মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প জেনে নিবো। তোমরা যদি মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প  টি।

মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প
মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প

মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার ইচ্ছা স্বপ্নিল ও মুনার অনেকদিনের। তারা শ্রীপুর গ্রামে এক মুক্তিযোদ্ধার কাছে গেল মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে। মুক্তিযোদ্ধার নাম রহমত উল্লাহ। কলেজের অধ্যক্ষ মোমেনুর রহমানের বন্ধু তিনি। মোমেনুর স্যারই তাদের এই বীর মুক্তিযোদ্ধার ঠিকানা দিয়েছেন। রহমত উল্লাহ ও মোমেনুর স্যার একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশমাতৃকার মুক্তি ছিনিয়ে আনতে যুদ্ধ করেছেন ।

সেদিন ছিল রবিবার । গ্রীষ্মের রৌদ্রতপ্ত দুপুরে স্বপ্নিল ও মুনা মুক্তিযোদ্ধা রহমত উল্লাহর বাড়িতে পৌঁছায়। পথ খুঁজে পেতে তাদের বেগ পেতে হয় না। শ্রীপুর গ্রামে সবাই এক নামে চেনে মুক্তিযোদ্ধা রহমতের বাড়ি । দরজায় টোকা দিতেই বের হয়ে আসেন সত্তরোর্ধ্ব এক নারী।

‘আসসালামু আলাইকুম। আমরা মুক্তিযোদ্ধা রহমত উল্লাহর স্যারের কাছে এসেছি। শ্রীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোমেনুর স্যার আমাদের পাঠিয়েছেন,' এক নিশ্বাসে বলে ফেলে মুনা।

প্রৌঢ়া একজন নারী তাদের ভিতরে নিয়ে বসান এবং অপেক্ষা করতে বলেন। ভীষণ উৎফুল্ল স্বপ্নিল ও মুনা। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একজন মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে সরাসরি স্বাধীনতার ইতিহাস শোনার সুযোগ আজ বাস্তব হতে যাচ্ছে। অপেক্ষার প্রহর যেন কাটতেই চায় না । তাদের সামনে যেন সময় থমকে গেছে।

হঠাৎ কাঠের দরজা ঠেলে বের হয়ে আসেন একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি । তাদের অপেক্ষার পালা যেন শেষ হলো। মুক্তিযোদ্ধার মুখে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনার দুর্লভ সুযোগ আজ আর স্বপ্ন নয় ।

সালাম দিয়ে নিজেদের পরিচয় ও আসার হেতু রহমত উল্লাহর কাছে তারা খুলে বলে। স্বাধীনতার ইতিহাস শোনার জন্য তরুণ প্রজন্মের এই দুই প্রতিনিধির আগ্রহ দেখে মুক্তিযোদ্ধা রহমত উল্লাহও ভীষণ খুশি হন। খুলে দেন তাঁর অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার। ফিরে যান দুঃসাহসী মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে । রোমন্থন করেন সাহসী ও সংগ্রামী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ।

১৯৭১ সালে তিনি বিএসসি ফাইনাল পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। এমন সময় আসে মুক্তিযুদ্ধের ডাক। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। 'একাত্তরের এপ্রিল মাসে শ্রীপুরে পাকিস্তানিরা ঢুকে পড়ে। বাড়িঘর, দোকানপাট সব পুড়িয়ে দেয় ওই পশুর দল। প্রতিটি ঘরের পুরুষ সদস্যকে তারা হত্যা করে । নারীদের তুলে নিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আমি যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই'— বলেন রহমত উল্লাহ।

পালিয়ে ভারতে যান রহমত উল্লাহ এবং তিন মাস ট্রেনিং শেষে অস্ত্র হাতে ফিরে আসেন দেশকে শত্রুমুক্ত করতে। বলে চলেন রহমত, ‘তখন আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ। আমার ট্রেনিং তখন শেষ। আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ঝিনাইদহের মহেশপুরে আকবর চেয়ারম্যানের কাছে। তাঁর অধীনে ছিল মুক্তিবাহিনীর একটি দল। আমরা যোগ দিলে দলটি বড়ো হয়; সব মিলিয়ে ২০০ জন। ছোটো ছোটো গ্রুপ করে আমরা অপারেশন করি। নবুয়া, আহম্মদ, ভিকু, রাজ্জাক, সুধীর বিশ্বাসও ছিলেন আমাদের দলে ।' ‘রাজাকাররা অত্যাচার করত খুব। যুবতিদের ধরে নিয়ে ক্যাম্পে দেওয়া আর লুটপাট করা ছিল তাদের প্রধান কাজ। মহেশপুর থানার ভেতরে কিছু রাজাকার তখন অবস্থান করছিল। থানার চারপাশ আমরা নিয়ন্ত্রণে নিই। ওরা ভেতরে। আকবর চেয়ারম্যান প্রথমে তাদের আত্মসমর্পণ করার কথা বললেন । প্রত্যুত্তরে তারা গুলি ছোড়ে। আমরাও পাল্টা জবাব দিই । অল্প সময়ের মধ্যেই থানা দখল করে নিই। ওই অপারেশনে মেলে অনেক অস্ত্র। এভাবেই চলছিল প্রতিটি অপারেশন । নিরাপত্তা বলে কিছু ছিল না। যে কোনো সময় শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ভয় ছিল । একবার হলোও তাই ।' মুখমণ্ডল শক্ত হয়ে ওঠে রহমত উল্লাহর ।

বলে চলেন প্রবীণ এই মুক্তিযোদ্ধা, ‘মহেশপুর সরকারি বিদ্যালয়ের ভেতর কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা রেস্ট নিচ্ছিল। এটা সেপ্টেম্বরের শেষ কিংবা নভেম্বরের শুরুর দিকের কথা। রাজাকাররা এ খবর পৌছে দেয় পাকিস্তানি আর্মি ক্যাম্পে। ওরা এসে ঘিরে ফেলে স্কুলটিকে। অতঃপর নির্মমভাবে হত্যা করে দশজন মুক্তিযোদ্ধাকে। তাদের লাশগুলোর দিকে তাকাতে পারিনি। কারও চোখ উড়ে গেছে, কারও বুক বেয়নেটের আঘাতে রক্তাক্ত। এখনও মনে হলে বুকটা কেঁপে ওঠে।'

গল্পসংকেত: পড়ন্ত বিকেলে ঢাকার ফুটপাতে হাঁটতে হাঁটতে রাজু ভাবে, কালের প্রবহমান স্রোত জীবনকে আজ কতদূরে নিয়ে এসেছে। কিন্তু শৈশবের স্মৃতিগুলো আজও...

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প  টি। যদি তোমাদের আজকের এই মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি খুদে গল্প  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ