নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প জেনে নিবো। তোমরা যদি নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প  টি।

নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প
নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প

গল্পসংকেত: সংসারের চাকা সচল রাখতে রোমানা অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ বেছে নেয়, তার একমাত্র মেধাবী কন্যার স্বপ্ন পূরণের... 

নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প

সংসারের চাকা সচল রাখতে রোমানা অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ বেছে নেয়, তার একমাত্র মেধাবী কন্যার স্বপ্ন পূরণের জন্য উদয়াস্ত হাড়ভাঙা খাটুনি খাটে সে। দুই বছর হলো রোমানার স্বামী করিম মারা গেছে। একসময় সুখের সংসার ছিল তার। প্রাচুর্য না থাকলেও অভাব ছিল না সেই সংসারে। হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় করিম। সেই থেকে তার দুর্দশার শুরু ।

মেয়ে তার একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। আগামী বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে । অত্যন্ত মেধাবী সে। জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। ঢাকায় এক ভালো স্কুলে পড়াশোনা করেছে।

রোমানার সকল স্বপ্ন আজ মেয়েকে ঘিরে আবর্তিত। অন্যের বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে হাড়ভাঙা খাটুনিকে সে কিছুই মনে করে না। একদিন এই মেয়েই পড়াশুনা শেষ করে সংসারের হাল ধরবে— এই আশায় বুক বাঁধে সে। পরের বাসায় কাজ করতে গিয়ে কথা শোনা, বকাঝকা খাওয়াকে তাই সে গায়ে মাখে না। মুখ বুজে মাথা নত করে কাজ করে চলে সে ।

মেয়েও মায়ের দুঃখকে উপলব্ধি করে। পৃথিবীতে মাকেই সে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। মায়ের স্বপ্নপূরণে সে বদ্ধপরিকর। 1 নিয়মিত মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করে সে। বাসায় মায়ের কাজেও হাত লাগায় । তাঁর স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি পার্টটাইম চাকরি করবে সে। মায়ের দুঃখ সে যে করেই হোক ঘোচাবে। ‘দেখো, মা! দু'বছর পরে আমাদের কোনো দুঃখই থাকবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই আমি ঠিকই একটা চাকরির ব্যবস্থা করে নেবো। তোমাকে আর মানুষের বাসায় কাজ করতে হবে না,' প্রত্যয় ভরা মুখে বলে মেয়ে । অনাগত সুখের দিন কল্পনা করে রোমানার বুক গর্বে ভরে ওঠে। স্বচ্ছন্দের জীবনের স্বপ্ন বুনে চলে রোমানা। মা তাকে অভয় দেয়, ‘তোকে চাকরি করতে হবে না। একেবারে পড়াশুনা শেষ করে তুই চাকরি নিবি। আমি ঠিকই সংসার চালিয়ে নিতে পারব এই ক'টা বছর।' মেয়ে তার অভিমান করে। মায়ের কথার পাল্টা যুক্তি দেয় সে। মা তার কথা কিছুতেই আমলে নেয় না।

একদিন মা তার অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রচণ্ড জ্বরে বিছানায় ঠাঁই নেয় সে। টানা সাত দিন কাজে যেতে পারে না । গৃহকর্ত্রী লোক পাঠায় তার খোঁজ নিতে । দারোয়ান রহিম মিয়া সব দেখে গৃহকর্ত্রীকে জানায় । গৃহকর্ত্রীর নাম রহিমা খাতুন । উচ্চশিক্ষিত ওই নারী নিঃসন্তান। রোমানার বাড়িতে এসেই সে ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা করেন। সবকিছু শুনে তিনি সিদ্ধান্ত নেন রহিমার মেয়ের পড়াশুনার খরচ তিনি বহন করবেন। রোমানার কিছুতেই বিশ্বাস হয় না গৃহকর্ত্রীর কথা। বিশ্বাস হয় না তার মেয়েরও।

সুস্থ হয়ে রোমানা ফের কাজে যোগ দেয়। মিসেস রহিমা তার হাতে সত্যি সত্যিই দশ হাজার টাকা হাতে তুলে দেন এবং প্রতিমাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা মেয়ের খরচ বাবদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রোমানার আনন্দে কান্না এসে যায়। সেদিন মিসেস রহিমা তাকে ছুটি দিয়ে দেন। বাড়ি ফেরার পর সব শুনে মেয়েও তাজ্জব বনে যায় । স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় দু'জনই ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প  টি। যদি তোমাদের আজকের এই নিঃসন্তান নারীর মহানুভবতা খুদে গল্প  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ