bangla data

মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প জেনে নিবো। তোমরা যদি মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প  টি।

মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প
মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প

মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প

মাসুমা তাঁর এক সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে সুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন। একদিন, অফিস থেকে ফেরার পথে তাঁর স্বামী জুয়েল সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন। পথচারীরা মুমূর্ষু অবস্থায় জুয়েলকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ মাসুমা সংবাদ পেয়ে ছেলেকে নিয়ে দ্রুত ছুটে যান হাসপাতালে । গিয়ে দেখেন তাঁর স্বামীর অবস্থা খুবই খারাপ।

ডাক্তার অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে এসে বলেন, রোগীকে এই মুহূর্তে অস্ত্রোপচার না করলে মারা যাবেন। মাসুমা কত টাকা ব্যয় হবে জানতে চাইলে ডাক্তার বললেন, তিন লক্ষ টাকা। মাসুমা বুঝে উঠতে পারলেন না এই মুহূর্তে এত বড়ো অঙ্কের টাকা কোথায় পাবেন। স্বামী সামান্য বেতনের চাকরি করতেন। তিনি ডাক্তারকে বললেন, “আপনি আমার বড়ো ভাইয়ের মতো। আমার পক্ষে এই মুহূর্তে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়।” ডাক্তার বললেন, “আমার করার কিছু নেই।” মাসুমা ডাক্তারের দুটি পা জড়িয়ে ধরলেন। কাতর কণ্ঠে বললেন— “ভাই, আমার স্বামীকে বাঁচান। আমাকে এত তাড়াতাড়ি বিধবা করবেন না। স্বামী মারা গেলে পাশে দাঁড়ানোর মতো এই পৃথিবীতে আমার কোনো স্বজন নেই। ছেলেকে নিয়ে আমাকে পথে নামতে হবে।” ডাক্তার অপারেশন না করে চলে গেলেন। অপারেশন থিয়েটার থেকে জুয়েলকে বের করে দিলেন। চিকিৎসার টাকার অভাবে সেই রাতেই জুয়েল মারা যান ।

বিধবা মা তাঁর একমাত্র আদরের ছেলে সোহাগকে লেখাপড়া শিখিয়ে ডাক্তার বানাবেন। সেই স্বপ্ন বুকে লালন করে ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় আসেন । শুরু করেন ছেলেকে ডাক্তার বানানোর সংগ্রাম । ভর্তি করিয়ে দেন একটা ভালো স্কুলে। মাসুমা সারাদিন কাজ করেন মানুষের বাসায় বাসায়। রাতে বাসায় বসে মেয়েদের জামাকাপড় তৈরি করেন। বেশ ভালো কাটছে ছেলেকে নিয়ে তাঁর দিন। এদিকে সোহাগ এইচএসসি পাস করে। মাসুমা ছেলেকে টাকা সংগ্রহ করে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করে দিলেন। খরচ আর কুলাতে পারেন না মাসুমা। হাড়ভাঙা খাঁটুনিতে তাঁর শরীরটা যেন দিন দিন ভেঙে যাচ্ছে ।

ছেলে ডাক্তারি পড়া শেষ করে সবেমাত্র বেরিয়েছে। মাকে সোহাগ খুব ভালোবাসে। মা-ই যেন তার স্বর্গ। কিন্তু নিয়তির কী নির্মম পরিহাস! মাসুমা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সোহাগ তাঁকে নিয়ে যায় তার বাবাকে ফিরিয়ে দেওয়া হাসপাতালে। সোহাগ এখন ভালো ডাক্তার। মাসুমাকে নিয়ে ডাক্তারদের মাঝে অস্থিরতা তৈরি হলো। ডাক্তাররাই যেন মাসুমার এক একটা সন্তান । আজ সোহাগের সেই দিনের কথা মনে পড়ছে, যেদিন তার বাবা টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় এই হাসপাতালেই মারা যান। সেদিনের মায়ের সেই বিষণ্ণ মুখটি চোখের সামনে বার বার ভেসে উঠছে। ডাক্তার সাহেব গভীর কণ্ঠে সোহাগকে জানালেন, আপনার মায়ের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। সাথে আরও জানালেন তাঁর লিভার ক্যানসার হয়েছে । সোহাগ নিজেকে ধরে রাখতে পারল না । জ্ঞান হারিয়ে ফেলল । এক মাস ধরে শতচেষ্টা আর সেবা দিয়েও সোহাগ তার মাকে বাঁচাতে পারল না। তার মা তাকে এত শ্রম দিয়ে, কষ্ট করে, খেয়ে না খেয়ে ডাক্তার বানালেন দেশসেবার জন্য। কিন্তু তার লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন আর দেখে যেতে পারলেন না । মাকে হারিয়ে সোহাগ তখন নিঃস্ব, রিক্ত ও অসহায় ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প  টি। যদি তোমাদের আজকের এই মায়ের স্বপ্ন পূরণ খুদে গল্প  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ