বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর  টি।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর

উত্তর : ভূমিকা : অসংখ্য পাহাড় পর্বত বন জঙ্গল থাকার কারণে বাংলাদেশে প্রবেশ সহজ সাধ্য কাজ নয়। মানুষের সাথে প্রকৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য ও অকৃত্রিম সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রকৃতির ছায়া তলে মানুষ জন্মগ্রহণ করে বয়ঃপ্রাপ্ত হয় এবং জীবন-জীবিকানির্বাহ করে। আর এ ভূ-প্রকৃতি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষের উপর প্রভাববিস্তার করে। আর প্রকৃতির প্রভাবের কারণেই কোনো অঞ্চলের মানুষ হয় সাহসী, উদ্যমী ও কর্মঠ। আবার এ ভূ-প্রকৃতির কারণেই কোনো অঞ্চলের মানুষ হয় অলস, অকর্মঠ । প্রকৃতির কারণেই কোনো অঞ্চলের অধিবাসী খুব সহজেই জীবিকানির্বাহ করতে সক্ষম হয়। আবার এই ভূ- প্রকৃতির কারণেই কোনো অঞ্চলে কঠিন পরিশ্রম করে অতি কষ্টে। জীবিকানির্বাহ করতে হয় ।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূপ্রকৃতির প্রভাবসমূহ : ভূ-প্রকৃতিগত দিক হতে বাংলাদেশকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। এ তিন ধরনের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থায় তিন ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে থাকে। ভূ-প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্যের কারণে জীবনযাত্রার মানের তারতম্য দেখা দেয়। ফলে কোথাও জীবনযাত্রা কঠিন আবার কোথাও সহজ। উদাহরণস্বরূপ- পার্বত্য অঞ্চলে জীবনযাত্রা কঠিন, আবার সমতলে ভূমিতে এ মান সহজ প্রকৃতির । আবার কোথাও জীবনযাত্রা উন্নত, কোথাও নিম্ন। ভূমির গঠন ও পার্থক্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৩টি ভূ- প্রকৃতিগত ভাগ হলো-

১. টারশিয়ারি যুগের পাহাড়;

২. পাইস্টোসিনকালের পাহাড় ও 

৩. সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি।

নিম্নে অর্থনীতিতে ভূ-প্রকৃতিগত প্রভাব আলোচনা করা হলো— 

টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ও অর্থনীতিতে এর প্রভাব : মূলত টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত গঠিত হওয়ার সময় এ সকল পাহাড় সৃষ্টি হয়। টারশিয়ারি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ বাঁশ, বেত জাতীয় উদ্ভিদ জন্মে। এছাড়া বৈলাম বৃক্ষ এখানে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এ অঞ্চলে ছোটো ছোটো ঝোঁপজঙ্গল ও বৃক্ষরাজি রয়েছে। এখানকার মানুষ মূলত এগুলোর সাথে সম্পর্কিত হয়ে তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে ।

পাইস্টোনকালের পাহাড় ও অর্থনীতিতে এর প্রভাব : এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাস, চুনাপাথর, কয়লা প্রভৃতি খনিজ রয়েছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। এখানে ধান, পাট, তামাক, ভুট্টা, পান উৎপন্ন হয়। কাঁঠাল ও গজারি বৃক্ষসহ নানা কৃষিজ ফসলও প্রচুর জন্মে ।

সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি ও অর্থনীতিতে এর প্রভাব : সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমির মধ্যে রয়েছে—

১. কুমিল্লা সমভূমি : এ অঞ্চল বর্ষাকালে ডুবে থাকে এবং প্রচুর কৃষি ফসল উৎপন্ন হয় ।

২. সিলেট সমভূমি : মূলত হাওর অঞ্চল এটি। এ অঞ্চলে শীতকালে পানি নেমে গেলে বোরো ও ইরি ধানের চাষ হয়। ৩. পাদদেশীয় প্লাবন ভূমি : এখানে ধান, পাট, ইক্ষু, তামাক জন্মে ।

সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যাবলির উপর ভূ- প্রকৃতির প্রভাবসমূহ : গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বাংলাদেশে দক্ষিণ- পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়। আর এটি যখন বঙ্গোপসাগর থেকে আসে তখন এসব পাহাড়সমূহে বাধা পেয়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ঘটায়। ফলে বাংলাদেশের কৃষির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু এসব পাহাড়ে সামান্য বাধাপ্রাপ্ত হয়ে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। ফলে বাংলাদেশের প্রধান রবি শস্য এ সময়ে জন্মে। কিছু পাহাড়ি অঞ্চল রয়েছে যেখানে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাতের ফলে বনভূমি সৃষ্টি হয়েছে। এসব বনভূমি থেকে প্রচুর মূল্যবান কাঠ ও অন্যান্য বনজ সম্পদ সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। পাহাড়ের ঢালে চা, রাবার, আনারস জন্মে। মধুপুর অঞ্চল থেকে গজারি কাঠ সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। যেসব এলাকায় নদীবাহিত উর্বর পলিমাটি রয়েছে সেখানে কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, পরিবহণ জনবসতি ইত্যাদি ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয় । এখানে সমতল ভূমি ও বহু নদ-নদী থাকায় সড়ক, রেল, জলপথে পরিবহণের বিশেষ উন্নতি হয়েছে।

এ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির লবণাক্ত ভূমির প্রভাবে বিশাল বনভূমি সৃষ্টি হয়েছে। এগুলোর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। কারণ বাংলাদেশে উৎপাদিত কাঠের ৬০% এখান থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এদেশের প্রধান ২টি সমুদ্রবন্দর ভঙ্গুর উপকূলের প্রভাবে তৈরি। যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের ব্যবসায়- বাণিজ্যের উন্নতি ও প্রসারে ভূমিকা পালন করে থাকে ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশকে যেমন আলাদা আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায় তাদের ভূ- প্রকৃতির পার্থক্যের কারণে। তেমনি বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির পার্থক্যের কারণে বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক সত্তাও বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ ভূ-প্রকৃতি দ্বারা মানুষের সামগ্রিক জীবনধারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে । সুতরাং ভূ-প্রকৃতির বিরূপ আচরণ মানুষের জীবনকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছাতে পারে। অতএব প্রত্যেকটি মানুষের উচিত ভূ-প্রকৃতি সঙ্গে বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা। যাতে ভূ- প্রকৃতি মানুষের জীবন ধারণের পথ সহজ ও সহায়ক করে দেয় ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর  টি। যদি তোমাদের আজকের এই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূ প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা কর  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
3 Comments
  • Anonymous
    Anonymous 13 October

    Tnx

    • Anonymous
      Anonymous 24 March

      arigatogudaimasu,unnake uttasiuro!
      Nakanaide!sempai yowaimo

  • Anonymous
    Anonymous 14 November

    kar bal disen miya..copy korte pari nah

Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ