি জানতে চাও রোবটিক্স কাকে বলে ও রোবটিক্স এর জনক কে তাহলে পুরো পোস্ট টি পড়তে থাকো।

রোবটিক্স কী  রোবটিক্স বলতে কি বুঝায় ও এর ব্যবহার গুলো কি কি
রোবটিক্স কী  রোবটিক্স বলতে কি বুঝায় ও এর ব্যবহার গুলো কি কি

তাছাড়াও তোমরা আরো জানতে পারবে রোবট কোন ভাষার শব্দ ও রোবট শব্দের অর্থ কি এবং রোবটিক্স এর ইতিহাস সম্পর্কে। তো প্রিয় বন্ধুরা দেরি না করে আমরা এখন মুল টপিকে চলে যায়। আর হ্যা মনোযোগ সহকারে তোমরা পড়ে নিবে।

রােবােটিক্স (Robotics) | রোবটিক্স কাকে বলে | রোবটিক্স কি ict | রোবটিক্স বলতে কি বুঝ

রােববাটিক্স হলাে প্রযুক্তির একটি শাখা যেটি রােবােটসমুহের ডিজাইন, নির্মাণ, কার্যক্রম ও প্রয়ােগ নিয়ে কাজ করে। পাশাপাশি এটি রােবােটসমূহের নিয়ন্ত্রণ, সেন্সরি ফিডব্যাক এবং তথ্য। প্রক্রিয়াকরণের জন্য কম্পিউটার সিস্টেমগুলাের জন্যও কাজ করে। এসব প্রযুক্তি অটোমেটেড মেশিনগুলাের সাথে কাজ করে যা বিপজ্জনক পরিবেশ বা উৎপাদন প্রক্রিয়াসমূহে মানুষের স্থান দখল করে কিংবা মানুষের উপস্থিতি, আচরণ ইত্যাদির সাথে মিল থাকে।

আজকের দিনের অধিকাংশ রােবােটই ‘বায়াে-ইন্সপায়ার্ড রােবােটিক্স’ ক্ষেত্রটির দ্বারা উৎসাহিত হয়ে তৈরি। সহজভাবে বলতে গেলে রােবােটিক্স এর সাধারণ বিষয়গুলাে হলাে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মনােবিদ্যা। এ প্রযুক্তিটি কম্পিউটার বুদ্ধিমত্তা সংবলিত এবং কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত রােবােট মেশিন তৈরি করে যেগুলাে আকৃতিগত দিক থেকে অনেকটাই মানুষের মতাে হয় এবং অনেকটা মানুষের মতােই দৈহিক ক্ষমতাসম্পন্ন থাকে। এ ক্ষেত্রটিতে রােবােটকে যেসব বৈশিষ্ট্য দেয়ার চেষ্টা করা হয় সেগুলাে হলাে

১. দৃষ্টিশক্তি বা ভিজুয়াল পারসেপশন (Visual Perception) 

২. স্পর্শ বা স্পর্শ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সক্ষমতা (Tactile Capabilities) 

৩. নিয়ন্ত্রণ ও ম্যানিপুলেশনের ক্ষেত্রে দক্ষতা বা নিপুণতা (Dexterity) । 

৪. যেকোনাে স্থানে দৈহিকভাবে নড়াচড়ার ক্ষমতা বা লােকোমােশন (Locomotion)। 

৫. কোনাে একটি গন্তব্যে কারও যাবার পথকে যথাযথভাবে খুজে বের করার বুদ্ধিমত্তা বা নেভিগেশন (Navigation)।

রোবট শব্দের অর্থ কি | রোবট কোন ভাষার শব্দ | রোবট শব্দের অর্থ কি | রোবটিক্স এর ইতিহাস

রােবােটিক্স শব্দটি এসেছে ‘রােবােট' শব্দ হতে যা প্রবর্তিত হয় চেক লেখক ও নাট্যকার কারেল কাপেক (Karel Capek এর একটি নাটক হতে যেটি ১৯২০ সালে প্রকাশিত হয়। রােবােটিক্স এর মূল বিষয়টিই হলাে রােবােটকে ঘিরে। রােবােট হলাে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বা যন্ত্রমানব যা মানুষের অনেক দুঃসাধ্য ও কঠিন কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করতে পারে।

এর কাজের ধরন দেখে মনে হবে এর ভেতর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রয়েছে। Robot শব্দটি মূলত এসেছে স্লাভিক শব্দ Robota হতে যার অর্থ হলাে ‘শ্রমিক'। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি অনুযায়ী ‘রােবােটিক্স' শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয় ১৯৪১ সালে। প্রকাশিত ‘আইজাক আসিমভ এর ছােট সায়েন্স ফিকশন গল্প। ‘লায়ার' এ। মজার ব্যাপার হচ্ছে আইজাক আসিমভ তার গল্পে কাল্পনিক রােবােটের জন্য যে তিনটি সূত্র বা নিয়ম বেঁধে দিয়েছিলেন, তথা রােবােট কখনাে মানুষের জন্য ক্ষতিকর হবে না, ১ম নিয়ম ভঙ্গ না করে রােবােট মানুষের সকল নির্দেশ পালন করবে এবং ১ ও ২নং নিয়ম ভঙ্গ না করে রােবােট নিজেদের রক্ষা করবে; আধুনিক রােবােটের জন্য এই ৩টি মূল সূত্রই ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

রোবটিক্স এর জনক কে | রোবট শব্দটির প্রবক্তা কে | রোবট কে আবিষ্কার করেন

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পাতা থেকে বেরিয়ে প্রথম সত্যিকার রােবােটটি তৈরি করেন আমেরিকান উদ্ভাবক জর্জ চার্লস ডেভল (George Charles Devol)। ১৯৫০ সালে তার তৈরি প্রথম ইন্ডাস্ট্রিয়াল রােবােটের নাম ছিল ইউনিমেট। কিন্তু এই রােবােট তৈরির প্রজেক্টের উদ্যোক্তা ছিলেন আরেক আমেরিকান জোসেফ ফ্রেডরিক এঙ্গেলবার্গ (Joseph Frederick Engelberge)। 

রােবােট তৈরির টেকনিক্যাল বিষয়ে তাঁর অবদান না থাকলেও এবং তৈরিকৃত ইন্ডাস্ট্রিয়াল রােবােটটির পেটেন্ট চার্লস ডেভল-এর নামে থাকলেও উদ্যোক্তা হিসেবে সম্মান প্রদর্শনে এঞ্জেলবার্গকেই রােবােটিক্সের জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়ে থাকে। রােবােট মানেই যে মানুষের মতাে যন্ত্র হতে হবে তা নয়। রােবােট এমন একটি যন্ত্র যা কখনাে সম্পূর্ণরূপে বা অংশত মানুষকে নকল করবে; কখনাে চেহারায়, কখনাে কাজের মধ্য দিয়ে, কখনাে আবার দু’ভাবেই। অবশ্য এতে এমনভাবে প্রােগ্রাম বেঁধে দেয়া আছে যা প্রয়ােজন অনুযায়ী নতুন করে বেঁধে দেয়া যায়। সাধারণভাবে কোনাে যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারলেই যে তাকে রােবােট বলা হবে এমনটি কিন্তু নয়।

এটিকে বড়জোর Intelligent System হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে। একটি যান্ত্রিক সিস্টেম তখনই রােবােট হয়ে উঠবে যখন এতে মােবিলিটি (Mobility), মােশন (Motion), সেন্সিং (Sensing) এবং ইন্টেলিজেন্স (Intelligense) এর সমন্বয় ঘটবে। আজকের দিনে রােবােটিক্স হলাে দ্রুত বর্ধনশীল একটি ক্ষেত্র। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সাথে সাথে গবেষণা, নকশা এবং নতুন নতুন রােবােট তৈরির ফলে বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে- তা সে ঘরােয়া, বাণিজ্যিক বা সামরিক কাজই হােক না কেন সব কাজেই রােবােটকে ব্যবহার করা যায়। 

কিছু কিছু রােবােট শুধু প্রােগ্রাম অনুসারেই কাজ করে। আবার অনেকগুলােকে দূর থেকে লেজার রশ্মি বা রেডিও সিগন্যালের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যানবাহন ও গাড়ির কারখানায়, বিপজ্জনক যেমন- বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণ কাজে, শিল্পক্ষেত্রে কঠোর শারীরিক পরিশ্রমের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তার কাজে, ঘরের প্রাত্যহিক অনেক কাজকর্ম এবং চিকিৎসাক্ষেত্রে জটিল সব অপারেশনে সার্জনদের। | নানা ধরনের কাজে রােবােট সহায়তা করে।

আসিমাে (ASIMO) একটি মানবসদশ রােবােট। জাপানের মটর নির্মাতা প্রাতষ্ঠান হােন্ডা ২০০০ সালে সর্বপ্রথম এটি নির্মাণ। করে । আসিমাে নির্মাণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মতাে তৈরি করে মানুষকে সাহায্য করা। আসিমাের ইংরেজি প্রতিলিপি Mobility"। ASIMO যার পূর্ণরূপ হচ্ছে "Advanced step in Innovative Mobility"। " ৪ ফিট ৩ ইঞ্চি এবং ওজন হচ্ছে ১১৯ পাউন্ড। আসিমাে প্রতি ঘণ্টায় ৬ কিলােমিটার বেগে দোড়াতে পারে।

রোবটের উপাদানগুলো হলো | রোবট তৈরির উপাদান | রােবােটের বিভিন্ন উপাদান বা অংশ (Different parts of Robot) 

একটি রােবােটে সাধারণত নিম্নলিখিত উপাদান বা অংশগুলাে থাকতে পারে। 

মুভেবল বডি (Movable Body): স্থানান্তরিত হবার জন্য একটি রােবােটে চাকা, কোনাে ধরনের নড়াচড়া করাতে সক্ষম যন্ত্রপাতি যুক্ত থাকে। 

অ্যাকচুয়েটর (Actuator) : একচুয়েটর হলাে এমন এক ধরনের মােটর যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সে।' করা যায়। অ্যাকচুয়েটর থাকার কারণে একটি রােবােট বিভিন্ন দিকে এর কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। এটি চালানাের জন্য শক্তি হিসেবে বিদ্যুৎ, হাইড্রোলিক পাওয়ার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। রােবােটের শরীরের বিভিন্ন অংশ নড়াচড়া করানাের জন্য একাধিক বৈদ্যুতিক মােটর, হাইড্রোলিক সিস্টেম ও নিউমেটিক সিস্টেমের সমন্বয়ে তৈরিকত বিশেষ ব্যবস্থাটিই অ্যাকচুয়েটর হিসেবে। পরিচিত। এককথায় এটিকে মানুষের মতাে রােবােটের হাত-পায়ের পেশি হিসেবেও অভিহিত করা যায়।

বৈদ্যতিক উৎস বা পাওয়ার সিস্টেম (Power Source/System): অ্যাকচুয়েটরকে। কার্যকর করার জন্য রােবােটের প্রয়ােজন বৈদ্যুতিক সংযােগ এবং এর জন্য ইলেকট্রিক রােবােটসমূহ সাধারণত লেড এসিড ব্যাটারি বা এক্সটেনসন কর্ড ব্যবহার করে। এ ধরনের ব্যাটারি রিচার্জেবল হয়ে থাকে এবং রােবােটকে কাজ করার পর বা কাজ করার পূর্বে ব্যাটারি রিচার্জ করা প্রয়ােজন হয়। তবে হাইড্রোলিক রােববাটের ক্ষেত্রে রিচার্জের পরিবর্তে এর হাইড্রোলিক ফুয়িডকে প্রেসারাইজ করার জন্য পাম্প এর প্রয়ােজন হয় এবং নিউম্যাটিক রােবােটের রিচার্জের জন্য এয়ার কমপ্রেশার প্রয়ােজন হয়। ।

ইলেকট্রিক সার্কিট (Electric Circuit): ইলেকট্রিক সার্কিট বৈদ্যুতিক রােবােটের মােটরসমূহে বৈদ্যুতিক সংযােগ প্রদান করে। একই সাথে হাইড্রোলিক ও নিউমেটিক সিস্টেমের রােবােটকে নিয়ন্ত্রণকারী সলেনয়েড বা ভালবসমূহকেও এটি। বৈদ্যুতিক সংযােগ প্রদান করে।

প্রােগ্রামিকত মস্তিষ্ক বা কম্পিউটার (Reprogrammable Brain or Computer): রােবােটের মধ্যে স্থাপিত প্রোগ্রামক্রত বা কম্পিউটার এর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। যদি কোনাে কারণে রােবােটের আচরণ পরিবর্তন প্রয়ােজন হয় সেক্ষেত্রে এর ভেতরে থাকা কম্পিউটারটি রিপ্রােগ্রাম করা হয়।

অনুভতি (Sensing); অনুভূতি রােবােটের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। মানুষের যেমন যে কোনাে উদ্দীপনা সাড়া দেয়ার অনুভূতি থাকে তেমন অনুভূতি রােবােটের মধ্যেও তৈরি করা যায়, যা বিভিন্ন উদ্দীপনার প্রতি ১০০ রােবােটের হাত বা পা যে কোনাে জায়গা স্পর্শ করলে সে জায়গা সম্পর্কে যাবতীয় তথ . পারে। মানুষের চোখের ন্যায় রােববাটে স্থাপিত ক্যামেরা দিয়ে সামনে বা পেচ প্রয়ােজনে রােবােটকে ৩৬০° এঙ্গেলে ঘােরানাে যেতে পারে।

রোবটিক্স এর বৈশিষ্ট্য | রােববাটের সাধারণ বৈশিষ্ট্য (Common Charecteristics of a Robot) 

  • রােববাটের কতগুলাে সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলাে নিচে বর্ণনা করা হলাে
  • রােবােট নির্দিষ্ট প্রােগ্রাম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বিধায় যে কোনাে কাজ দ্রুত ও নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম।
  • রােবােট বিরতিহীন ও ক্লান্তিহীনভাবে দিনরাত একটানা কাজ করতে পারে। 
  • রােবােট যে কোনাে মানবিক অনুভূতি তথা রাগ, ঘৃণা, ভয়, বিরক্তি প্রভৃতি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত বিধায় তার কাজে | মানবিক অনুভূতির কোনাে বাধা সৃষ্টি হয় না।
  • রােবােট পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি অনুভব করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে প্রদত্ত সক্ষমতা অনুসারে তার কাজের।
  • ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। • যে কোনাে ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিকর অসহনীয় পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারে।

রােবােটিক্স এর ব্যবহার (Application of Robotics) | রোবটিক্স এর প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ | রোবটিক্স এর ব্যবহার গুলো কি কি

রােবােটিক্স এর উল্লেখযােগ্য ব্যবহারগুলাে নিচে উল্লেখ করা হলাে

১. ম্যানুফ্যাকচারিং-এ : কম্পিউটার এইডেড ম্যানুফ্যাকচারিং (ক্যাম)-এ রােবােটিক্স ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে যানবাহন ও গাড়ির কারখানায় রােবোেট ব্যবহৃত হয়। 

২. বিপজ্জনক কাজে : যে সমস্ত কাজ করা স্বাভাবিকভাবে মানুষের জন্য বিপজ্জনক যেমন- বিস্ফোরক নিষ্ক্রীয়করণ, ডুবে যাওয়া জাহাজের অনুসন্ধান, খনির অভ্যন্তরের কাজ ইত্যাদির ক্ষেত্রে রােবােটিক ডিভাইস বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। 

৩. ভারী শিল্প কারখানায় : কারখানায় কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত রােবােটের সাহায্যে নানা রকম বিপজ্জনক ও পরিশ্রমসাধ্য কাজ যেমন- ওয়েল্ডিং, ঢালাই, ভারী মাল ওঠানাে বা নামানাে, যন্ত্রাংশ সংযােজন ইত্যাদি করা হয়।। 

৪. পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পরীক্ষার কাজে : রােবােট অতিক্ষুদ্র মাইক্রোসার্কিটের উপাদান পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অবিশ্বাস্যভাবে | পরীক্ষা করতে পারে, যা করা মানুষের পক্ষে কঠিন এবং অসম্ভব। 

৫. মেইল ডেলিভারির কাজে : বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে বিল্ডিংসমূহ জুড়ে বিভিন্ন মেইল স্টেশনে মেইল ডেলিভারির কাজে বিশেষ | ধরনের রােবােট ব্যবহার করা হয়। আট্রা ভায়ােলেট পেইন্ট দিয়ে মার্ক করা রুটগুলােকে এসব রােবােট অনুসরণ করে। 

৬. ঝুঁকিপূর্ণ কাজে : পারমাণবিক কেন্দ্রে ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয়ায় যেসব কর্মী কাজ করেন তাদের ঝুঁকি অনেক। এসব | ঝুঁকিপূর্ণ কাজে মানুষের বদলে রােবােট কাজ করতে পারে। 

৭. নিরাপত্তার কাজে : উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তার জন্য রােবােট ব্যবহৃত হয়। মাইক্রোওয়েভ ভিশনের মাধ্যমে যেকোনাে অধাতব দেয়ালের অপর পাশে কি আছে তা দেখতে পারে, অন্ধকারে কয়েকশ ফুট দূর থেকেও আগন্তুককে দেখতে পায় নিরাপত্তার জন্য তৈরি করা রােবােট। তাই এগুলাে গুরুত্বপূর্ণ অনেক ভবন পাহারায় ব্যবহার করা হয়। | 

৮. পুলিশের সাহায্যকারী হিসেবে : বিশ্বের বহু দেশে পুলিশ বিপজ্জনক পরিস্থিতি মােকাবেলায় রােবােটকে ব্যবহার করে। যেমন- জিম্মি মুক্ত করা, গােলাগুলি ইত্যাদির মতাে পরিস্থিতিতে গুলি করতে, দরজা খুলতে, সামনে গিয়ে পরিস্থিতি অবলােকন করতে বা ক্যামেরার সাহায্যে জানালায় নজর রাখতে ঘটনাস্থলে রােবােটকে ব্যবহার করা হয়। 

৯. সামরিক ক্ষেত্রে : সামরিক ক্ষেত্রেও রােবােটের ব্যবহার উল্লেখযােগ্য। বােমা নিষ্ক্রিয় করা, ভূমি মাইন শনাক্ত করা, | সামরিক নানা সরঞ্জামাদি বহন এবং অন্যান্য মিলিটারি অপারেশনে রােবােট ব্যবহার করা হয়।

১০. ঘরােয়া কাজে : কিছু কিছু রােবােট হাঁটতে পারে এবং মানুষের সাথে কথা বলতে পারে। প্রাত্যহিক | যেমন- কফি তৈরি করা, ঘর পরিষ্কার করা ইত্যাদি কাজে রােবােটকে ভূতের মতাে ব্যবহার করা যায়। 

১১. চিকিৎসায় : চিকিৎসাক্ষেত্রে জটিল সব অপারেশনে সার্জনদের নানা ধরনের কাজে রােবােট সহায়তা করে। 

১২. মহাকাশ গবেষণায় : মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে রােবােটের রয়েছে গুরুতপূর্ণ অবদান। মানুষের পিরবর্তে অভিযানে এখন বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সংবলিত রােবােট ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি মঙ্গলগ্রহে যুক্তরাষ্ট্রের নাসা " ‘কিউরিসিটি' নামের একটি রােবােট পাঠানাে হয়েছে যেটি মঙ্গলের পরিবেশ, প্রকৃতি ইত্যাদি হতে তথ্য মনে সেগুলােকে বিশ্লেষণ করে পৃথিবীতে পাঠাচ্ছে।

রােবােট ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা/কুফল (Disadvantages of using Robot)

  • মানবকর্মীর মতাে রােবােট কোনাে আকস্মিক পরিবর্তিত পরিবেশ পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিয়ে কাজ করতে পারে না যদি না তার প্রােগ্রাম পরিবর্তন করা হয়। 
  • রােবােট ব্যবহারের ফলে ধীরে ধীরে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। এতে বেকারত্ব বাড়ছে, মানুষও ধীরে ধীরে তার কর্ম দক্ষতা হারিয়ে ফেলছে। 
  • রােবােট ব্যবহার এখনও অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং এর ব্যবস্থাপনা এখনও সহজসাধ্য হয় নি।


রােবােট তৈরির বিভিন্ন কোম্পানিসমূহ (Robot Manufacturer Companies)

নিচে কতকগুলাে জনপ্রিয় রােবােট ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানি ও তাদের তৈরি রােবােট সম্পর্কে আলােচনা করা

ইয়াসকাওয়া (Yaskawa): 

১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় শিল্পরােবােট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এদের তৈরি ইন্ডাস্ট্রিয়াল রােবােটগুলাে মটোম্যান (MOTOMAN) নামে পরিচিত। এগুলাে শিল্পক্ষেত্রে আক ওমে ওয়েল্ডিং, কোটিং ডিসপেনসিং, কাস্টিং, প্যাকেজিং, প্যালেটাইজিং প্রভৃতি কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

 ফানুক(FANUC):

এটিও শিল্পক্ষেত্রের রােবােট তৈরিতে আমেরিকার একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান যা ছােটো বড় সকল স্বয়ংক্রিয় রােবােট ও রােবােটিক্স যন্ত্রাংশ প্রস্তুত করে। 

আই রােবােট (iRobot): 

MIT (Massachusetts Institute of Technology) কর্তৃক ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি রােবােট কোম্পানি। এরা বিভিন্ন ধরনের কনজুমার এবং হােম রােবােট তৈরিতে বিখ্যাত। এদের তৈরি রােবােট Roomba মেঝে বা ফ্লোর পরিষ্কারে অত্যন্ত দক্ষ।

বােস্টোন ডাইনামিকস (Boston Dynamics)

এটি গুগলের স্বত্তাধিকারী সর্বাধুনিক রােবােট তৈরির প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটিও প্রথমে MT থেকে এদের কর্মকাণ্ড শুরু করে। বােস্টোন ডাইনামিকস চলৎ শক্তি, ক্ষিপ্রতা, দক্ষতা ও আচরণসমৃদ্ধ উন্নত রােবোেট তৈরিতে কাজ করে। এটি সেন্সর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং কম্পিউটিং সিস্টেমে এর সক্ষমতা জটিল কোনিজম দ্বারা কার্যকর হয়। 

হিউমেনয়েড রােবােট  (Humanoid Robot)

হিউমেনয়েড রােবােটের মধ্যে জাপানের মুরাতা কোম্পানির তৈরি মুরাতা বয় (Mirata boy) সনি কর্পোরেশনের তৈরি কিরয়ি (QROI), হােন্ডা কোম্পানির অসিমাে (ASIMO), স্যামসাং এর তৈরি বেরােবে (Roboray) ইত্যাদি উল্লেখযােগ্য। এরা প্রত্যেকেই মানুষের মতাে বিশেষ কোনাে কাজে পারদর্শী হয়ে থাকে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ রোবটিক্স কী | রোবটিক্স বলতে কি বুঝায় ও এর ব্যবহার গুলো কি কি

বন্ধুরা এতক্ষন আমরা জানলাম রোবটিক্স কী ও রোবটিক্স বলতে কি বুঝায় ও এর ব্যবহার গুলো কি কি। যদি তোমদের আজকের টপিক টি ভালো লাগে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার ও কমেন্ট করতে ভুলবে না। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান রায়হান অয়েবসাইট টি প্রতিদিন ভিজিট । ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ