সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন বিষয়ক একটি খুদে গল্প

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন বিষয়ক একটি খুদে গল্প জেনে নিবো। তোমরা যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন বিষয়ক একটি খুদে গল্প টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন বিষয়ক একটি খুদে গল্প  টি।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন বিষয়ক একটি খুদে গল্প
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন বিষয়ক একটি খুদে গল্প

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন খুদে গল্প

রসুলপুর মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম। ঠিক তার পাশে আনন্দপুর গ্রামটি হিন্দু অধ্যুষিত। দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলেও হিন্দু আর মুসলমান দুই মোড়লের মধ্যে অনেক দিন ধরেই সদ্ভাব নেই। দুই মোড়লের এই দ্বন্দ্ব সাধারণ মানুষের জীবনেও প্রভাব ফেলে। একবার রসুলপুর গ্রামের হাফিজের সঙ্গে আনন্দপুর গ্রামের সতীশের তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এই কথা কাটাকাটি শেষ পর্যন্ত হাতাহাতিতে রূপ নেয় ৷ হাফিজ আর সতীশ দুই জনই ভালো বন্ধু । সেই ছোটবেলা থেকেই ওরা একসঙ্গে নদীতে মাছ ধরেছে, মাঠে ঘুড়ি উড়িয়েছে, রাতে অন্যের বাগানের আম চুরি করেছে। দুজনই দুজনের বাড়িতে থেকেছে, খেয়েছেও। একসঙ্গে চলতে গেলে এ রকম ঝগড়া- বিবাদ হতেই পারে। আগেও দু-একবার হয়েছে আবার দ্রুত মিটেও গেছে। এবারও মিটে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মিটল না বরং দ্বন্দ্বটা আরও ছড়িয়ে পড়ল। বলা যায়, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বটা সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বে পরিণত হলো। আর এই পরিণতির পেছনে ইন্ধন জোগাল দুই গ্রামের দুই মোড়ল। হিন্দুদের বোঝানো হলো মুসলমানরা হিন্দুদের দুশমন। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে স্বর্গপ্রাপ্তি নিশ্চিত। অন্যদিকে, মুসলমানদের বোঝানো হলো হিন্দুরা কাফের। ওদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ফরজ। এভাবে দুই গ্রামের পরিস্থিতি খুব দ্রুত অবনতির দিকে যেতে লাগল । এর আগেও এ দুই গ্রামের মধ্যে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন কারণে সংঘাত হয়েছে, দু-একজনের প্রাণও গেছে।

পরিস্থিতি যখন এতটাই খারাপ, ঠিক সেই সময় দুই গ্রামের শান্তিপ্রিয় গুটিকয়েক মানুষ মোড়লদের অগোচরে একত্র হলো। তারা হাফিজ আর সতীশকেও একত্র করল । তারা দুই বন্ধুকে বোঝাল যে, একসঙ্গে শান্তিতে থাকার জন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কোনো বিকল্প নেই। একসঙ্গে থাকলে মাঝেমধ্যে একটু ঝগড়া-বিবাদ হতেই পারে, কিন্তু তাদের দুই বন্ধুর এই ঝগড়াকে পুঁজি করে দুই মোড়ল যে তাদের আধিপত্য বিস্তারের পাঁয়তারা চালাচ্ছে সেটা গ্রামের সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না। এই সংঘর্ষে গ্রামের মানুষেরও কোনো উপকার হবে না। সতীশ আর হাফিজ তাদের ভুল বুঝতে পারল । সতীশের মনে পড়ল, একদিন ছোটোবেলায় হাফিজই তাকে পানিতে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচিয়েছিল। হাফিজের মনে পড়ল, ছোটোবেলায় স্কুলে একদিন সতীশ ওর জন্য স্যারের কাছে বেদম মার খেয়েছিল তবু হাফিজের নাম বলেনি। দুই বন্ধু দুই জনকে জড়িয়ে ধরল । শান্তিপ্রিয় মানুষগুলো আর তাদের আবেগ ধরে রাখতে পারল না। কারো কারো চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। তারপর ওরা সিদ্ধান্ত নেয়, এই সংঘাত ওদের থামাতেই হবে। কিন্তু ইতোমধ্যে দুই গ্রামের হিন্দু আর মুসলমান ঢাল-সড়কি নিয়ে মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রায় প্রস্তুত হয়ে গেল ।

মাঠের একপাশে হিন্দু জনতা, অন্যপাশে মুসলিম জনতা। দুই দলই ক্ষোভে ফুঁসছে। হঠাৎ মাঠের মাঝখানে দেখে হাফিজ আর সতীশকে। দুই বন্ধু মোড়লদের চক্রান্তের কথা বলে নিজেদের মধ্যে এমন যুদ্ধে লিপ্ত হতে নিষেধ করে। কিন্তু দুই দল তখনো শান্ত হয় না। আস্তে আস্তে শান্তিপ্রিয় মানুষগুলোও এসে দাঁড়ায় দুই বন্ধুর পাশে। তারাও বোঝাতে থাকে দুই দলকে। অবশেষে দুই দলে হিন্দু আর মুসলমান হাতের অস্ত্র ফেলে বুকে বুক মেলায় । ভালোবাসায় আবার ভরে ওঠে দুই গ্রাম ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন বিষয়ক একটি খুদে গল্প

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন বিষয়ক একটি খুদে গল্প  টি। যদি তোমাদের আজকের এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন বিষয়ক একটি খুদে গল্প  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ