বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা জেনে নিবো। তোমরা যদি বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা  টি।

বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা
বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা

বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা

ভূমিকা: ইংল্যান্ডের সীমা পেরিয়ে ক্রিকেট বহু আগেই বিশ্বের একটি জনপ্রিয় খেলায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশেও ক্রিকেট নিয়ে উন্মাদনার শেষ নেই। দেশের সর্বত্রই ক্রিকেট এখন জনপ্রিয় খেলা। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি মর্যাদাপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে।

বাংলাদেশে ক্রিকেট: উপমহাদেশে ক্রিকেটের আগমন হয় ইংরেজদের মাধ্যমে ঔপনিবেশিক কালে। তখন ক্রিকেট ছিল মূলত কলকাতা কেন্দ্রিক। ১৯৪৭-এর পর থেকে ঢাকা অঞ্চলেও ক্রিকেট খেলা জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নতুনভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম রাখা হয় 'বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বাের্ড (বিসিসিবি), বর্তমানে যা বাংলাদেশ ক্রিকেট বাের্ড (বিসিবি) নামে পরিচিত।

বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ: বাংলাদেশ ১৯৭৭ সালে প্রথমবারের মতাে বিশ্ব ক্রিকেট সংস্থার সহযােগী সদস্যপদ লাভ করে। ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফিতে অংশ নেয় বাংলাদেশ। ১৯৮৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে। এরপর ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ আইসিসি ট্রফিতে অংশ নেয় এবং ফাইনালে কেনিয়াকে হারিয়ে জয়লাভ করে। জয়ের আনন্দ সমস্ত বাংলাদেশকে ছুঁয়ে যায়। কারণ, এই জয় বাংলাদেশের জন্য আরেকটি প্রাপ্তি এনে দেয় - বাংলাদেশের জাতীয় দল বিশ্বকাপে খেলার যােগ্যতা অর্জন করে। বাংলাদেশ দল ১৯৯৮ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে কেনিয়াকে হারিয়ে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয়লাভ করে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলােয়াড়গণ দক্ষতা অর্জন করতে থাকে। ২০০৫ সালে ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৩-২ ম্যাচে হারিয়ে সিরিজ জয়লাভ করে। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডকে ৪-০ ম্যাচে হারিয়ে হােয়াইটওয়াশ করে। ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। এই অভূতপূর্ব বিজয়ে বিশ্ব একটি নতুন ক্রিকেট পরাশক্তির আবির্ভাব লক্ষ করে। বাংলাদেশ একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় বিশ্বের প্রতিটি ক্রিকেট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে জয়লাভ করেছে।

আইসিসি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ: ১৯৯৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ৬টি আসরে অংশ নেয়। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে ১৯৯৯ সালে প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশ নেয়। দলটি। প্রথম বিশ্বকাপেই স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করে বাংলাদেশ দল। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে সেরা আট-এ এবং ২০১৫ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে আশানুরূপ ফল না পেলেও এই খেলায় বড়াে বড়াে দলকে হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ দল নিজেদের সামথের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়।

টেস্ট খেলার মর্যাদা অর্জনঃ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল টেস্ট খেলুড়ে দলের মর্যাদা লাভ করে ২০০০ সালে। ওই বছর ১৩ই নভেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় বাংলাদেশ দলের। অভিষেক টেস্টেই আমিনুল ইসলাম বুলবুল ১৪৫ রান করেন, আর নাইমুর রহমান দুর্জয় পান ৬ উইকেট। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে হেরে যায় বাংলাদেশ। পরের বছর অর্থাৎ ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে মাত্র ১৭ বছর বয়সে সেঞ্চুরি করেন মােহাম্মদ আশরাফুল। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয় পায় বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ: ২০০৫ সালে ৫০ ওভারের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও পাঁচ দিনের টেস্ট-এর সঙ্গে যুক্ত হয় ২০ ওভারের খেলা টি-টোয়েন্টি। এতে একটি দল সর্বোচ্চ ২০ ওভার ব্যাট করতে পারে। বাংলাদেশ ২০০৬ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি খেলে আসছে।

বাংলাদেশের ঘরােয়া ক্রিকেটঃ ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বাের্ড প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই ঢাকা ও চট্টগ্রামে ক্রিকেট লিগ শুরু হয়। ১৯৭৪-৭৫ সালে জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চালু হয়। এ সময় থেকে জেলা পর্যায়েও ক্রিকেট লিগ চলতে থাকে। ১৯৯৯ সালে দেশে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা চালু হয়। তবে ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) যাত্রা করে, যা বাংলাদেশের ঘরােয়া ক্রিকেটে একটি চমক্কার সংযােজন। ঘরােয়া ক্রিকেটের পৃষ্ঠপােষকতা নতুন খেলােয়াড় তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আয়ােজক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ: একাধিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়ােজন করে সুনাম অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ টেস্ট খেলার যােগ্যতা অর্জনের আগেই আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ ১৯৯৮ আয়ােজনের দায়িত্ব পায়। ২০১১ সালে বিশ্বকাপের দশম আসরের অন্যতম আয়ােজকের দায়িত্ব পালন করে। বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়ােজনের ভার পড়ে বাংলাদেশের উপর। বাংলাদেশের সরকার, জনগণ ও সংশ্লিষ্টদের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা ক্রিকেট-বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার শের-এ-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী। স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম ও জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, বগুড়ার শহিদ চান্দু স্টেডিয়াম, খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম, সিলেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম উল্লেখযােগ্য। এছাড়াও ঘরােয়া ক্রিকেট অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আরাে কিছু স্টেডিয়াম রয়েছে।

বাংলাদেশে ক্রিকেটের প্রভাব: পুরাে বিশ্বের মতাে বাংলাদেশেও ক্রিকেট নিয়ে ব্যাপক উদ্দীপনা বিরাজ করে। ক্রিকেট মানুষের দেশপ্রেমকে আরাে বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই যখনই বাংলাদেশ দল অন্য কোনাে দলের বিপক্ষে খেলতে নামে, সমস্ত বাংলাদেশ উন্মুখ হয়ে থাকে। ক্রিকেটের কারণে বাংলাদেশের নাম পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। আবার বাংলাদেশের মানুষও পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষের সঙ্গে ভাববিনিময় করতে পারছে। 

ক্রিকেট একইসঙ্গে বিজ্ঞাপন-বাণিজ্য ও অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের জন্য ক্রিকেট আরেকটি সুফল বয়ে এনেছে, তা হলাে – পর্যটনের বিকাশ। বিশ্বের নানা দেশ থেকে আগত খেলােয়াড়, ব্যবস্থাপনায় নিয়ােজিত সদস্যবৃন্দ এবং ভক্তকুল বাংলাদেশে অবস্থান করছে এবং পর্যটন এলাকাসমূহে ভ্রমণ করছে। এতে একদিকে বিশ্বময় বাংলাদেশের পর্যটন-স্থানের নাম ছড়িয়ে পড়ছে, অন্যদিকে সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। 

বাংলাদেশের মানুষের জাতীয়তাবােধের বিকাশেও ক্রিকেট খেলা ভূমিকা রাখে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খেলা শুরুর আগে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বাজতে শুনলে এ দেশীয়দের মনে জাতীয়তাবােধের সঞ্চার হয়। তখন নিজের দেশের প্রতি এক ধরনের ভালােবাসা জাগে। বিশেষভাবে বাংলাদেশের খেলােয়াড়গণ যখন বিশ্বখ্যাত কোনাে দলকে পরাজিত করে, তখন যে আনন্দ হয়, তা দেশপ্রেমেরই আনন্দ।

উপসংহারঃ বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেট খেলা পছন্দ করে। ক্রিকেটের সঙ্গে এ দেশের কোটি কোটি মানুষের আবেগ জড়িত। তাই বাংলাদেশের বিজয়ে গােটা দেশ যেমন বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়ে, আবার পরাজয়ে মুষড়ে পড়ে। তবে কোনাে পরাজয়েই দেশবাসী খেলােয়াড়দের প্রতি আস্থা হারায় না। তাদের সমর্থন ও উত্সাহ দিয়ে যায়, যাতে পরবর্তী খেলায় খেলােয়াড়রা সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারে। ক্রিকেটের উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের উচিত নতুন খেলােয়াড় তৈরিতে ভূমিকা রাখা, উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, ঘরােয়া ক্রিকেটের প্রতি আরাে যত্নবান হওয়া এবং ক্রিকেটবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা।

বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা

ভূমিকা: বর্তমান বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় চিত্তাকর্ষক এবং অভিজাত খেলা ক্রিকেট। দ্রুত খেলাটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বাংলাদেশে দীর্ঘকাল ধরে ক্রিকেট খেলার প্রচলন থাকলেও '৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের যোগ্যতা অর্জন এবং অপ্রত্যাশিত সাফল্য দেশের খেলাধুলার ক্ষেত্রে ক্রিকেটকে প্রথম ও প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত করেছে। বর্তমানে ক্রিকেটকে বাঙালি জাতি এতটাই ভালোবেসে ফেলেছে যে জাতির অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে ক্রিকেট।

ক্রিকেট: ক্রিকেট খেলার জন্ম হয় ইংল্যান্ডে। ১৭৮৮ সালে ইংল্যান্ডের মেলবোর্ন ক্লাব ক্রিকেট খেলার নিয়মাবলি প্রবর্তন করে। ক্রিকেট খেলার মাঠের মাপ বৃত্তাকার বা ডিম্বাকৃতি যার ব্যাস ৪৫০ ফুট-৫০০ ফুট (১৩৭ মিটার ২০০ মিটার)। ক্রিকেটে পিচের মাপ-২২ গজ (দৈর্ঘ্য) x ১০ ফুট (প্রস্থ)। ব্যাটের মাপ ৩৮ ইঞ্চি লম্বায় ও প্রস্থে ৪.২৫ ইঞ্চি । এর বড় হতে পারবে না। স্ট্যাম্পের উচ্চতা ২৮ ইঞ্চি ও বলের ওজন ৫.৫-৫.৭৫ আউন্স (১৫৫.৯-১৬৩ গ্রাম) ও পরিধি ২২.৪-২২.৯ সে.মি.। মাঠে ক্রিকেট খেলা পরিচালনাকারী আম্পায়ার ২ জন ও মাঠের বাইরে ১জন (থার্ড আম্পায়ার) এবং প্রতিটি দলের সদস্য সংখ্যা ১১ জন। ক্রিকেট খেলার নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে রয়েছে আইসিসি বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা, যার প্রতিষ্ঠাকাল ১৫ জুন, ১৯০৯ ও সদর দপ্তর সংযুক্ত আরব আমিরাত।

বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ: ইংরেজ শাসনামলে এ দেশে তথা ভারতীয় উপমহাদেশে ক্রিকেট খেলার সূচনা ঘটে। দেশ বিভাগের কিছুকালের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার সুযোগ পায়। সে সময় পূর্ব পাকিস্তানেও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিকেট বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু পাকিস্তান আমলে তৎকালীন শাসক ও সংগঠকদের আন্তরিকতার অভাব ও বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এখানে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট বিকশিত হয়নি। ফলে পাকিস্তান শাসনামলে ক্রিকেটে বাংলাদেশের মান আটকে থেকেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট দল নানা চড়াই-উতরাই পার করে আজ এক সম্মানজনক অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। পরাজয়ের দুঃস্বপ্নকে পেছনে ফেলে বিজয়ের সুর বাজিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নিয়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে । 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড: ক্রিকেট খেলার অগ্রগতিকে অব্যাহত রাখার জন্য বাংলাদেশে একটি ক্রিকেট বোর্ড গঠিত হয়েছে, যা বিসিবি বা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নামে পরিচিত। এটি গঠিত হয় ১৯৭২ সালে । বিসিবির সদর দপ্তর ঢাকা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচিত প্রথম সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ।

আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশ: বাংলাদেশ আইসিসির সহযোগী সদস্য নির্বাচিত হয় ২৬ জুলাই, ১৯৭৭। বাংলাদেশ প্রথম আইসিসি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করে ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম আইসিসি ট্রফিতে। প্রথম আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন শফিকুল হক হীরা। ষষ্ঠ আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশের সাফল্য বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব লাভ করে। ষষ্ঠ আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয় কেনিয়াকে ২ উইকেটে পরাজিত করে। বর্তমানে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন শশাঙ্ক মনোহর।

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ: বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটের মর্যাদা লাভ করে ২৬ জুন, ২০০০ সালে। বাংলাদেশ সর্বপ্রথম যে ক্রিকেট দলকে টেস্ট ও ওয়ানডে উভয় সিরিজে হোয়াইট ওয়াশ করে তা হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও হ্যাটট্রিককারী প্রথম ক্রিকেটার- সোহাগ গাজী (১৩ অক্টোবর, ২০১৩, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে)। টেস্ট | ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল- ১০১ (বিপক্ষ-ভারত)। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম হ্যাটট্রিককারী বোলার- অলক কাপালি (২৯ আগস্ট, ২০০৩; বিপক্ষ- পাকিস্তান)। উল্লেখ্য, তিনি বাংলাদেশের ২৩তম টেস্টে বিশ্বের ২১তম বোলার হিসেবে ৩২তম হ্যাট্রিক করেন। বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় করে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয় করে ৯-১৩ জুলাই, ২০০৯, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। ২৬ জানুয়ারি, ২০১২ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্ট আম্পায়ারিংয়ে অভিষেক ঘটে এনামুল হক মনির। টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান (২০ এপ্রিল, ২০১৬ পর্যন্ত) ৬৩৮ রান। টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান (২৮ এপ্রিল-২ মে, ২০১৫)- ৫৫৫/৬ রান। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম ।

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ: বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলার মর্যাদা লাভ করে ১৫ জুন ১৯৯৭ সালে। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভিষেক ঘটে ৩১ মার্চ, ১৯৮৬, শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় এশিয়া কাপ ক্রিকেটে। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক করেন- শাহাদাত হোসেন রাজীব (২ আগস্ট, ২০০৬-বিপক্ষ জিম্বাবুয়ে)। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন রান-৫৮; বিপক্ষ- ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর — ৩৩৩, বিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে ইতিহাসে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় জুটি ২৯২ (তামিম- লিটন দাস) বিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ বেশ সাফল্য দেখাচ্ছে। সকল বড় দলই বাংলাদেশকে সমীহ করতে শুরু করেছে।

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ: বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভিষেক ঘটে ১৭ মে, ১৯৯৯ সালে। সেটি ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সপ্তম বিশ্বকাপে। সপ্তম বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক, প্রশিক্ষক ও ম্যানেজার ছিলেন— যথাক্রমে আমিনুল ইসলাম বুলবুল, গর্ডন গ্রিনিজ ও তানভীর মাজহার তান্না। সপ্তম বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল স্কটল্যান্ডকে ২২ রানে ও পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারায়। ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ জয় পায় তিনটি। ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ও একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান— মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ‘নক আউট' পর্বে উত্তীর্ণ হয় ইংল্যান্ডকে হারিয়ে 

T-20 বিশ্বকাপে বাংলাদেশ: T-20 বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় লাভ করে। T-20 বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয় মোহাম্মদ আশরাফুল। দ্বিতীয় T-20 বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের অধিকারী তামিম ইকবাল, ১০২ রান। ২০১৬ সালের T-20 বিশ্বকাপে তামিম ইকবাল এই গৌরব অর্জন করেন।

ক্রিকেটে বাংলাদেশের মেয়েরা: বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক সালমা খাতুন। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে স্ট্যাটাস লাভ করে ২৪ নভেম্বর ২০১১। ২০১৪ সালে নারী টি-২০ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। এতে অংশগ্রহণ করে ১৬টি দেশ।

উপসংহার: আজকের বিশ্বে খেলাধুলাকে আর নিছক খেলা ভাববার কোনো সুযোগ নেই। খেলার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে জাতীয় ভাবমূর্তির প্রশ্নও। আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে । একদিন এই ক্রিকেট দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে পাবে অন্য এক পরিচয়, অনন্যতার এক নিদারুণ স্বাদ ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা  টি। যদি তোমাদের আজকের এই বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ