bangla data

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা | সড়ক দুর্ঘটনা রচনা

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা। কেমন আছো তোমরা? আজকে আমরা একটি রচনা জেনে নিবো আর সেই রচনাটি হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা বা সড়ক দুর্ঘটনা রচনা। তোমরা যদি এই রচনাটি সম্পর্কে বেশি কিছু না জেনে থাকো তাহলে তোমরা আজকের এই সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা | সড়ক দুর্ঘটনা রচনা টি আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইট থেকে খুব ভালো ভেবে জেনে নিতে পারবে।

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা | সড়ক দুর্ঘটনা রচনা
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা | সড়ক দুর্ঘটনা রচনা

তোমরা তো  ভালো ভাবে জানো বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত হতেই চলেছে/ বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ অজ্ঞতা। তো বেশি বক বক না করে তোমরা জেনে নাও আজকের সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা | সড়ক দুর্ঘটনা রচনা টি। 

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা

ভূমিকা: সড়ক দুর্ঘটনা হলাে প্রতিদিনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সংবাদপত্রে মর্মান্তিক যে খবরটি প্রতিদিন দেখতে পাই তা হলাে সড়ক দুর্ঘটনা। সড়ক , দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের জীবন নিঃশেষ হয়ে যায়। এ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। তাই আজ যে সংবাদ আমার কাছে কেবলই দুর্ঘটনা, কাল হয়তাে আমার স্বজন কিংবা আমিই হব তার নির্মম শিকার। 

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার ব্যাপ্তি: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে। ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলাে প্রধানসড়কের পাশে হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীর জীবন অকালে ঝরে গেছে। প্রাণের বিনিময়ে মিলেছে গতিরােধ। ১৭, ১৮ ও ১৯ জুলাই ২০০৮, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডে যাত্রীবাহী বাস ও কাভার্ড ভ্যানের মধ্যে মুখােমুখি সংঘর্ষে আট জনের মৃত্যু হয়, আহত হয় চল্লিশ জনেরও বেশি। পরদিন কুমিল্লায় পৃথক একটি দুর্ঘটনায় এগারাে জনের প্রাণহানী ঘটে, আহত হয় প্রায় পঁচিশ জন। কাভার্ড ভ্যান ও অ্যাম্বুলেন্সের মুখােমুখি সংঘর্ষে একই দিন নিহত হয় তরুণ ডাক্তার দম্পতি। তিন দিনে সংঘটিত উল্লিখিত দুর্ঘটনা ছাড়াও দেশের অন্যান্য স্থানে আরও দুর্ঘটনা ঘটে এবং প্রাণহানীর সংখ্যা দাঁড়ায় সাকুল্যে পঁচিশ, আহত হয় পঁচাত্তর জনেরও বেশি। উন্নত সড়ক ও আইন বাস্তবায়ন; এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার হার বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। সূত্র মতে, প্রতি দশ হাজার যানবাহনে বাংলাদেশে প্রাণহাণির হার একশ উনসত্তর জন। অথচ বিশ্বের সর্ববৃহৎ গাড়ি প্রস্তুতকারী দেশ জাপানে প্রতি দশ হাজার গাড়িতে। দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ১.৯ জন। বাংলাদেশে দুর্ঘটনার আরও একটি ক্ষেত্র রেল ক্রসিং। ২০০৮-এর এপ্রিলে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গ-রাজবাড়ি রেলক্রসিংয়ে ট্রেন ও বাসের সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হয়। এ ধরনের দুর্ঘটনা আরও অনেক ঘটেছে এবং ঘটছে। নেত্রকোণা-মােহনগঞ্জ সড়কে মাত্র ৩৪ কিলােমিটার সড়ক পথে পাঁচটি রেলক্রসিং রয়েছে। যার একটিতেও রেলগেট নেই, নেই গেটম্যান, রয়েছে কেবল ছােট্ট একটি সাইনবাের্ড। এ চিত্র বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার সামগ্রিক চিত্র নয়, খণ্ড চিত্র। সাম্প্রতিককালে সিরাজগঞ্জে যমুনা ব্রিজের পশ্চিমপাশে একটি রাজনৈতিক সভা হচ্ছিল। সে || সভাস্থলটি ছিল রেললাইন থেকে ১০০ গজ দূরে। কিন্তু ট্রেন চলন্ত অবস্থায় সভাস্থলে দুর্ঘটনা ঘটে এবং কিছু লােকের জীবনহানি ঘটে।

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ: একটি পরিসংখ্যানে প্রকাশ, বাংলাদেশে প্রতি মাসে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় ৪০০ জন। এদের মধ্যে অনেকেই ম্রত্যু বরণ করে নেয় স্থায়ী পঙ্গুত্বের অভিশাপ । যেসব কারণগুলাে সড়ক দুর্ঘটনার জন্যে প্রধানত দায়ী তা। 

১. বেপরােয়া গতিতে গাড়ি চালানাে 

২. ত্রুটিযুক্ত যানবাহন

৩. ফিটনেসবিহীন গাড়ি 

৪. লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক

৫, হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানাে 

৬. ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ড্রাইভারদের অজ্ঞতা বা অনীহা 

৭. শিথিল ট্রাফিক আইন ব্যবস্থা

৮, জেব্রা ক্রসিং, ফুটপাত ও ফ্লাইওভারের স্বল্পতা 

৯. অপ্রশস্ত রাস্তা 

১০. ডিভাইডারযুক্ত চার লেন বিশিষ্ট দ্বিমুখী সড়কের অভাব ইত্যাদি। 

এ ছাড়া হকারদের ফুটপাত দখল, যত্রতত্র রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, পথের ধারে বে-আইনিভাবে গাড়ি পার্কিং প্রভৃতি কারণে রাস্তা সংকুচিত হয়ে পড়ে। এসবও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিকারের উপায়: বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার অনেক কারণ বিদ্যমান। তবে প্রতিকারের উপায় সহজসাধ্য। প্রয়ােজন কেবল সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। এ লক্ষ্যে: 

১. রাস্তাঘাট সংস্কার ও প্রশস্ত করতে হবে 

২. সড়ক অনুযায়ী যানবাহনের গতি নির্ধারণ করে দিতে হবে 

৩. ট্রাফিক আইনের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে ;

৪. ত্রুটিযুক্ত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে

৫. ডিভাইডারযুক্ত চার লেন বিশিষ্ট দ্বিমুখী সড়ক নির্মাণ করতে হবে

৬. ফুটপাত হকারদের দখলমুক্ত করতে হবে

৭. প্রয়ােজন অনুযায়ী জেব্রা ক্রসিং দিতে হবে, নির্মাণ করতে হবে ফ্লাইওভার

৮. উন্নত সিগনালিং ব্যবস্থা, রেল গেইট নির্মাণ এবং হাইওয়ে ট্রাফ্রিক নজরদারি বাড়াতে হবে। 

৯. লাইসেন্সবিহীন চালকদের কঠোর শাস্তির বিধান করতে হবে

১০. পথচারীদের পথ চলার নিয়ম সম্পর্কে সচেতন হতে হবে

উপসংহার: প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অকালে ঝরে যায় কত প্রাণ। পঙ্গুত্ব বরণ করে কেউ কেউ বেঁচে থাকে মৃত্যুর মতাে। হতাহতদের পরিবারে একদিকে জমে শােকের ছায়া অন্যদিকে আইনগত বিচার চাইতে গিয়ে তাদের পড়তে হয় নানান জটিলতায়। আইনের যথাযথ প্রয়ােগ নেই বলেই অপরাধ করেও দায়ী ব্যক্তিরা অবলীলায় পার পেয়ে যায়। তাই সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়ােজন আইনের কার্যকর প্রয়ােগ। আর এ দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনকে। সমস্যা নিরসনের জন্যে দীর্ঘমেয়াদি পরি আসতে হবে সরকারকে।

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা

ভূমিকা: সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম সমস্যা হলো সড়ক দুর্ঘটনা। নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য একটা সার্বক্ষণিক হুমকি সড়ক দুর্ঘটনা। আমাদের দেশে প্রায় প্রতিদিনই সংঘটিত হচ্ছে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, নির্বিবাদে প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। খবরের কাগজ খুললেই চোখে পড়ে সড়ক দুর্ঘটনার খবর। এ যেন নিত্যনৈমিত্তিক একটা ব্যাপার । সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যুদূত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের দরজায় । এর মরণ ছোবল থেকে বাঁচার উপায় বের করা অত্যন্ত জরুরি।

বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থাপনা: ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর আমাদের দেশে পাকা সড়কের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ৪৮০ কি. মি. । যার বেশির ভাগটাই ছিল সরু রাস্তা এবং ভারী যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। কিন্তু বর্তমানে সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এর ৪০% ভাগই হাইওয়ে মানসম্পন্ন। ১৯৯৪-৯৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশে মোটরগাড়ির সংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ৬৭ হাজার ১২ টি। বর্তমানে দেশে মোট নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা প্রায় পঁয়ত্রিশ লাখ। কিন্তু বর্তমানে সড়ক ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও দিনদিন সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা দ্রুত বেড়েই চলেছে।

জনসংখ্যার তুলনায় যানবাহন : বাংলাদেশে সড়কপথ, নৌপথ এবং আকাশপথ— এই তিন ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা প্রচলিত। বাংলাদেশে বর্তমানে ২০ হাজার কিলোমিটার পাকা সড়কে প্রায় ৪০ লক্ষ নিবন্ধিত যানবাহন রয়েছে। যার মধ্যে ১৮ লক্ষ মোটরসাইকেল রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুসারে বাংলাদেশে প্রতি এক লক্ষ মানুষের জন্য মাত্র এক হাজার ১৩৩টি যানবাহন রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ চীনে এক লক্ষ জনগণের জন্য ১৮ হাজার যানবাহন এবং ভারতে এক লক্ষ জনগণের জন্য ১৩ হাজার যানবাহন রয়েছে। এছাড়া থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় প্রতি দুজনের জন্য একটি করে যানবাহন রয়েছে। এসব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে যানবাহনের সংখ্যা কম হলেও সড়ক দুর্ঘটনার হার অনেক বেশি ।

সড়ক দুর্ঘটনার ধরন: বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া সড়ক দুর্ঘটনার খবর পর্যালোচনা করলে দেখা যায় বিভিন্নভাবে এসব দুর্ঘটনা ঘটে থাকে । এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— যানবাহনগুলোর মুখোমুখি সংঘর্ষ, গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া এবং চালকদের প্রতিযোগিতা বা ওভারটেকিং মনোভাব। এছাড়া রাস্তা পার হতে গিয়েও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে ।

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ: কারণ ছাড়া দুর্ঘটনা ঘটে না। সড়ক দুর্ঘটনার বহুবিধ কারণের মধ্যে নিম্নলিখিত কারণগুলো অন্যতম:

  • দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ড্রাইভারের অপ্রতুলতা;
  • অধিকাংশ গাড়ির অনুপযুক্ততা বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির অধিক ব্যবহার; রাস্তার তুলনায় পথচারী ও গাড়ির আধিক্য;
  • গাড়ির বহন ক্ষমতার বাইরে লোক নেওয়া;
  • গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত সড়কসমূহে পথচারীদের জন্য প্রয়োজনীয় ফুটপাত না থাকা;
  • গাড়ির অনিয়ন্ত্রিত গতিবেগ;
  • নিরাপত্তা আইন ও ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ না করা; নিম্নমানের রাস্তা নির্মাণ;
  • ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাফেরা করা;
  • ঞ. অনিয়ন্ত্রিত ওভারটেকিং ইত্যাদি ।
  • মহাসড়কে থ্রি হুইলার, ইজিবাইক ইত্যাদির আধিক্য। যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা করানো ।
  • উল্টো পথে গাড়ি চালানো ।
  • মহাসড়কের পাশে ইট-বালু-সুড়কি ফেলে রেখে এবং যানবাহন পার্কিং করে মহাসড়কের প্রশস্ততা হ্রাসকরণ ।

সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি: সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি অপূরণীয় এবং অসীম । সড়ক দুর্ঘটনা পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে এবং এর ফলে একটি পরিবারে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসে। বাংলাদেশের যাত্রীকল্যাণ সমিতির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০১৭ সালে প্রায় চার হাজার ৯৭৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। এসব দুর্ঘটনায় সাত হাজার ৩৯৭ জন নিহত এবং ১৬ হাজার ১৯৩ জন আহত হয় । এর মধ্যে হাত-পা বা অন্য কোনো অঙ্গ হারিয়ে পঙ্গু হয়েছে এক হাজার ৭২২ জন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে পাঁচ হাজার ৫১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সাত হাজার ২২১ জনের । এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ১৫ হাজার ৪৬৬ জন। এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে । সড়ক দুর্ঘটনার পরিণতি: সড়ক দুর্ঘটনার ফলে সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটি সাধিত হচ্ছে তা হলো মানবসম্পদের বিনষ্টি। এ ক্ষতি অপূরণীয় । তারপরেই রয়েছে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি। প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৫ কোটি ডলার বা এক হাজার কোটি টাকা। সমস্যাটা জটিলতর হয় তখনি যখন দেখা যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রায় পুরোটাই বৈদেশিক মুদ্রার । কারণ মোটরগাড়ি ও স্পেয়ার পার্টস কিনতে হয় বিদেশ থেকে। এক গবেষণায় দেখা যায় উন্নয়নশীল দেশসমূহের প্রতি কিলোমিটারে সড়ক দুর্ঘটনার হার ব্রিটেনের চেয়ে দ্বিগুণ। বাংলাদেশে প্রতি দশ হাজার যানবাহনে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের হার ১৬৯ জন, যা উন্নত দেশগুলোর তুলনার প্রায় ৩০ গুণ বেশি ।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিকার: সড়ক দুর্ঘটনা বর্তমানে আমাদের সামাজিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। মানুষ হয়ে পড়েছে নিরাপত্তাহীন। প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান জীবন। তাই দেশ, জাতি, সর্বোপরি দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য এ সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করা আশু প্রয়োজন ।

সড়ক দুর্ঘটনারোধকল্পে নিম্নলিখিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে: চালককে প্রকৃত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে এবং প্রকৃত লাইসেন্সধারীরা গাড়ি চালনা করে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে;

  • চলন্ত অবস্থায় চালকের সাথে কথা বলা যাবে না, ওভারটেকিং প্রতিযোগিতা দূর করতে হবে;
  • রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং গাড়ি চলাচলের উপযুক্ত কি না তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে;
  • প্রধান প্রধান ও ব্যস্ত সড়কে পথচারীদের জন্য প্রয়োজনীয় ফুটপাত ও ওভারব্রিজের ব্যবস্থা করতে হবে;
  • গাড়ির গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সীমা লঙ্ঘনকারীদের শাস্তির বিধান করতে হবে;
  • সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাফিক পুলিশদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যাতে নিরাপত্তা আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত ও শাস্তির কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে ।

নিরাপদ সড়ক আইন: সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত বিভিন্ন দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভায় নতুন ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বিল' অনুমোদন করা হয় এবং দশম জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশন পাশ হয়। এ আইনে অবহেলা বা বেপরোয়া মোটরযান চালনার কারণে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রেখে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বিল' সংসদে পাশ হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাণহানির দায়ে অভিযুক্তদের অপরাধ জামিনযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনাজনিত অন্যান্য অপরাধ আপস মীমাংসার জন্য পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো দুর্ঘটনা প্রমাণিত হলে প্যানেল কোরে ৩০২ ধারা মোতাবেক অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে ।

উপসংহার: সড়ক দুর্ঘটনা যত জটিল সমস্যাই হোক না কেন আমরা সকলে এর সমাধানে এগিয়ে এলে, আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া অসম্ভব নয় । এজন্য সকলকে সচেতন করে তুলতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তবেই সড়কপথ হয়ে উঠবে নিরাপদ ও আনন্দদায়ক। নিশ্চিত হবে নাগরিক জীবন

আরটিকেলের শেষকথাঃ সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা | সড়ক দুর্ঘটনা রচনা

প্রিয় বন্ধুরা তোমরা এতক্ষন জেনে নিলে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার রচনা | সড়ক দুর্ঘটনা রচনা টি। যদি তোমাদের আজকের রচনাটি ভালো লাগে তাহলে মন চাইলে তোমার ফেসবুক বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারো আর এই রকম নিত্য নতুন আরটিকেলে পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইট টি ভিজিট কর।।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ