সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প জেনে নিবো। তোমরা যদি সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প  টি।

সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প
সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প

সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প

লিটু সাঁওতাল চব্বিশ ঘণ্টা নেশা করে থাকা এক মাতাল মানুষ। গ্রামের সকলে তাই তাকে ‘মাতাল লিটু' নামে চেনে ও ডাকে। সাঁওতাল পাড়াকে আরও অপমান করে সকলে ‘বুনোপাড়া” বলে ডাকে। এই বুনোপাড়ায় আনুমানিক ৫০-৬০ ঘর বুনো বা সাঁওতালের বাস। বুনোপাড়ার প্রত্যেকের আলাদা নাম থাকা সত্ত্বেও ভদ্রসমাজ সবাইকে 'বুনো' বলেই ডাকে। শ্রেণিশোষণের এ এক চাক্ষুষ রূপ। লিটু বুনো পারিবারিক জীবনে দুই সন্তানের জনক। তার স্ত্রী বনশ্রীই হলো পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বুনোপাড়ায় পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সবরকম কায়িক পরিশ্রমে সিদ্ধহস্ত। মাটিকাটা, মাথায় করে মাটিভর্তি ডালি বহন, সবরকম কৃষিকাজে ঘরকন্নার খুঁটিনাটিসহ গৃহস্থালি যেকোনো কাজে সাঁওতাল নারীরা নিয়মিত কামলা হিসেবে কাজ করে থাকে। বনশ্রীও আর দশজন সাঁওতাল বধূর মতো কামলা খেটে পরিবারের আহার জোগায়। তাদের সংসারে প্রায়ই ঝগড়া বাধে। বনশ্রী প্রতিদিন সকালে স্বামী-সন্তানের জন্য রান্না করে রেখে তবেই কাজের উদ্দেশ্যে বাইরে যায়। তবু সাঁঝবেলায় ফিরে এসে স্বামীর বেপরোয়া মাতলামি স্বাভাবিকভাবেই অসহনীয় হয়ে ওঠে তার কাছে। স্বামীর অহেতুক অন্যায় ও অপমানজনক অশ্লীল গালিগালাজ বনশ্রীর শরীরে যেন কাঁটার মতো বিধতে থাকে। দিনের পর দিন বনশ্রী আর এত কষ্ট-অপমান-আঘাত সহ্য করতে পারছিল না। শুধু দু'সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে নীরবে অশ্রুপাত করে সে সবকিছু সয়ে যেত। একদিন রাগ করে দু'সন্তানকে নিয়ে বনশ্রী তার দাদার কাছে চলে যায় স্বামী-সংসার সবকিছু ছেড়ে। তখন মাতাল লিটু সারাদিন ভাতের বদলে চোয়ানি-পচানি খেয়েই পড়ে থাকে। দিনকে দিন এমনভাবে চলতে চলতে সে এক সময় ভয়ানক রোগা ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। বুনোপাড়ায় তখন তাকে দেখার কেউ ছিল না। মরণাপন্ন লিটুর এমন দুরবস্থা ও করুণ পরিণতির কথা শুনে বনশ্রী আর পাষাণে বুক বাঁধতে পারেনি। ফিরে আসে সে আপন সংসারে। বনশ্রীর ঐকান্তিক শুশ্রূষা ও অকুণ্ঠ সেবায় লিটু সুস্থ হয়ে ওঠে। লিটু তখন সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে জীবনযাপন করতে থাকে। সে এখন নিয়মিত কাজে যায়, বাড়িতে ফিরে বউ বনশ্রীর সাথে মজা- মশকরা করে, সন্তানদের আদর করে। আর নেশা? নেশাকে চিরদিনের জন্য সে না' বলে দিয়েছে। এমনকি বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক- পারিবারিক অনুষ্ঠানে পানাহার বা নেশা করা থেকেও বিরত থাকে লিটু মাতাল। দু'সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষ বানানোর স্বপ্নে এখন স্বামী-স্ত্রী উভয়ে বিভোর। নিজেদের ঘরের টিনের ফাঁক দিয়ে দেখতে পাওয়া চাঁদের দূরত্বের সমান বড়ো তাদের আগামীর স্বপ্নগুলো। অভাব আর অনিশ্চয়তার সুকঠিন সংসারজীবনে স্বপ্নই তাদের একমাত্র অবলম্বন । স্বপ্নময় তাদের জীবন, জীবনময় তাদের স্বপ্ন।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প  টি। যদি তোমাদের আজকের এই সাঁওতালের সংসার খুদে গল্প  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ