উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা জেনে নিবো। তোমরা যদি উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা  টি।

উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা
উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা

উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা

ভূমিকা: বিজ্ঞানকে মানবকল্যাণে প্রয়োগ করার কৌশল হচ্ছে প্রযুক্তি। মানুষ প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে প্রযুক্তির উন্নতি সাধন করছে। মানবজীবন বিকাশের যথার্থ উপায় এখন প্রযুক্তিবিদ্যা। তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বের সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মূল হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত। জ্ঞান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ব পরিমণ্ডলে নিজ অবস্থান সুদৃঢ় করতে এবং একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির বিকল্প নেই। দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে মহাকাশ গবেষণা পর্যন্ত সকল কাজকর্মে তথ্য প্রযুক্তির বিজয় ঘোষিত হচ্ছে। আমাদের জাতীয় উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা ও গুরুত্ব অনেক। জাতীয় উন্নয়নের নানা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। 

তথ্যপ্রযুক্তি ও জাতীয় উন্নয়নের ধারণা: তথ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবস্থাপনা এবং সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতির সমন্বিত ও সুবিন্যস্ত রূপকে তথ্যপ্রযুক্তি বলে। ব্যাপক অর্থে কম্পিউটার, মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স, টেলিকমিউনিকেশন ইত্যাদি বিষয় তথ্যপ্রযুক্তির মধ্যে পড়ে। এছাড়া ডাটাবেজ, সফটওয়্যার উন্নয়ন ইত্যাদি তথ্যপ্রযুক্তির অন্তর্গত। সাধারণ অর্থে টেলিফোন, ফ্যাক্স, টেলেক্স, ইন্টারনেট ইত্যাদিকে তথ্যপ্রযুক্তি বলে ।

জাতীয় উন্নয়ন বলতে বোঝায় সামগ্রিক উন্নয়ন। অর্থাৎ জাতীয়ভাবে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক উন্নয়ন। এ দেশে বিগত এক যুগে তথ্যপ্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটেছে। এখনকার তরুণ প্রজন্ম তথা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির ফলে জাতীয়ভাবে আয় বাড়ছে । জ্ঞান-বিজ্ঞান সমৃদ্ধ হচ্ছে । 

তথ্যপ্রযুক্তি ও বাংলাদেশ: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম প্রতিশ্রুতি এদেশকে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' হিসেবে গড়ে তোলা। “ডিজিটাল বাংলাদেশ' ধারণার মূলভিত্তিই হলো তথ্যপ্রযুক্তি। সরকার তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যেমন—

দেশের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য প্রায় সারা দেশকে ডিজিটাল টেলিফোন ও ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা: তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে শিক্ষার মান বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা এখন কম্পিউটারেই শিখতে পারছে পাঠসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো। তাছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন বিখ্যাত লাইব্রেরির বই, বিখ্যাত শহর-বন্দর, দেশ ইত্যাদি সম্পর্কে মুহূর্তেই সংগ্রহ করতে পারছে বিভিন্ন উপাত্ত ।

টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন: শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা তথ্যপ্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে। টেলিনেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, টেলিযোগাযোগের ব্যয় কমানো, জরুরি ডাকব্যবস্থা, রেলস্টেশন, অপটিক্যাল ফাইবার, ব্যাকবোনের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা ইত্যাদি সবই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সম্ভব ।

শিল্প ও অর্থনীতি: সফটওয়্যারের মূল্য হ্রাস, ই-কমার্সভিত্তিক ব্যাংক স্থাপন ইত্যাদি সকল কাজ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে করা যায় । তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা: সুদক্ষ ব্যাংকিং ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। আর এই ব্যাংকিং খাতকে দক্ষ, যুগোপযোগী ও আধুনিক করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুকরণের বিকল্প নেই।

যাতায়াত ও পরিবহন ব্যবস্থা: তথ্যপ্রযুক্তির ফলে যাতায়াত ও পরিবহন ব্যবস্থার অনেক উন্নতি সম্ভব। একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এখন আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা পাই। বিমান, রেলের টিকিট ব্যবস্থাপনা বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।

আত্ম-কর্মসংস্থান: তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং, সাইবার ক্যাফে, ফোন ও রিচার্জসহ নানা ধরনের কাজে অনেকের স্বাধীন ব্যবসায়ের সুযোগ হয়েছে ।

ব্যবসায় ক্ষেত্রে: তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে নানা উন্নয়ন সাধন হয়েছে। ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে। বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্যের মূল ভিত্তিই তথ্যপ্রযুক্তি। তথ্য আদান- প্রদানের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় সহজ হয়েছে।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে: তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে। রোগ নির্ণয় থেকে সার্জারি পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ব্যবহার বিপ্লব নিয়ে এসেছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে। ট. পর্যটন ক্ষেত্রে: বিদেশি পর্যটকেরা এখন তাদের দেশ থেকেই আমাদের দেশের পর্যটন সম্পর্কিত তথ্য পেতে পারে। আমরাও জানতে পারছি সারা বিশ্বের পর্যটন ও এ-সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেই আমাদের সুন্দরবন ও কক্সবাজারকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার সুযোগ হয়েছে।

সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নে: সমাজ সচেতনতা ও সার্বিক সম্পর্ক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে যেমন দেশের মানুষের সমস্যা ও দুর্ভোগের কথা জানা যায়, তেমনি দেশি-বিদেশিদের সাথে সুসম্পর্কও গড়ে তোলা যায়। ফেইসবুক, টুইটার, লিংকড ইন প্রভৃতি সাইট সামাজিক যোগাযোগে অভূতপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

গবেষণা ক্ষেত্রে: বিভিন্ন গবেষণার জন্য এখন আর গবেষকদের দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। দেশেই তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য তাঁরা পেয়ে যান তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ।

মানবসম্পদ উন্নয়নে: দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ছাড়া কোনো অবস্থাতেই দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি নানা ভূমিকা পালন করে।

উপসংহার: বর্তমান বিশ্বে যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, তাদের সার্বিক অবস্থাও তত বেশি উন্নত। তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে মূল্যবান ইস্যু। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগ ঘটেনি। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষার উন্নয়ন, চিকিৎসার উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বেকারত্ব দূর করার জন্য আমাদের নানা পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। সকলের প্রচেষ্টার মাধ্যমেই বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির সফল বাস্তবায়ন ঘটবে ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা  টি। যদি তোমাদের আজকের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ