১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন কেন হয়েছিল

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন কেন হয়েছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন কেন হয়েছিল।

১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন কেন হয়েছিল
১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন কেন হয়েছিল

১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন কেন হয়েছিল

  • ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায় আলোচনা কর ।
  • অথবা, ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন সম্বন্ধে যা জান লিখ। 
  • অথবা, ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন কিভাবে হয়েছিল? আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনের প্রস্তুতি ১৯৬১ সালের গোড়ার দিকে শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে তা চূড়ান্তরূপ লাভ করে প্রথম থেকেই ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে। ছাত্ররা বিভিন্ন স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। আর এ ছাত্র আন্দোলনে অনেক ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনও অংশগ্রহণ করেন। ছাত্রলীগ, সিপিবিসহ অনেক ছাত্র সংগঠন অংশগ্রহণ করে। আর পাকিস্তান বাহিনী ছাত্র শিক্ষকদের উপর আক্রমণ চালায়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়।

১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায় : ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনের পরোক্ষ প্রস্তুতি চলতে থাকে ১৯৬১ সালের গোড়ার দিকে ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপনকে কেন্দ্র করে। এ | পর্বে মুখ্য ভূমিকা পালন করে ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগ। এদিকে সামরিক সরকার ছাত্র সংগঠনগুলোর গতিবিধি লক্ষ রাখার জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে এবং এদের রিপোর্ট অনুযায়ী পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর আযম খান ছাত্র রাজনীতিকে শয়তানের জনক বলে আখ্যা দেয়। আবার কেন্দ্রীয় সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ছাত্রদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার প্রতিক্রিয়াশীল নীতি ঘোষণা করে। যেমন- রাজনীতির সাথে জড়িত মেধাবী ছাত্রদের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি চাকরি, সশস্ত্র বাহিনীতে কমিশন লাভ এবং আন্তর্জাতিক বৃত্তি লাভের অযোগ্য বলে ঘোষণা দেয়। সরকারের এ ধরনের ঘোষণায় ছাত্র সমাজ ভীত না হয়ে, বরং সরকার বিরোধী কঠোর আন্দোলনে মনোযোগ- দেন। একটি গোপন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যেকোনো কিছুর বিনিময়ে সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং পরবর্তী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকেই তা শুরু হয়। কিন্তু এর আগেই ৩০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দীর গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশিত হলে দাবানলের মতো চারদিকে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৬২ সালের এ আন্দোলন তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল। নিম্নে তা বিস্তারিত আলোচনা পেশ করা হলো :

→ ১ম পর্যায় : সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন : ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনের প্রথম পর্যায় ছিল সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন । নিম্নে তা দেওয়া হলো :-

১. আন্দোলনের প্রথম পর্যায় শুরু : ১৯৬২ সালের ২৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতা আতাউর রহমানের বাসভবনে সরকার বিরোধী এক গোপন বৈঠকে মিলিত হয়। ৩০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী করাচি সফরে গেলে তাকে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সংবাদ পরদিন পূর্ব পাকিস্তানের পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে এ অঞ্চলের ছাত্র সমাজ সরকার বিরোধী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এবং এর মধ্যদিয়ে আন্দোলনের প্রথম পর্যায় সূচনা হয় ।

২. সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড : প্রতিবাদস্বরূপ ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের নেতারা ৩১ জানুয়ারি গভীর রাতে মধুর ক্যান্টিনে এক বৈঠকে মিলিত হয় এবং পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়। ধর্মঘটের সংবাদ পত্রিকায় ছাপানো না হওয়ায় ২ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবে যায় এবং সরকারি পত্রিকায় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। ৩ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মঞ্জুর কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সফরে আসলে ছাত্ররা তাঁকে নাজেহাল করে। ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দেয়ালগুলো সামরিক সরকার বিরোধী লেখায় ভরে যায় ।

৩. আন্দোলন বেগবান : ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন মিছিল বের করে এবং উত্তেজিত ছাত্ররা পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী স্বয়ং আইয়ুব খানকেই ঘেরাও করার কর্মসূচি দেওয়া হয়। ফলে ৭-৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকায় ব্যাপক পুলিশি নির্যাতন চলতে থাকে এবং এ সময়ের মধ্যে প্রায় ২২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর প্রতিবাদে পূর্ব বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও আন্দোলন প্রবল আকার ধারণ করে। মার্চ মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুললে আবার আন্দোলন শুরু হয়। ১৫ মার্চ থেকে অব্যাহতভাবে ধর্মঘট চলতে থাকে। এ সময় ডাকসুর সহসভাপতি রফিকুল হক ও ছাত্র ইউনিয়ন নেতা হায়দার আকবর খান প্রমুখ নেতাসহ বহু ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে জেলে বন্দি করা হয়।

→ দ্বিতীয় পর্যায় : শাসনতন্ত্র বিরোধী আন্দোলন : ছাত্রদের গণআন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল শাসনতন্ত্র বিরোধী আন্দোলন। নিম্নে প্রশ্নগুলোকে আলোচনা করা হলো :

১. গণতন্ত্রের উৎখাত : ১৯৬২ সালের আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্বের সূচনা ঘটে আইয়ুব খান কর্তৃক প্রণীত শাসনতন্ত্রকে কেন্দ্ৰ করে। আইয়ুব খান ১৯৬৮ সালে জানুয়ারি মাসে মৌলিক গণতন্ত্রের নির্বাচন শেষে ১৫ ফেব্রুয়ারি ৯৫.৬ শতাংশ মৌলিক গণতন্ত্রীদের আস্থা ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর দু'দিন পর পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনার জন্য 'ব্যুরো অব ন্যাশনাল রিকনট্রাকশন' নামক একটি কমিশন গঠন করেন। কমিশন ৬২ সালের ২৮ এপ্রিল জাতীয় পরিষদের এবং ৬ মে প্রাদেশিক পরিষদের পরোক্ষ নির্বাচনের সুপারিশ করেন। কমিশন আইয়ুব খানের সাংবিধানিক পরিকল্পনা সম্বলিত একটি পুঞ্জিকা প্রকাশ করে। এতে ব্রিটিশ পদ্ধতির পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র পাকিস্তান প্রযোজ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়। রাষ্ট্র ও সমাজের কল্যাণার্থে প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার সুপারিশ করা হয়। প্রস্তাবিত সংবিধানে প্রাপ্ত বয়স্কদের সার্বজনীন ভোটাধিকারের পরিবর্তে নিয়ন্ত্রিত ভোটাধিকারের কথা বলা হয় এবং ভোটারদের যোগ্যতা হিসেবেও সম্পদের বিধান রাখা হয় ।

২. দ্বিতীয় দফা আন্দোলন : আইয়ুব খানের শাসনতান্ত্রিক পরিকল্পনা, জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদের পরোক্ষ নির্বাচন ঘোষিত হলে পূর্ব বাংলার ছাত্র সমাজ পুনরায় আন্দোলনের ডাক দেয়। ছাত্রদের নির্বাচন বিরোধী আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগ ও ন্যাপ নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকে । নির্বাচন শেষে আন্দোলনরত ছাত্ররা জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নিকট বিবৃতির মাধ্যমে ১৫ দফা দাবি উত্থাপন করে। এর মধ্যে প্রধান দাবিগুলো ছিল সকল রাজনৈতিক বন্দির মুক্তি দান, গ্রেপ্তারি পরওয়ানা প্রত্যাহার, সামরিক আদালতে সাজাপ্রাপ্ত = ব্যক্তিদের মুক্তির রাজনৈতিক কর্মী ও বন্দিদের সম্পত্তি ঐ বাজেয়াপ্তকরণের আদেশ প্রত্যাহার, রাজনৈতিক নেতাদের ওপর

আরোপিত PODO কালাকানুন প্রত্যাহার, বাক-স্বাধীনতা সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা প্রদানসহ ছাত্রদের স্বার্থ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত দাবি। ছাত্রদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে

সরকার বিরোধী গ্রুপ নিজেদের ৮ দফা নীতিমালা গ্রহণ করে। পাকিস্তানের নয় জন বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা তার শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেন। তাছাড়াও বুদ্ধিজীবী, শিক্ষকসহ অন্যরাও ছাত্রদের সমর্থন দেন। এদিকে মোনায়েম খান রাজবন্দিদের দেশদ্রোহী বলে আখ্যা দেন এবং তাদের মুক্তি না দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান। মোনায়েম খান কয়েক দিনের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হয়ে ছাত্রদের উপর ব্যাপক দমননীতি চালিয়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন ।

→ তৃতীয় পর্যায় : শরীফ কমিশন বিরোধী আন্দোলন : আগস্ট মাস থেকে ছাত্র আন্দোলনের গতি পাল্টে যায় তারা শরীফ কমিশন বিরোধী আন্দোলন শুরু করে।

১. শরীফ কমিশনের বিরোধিতা : আগস্ট মাস থেকে আন্দোলন তুমুলভাবে শুরু হয় শরীফ কমিশনের শিক্ষা সংক্রান্ত রিপোর্টকে কেন্দ্র করে। আইয়ুব খান ক্ষমতায় এসে ১৯৫৮ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক শিক্ষা সচিব ড. এস.এম শরীফকে চেয়ারম্যান করে একটি কমিশন গঠন করে এবং পাকিস্তানের পরবর্তী শিক্ষানীতি কি হবে এ সম্পর্কে একটি পরিকল্পনা প্রণয়নের দায়িত্ব প্রদান করেন। ১৯৫৯ সালের আগস্ট মাসে কমিশনের রিপোর্ট সরকারকে হস্তান্তর করে ১৯৬২ সালে তা প্রকাশিত হয়। কমিশনের রিপোর্টে পাকিস্তানে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলাভাষার পরিপূর্ণ স্বীকৃতি প্রদান করা হলেও ষষ্ট থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত ইংরেজিকে বাধ্যতামূলক, উর্দুকে সার্বজনীন ভাষায় রূপান্তর, উর্দু ও বাংলা ভাষায় সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্ঠতর করার প্রয়োজনীয়তার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। রিপোর্ট প্রকাশের আগেই কিছু নীতি কার্যকর হওয়ার ফলে ছাত্র সমাজের মধ্যে বিশেষ করে কলেজ ছাত্রদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে রাখা হয়। শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় ।

২. আন্দোলন প্রক্রিয়া সর্বপ্রথম ঢাকার জগন্নাথ কলেজ (বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়), ঢাকা কলেজ, থেকে আন্দোলনের সূচনা হয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের মেডিকেল স্কুল কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা আন্দোলনের ডাক দেয়। ১০ আগস্ট ঢাকা কলেজের ক্যান্টিনে স্নাতক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির ছাত্ররা এক সমাবেশে মিলিত হয়ে ১৫ আগস্ট দেশব্যাপী ধর্মঘটের এবং ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয় অবস্থান ধর্মঘটের ডাক দেয়। ১৫ আগস্ট দেশব্যাপী ধর্মঘট পালিত হয় এবং ঐদিন থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ১০ আগস্ট পূর্ব পাকিস্তান সরকার ১৪৪ ধারা জারি করলে ছাত্ররা ১৭ সেপ্টেম্বর হরতাল এর ডাক দেয়। এদিকে ১০ সেপ্টেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে মুক্তি প্রদান করে। সরকার তার মুক্তি প্রদান সম্পর্কে কটাক্ষ করলে ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্ররা রাস্তায় পিকেটিং শুরু করে। ওই দিন ছাত্রদের সঙ্গে পূর্ব বাংলার ব্যবসায়ী সমিতি, কর্মচারী সমিতি, রিকশা ইউনিয়ন শ্রমিক ইউনিয়ন প্রভৃতি সংগঠন যোগদান করে। সরকার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করার জন্য পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ নির্যাতনে কয়েক জন ছাত্র নিহত ও আহত হয়। কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে যশোর চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের নির্যাতনে বহু ছাত্র আহত ও গ্রেপ্তার হয়। দিন দিন পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক অভ্যুত্থান ঘটে। ঘটনার ক্রমাবনতি লক্ষ করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর গোলাম ফারুকের সাথে কয়েক দফা বৈঠকে মিলিত হয়। তারই পরামর্শক্রমে ছাত্র অভ্যুত্থানের তৃতীয় দিনের মধ্যে সরকার শরীফ শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের আদেশ স্থগিত ঘোষণা করে। এরই সঙ্গে এর উদ্ভট সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ১৯৬৩ সালের জন্য যে সকল ছাত্র স্নাতক পরীক্ষার্থী ছিল তাদের পরীক্ষা ব্যতীত ডিগ্রি প্রদান করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে ছাত্র আন্দোলন ক্রমে স্থগিত হয়ে পড়ে। আর এভাবেই ছাত্র আন্দোলনের তৃতীয় পর্যায়ে সমাপ্ত হয়। তারা মনে করেছিলেন।

এটা পূর্ব পাকিস্তানিদের উপর চাপিয়ে দেওয়া সহজ হবে। শরীফ কমিশনের, উদ্ভট রিপোর্টের কারণে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুরুতে দেখা যায় ডিগ্রি প্রথম বর্ষ থেকে শতকরা ৫০% নম্বর এবং প্রতি বিষয়ে কমপক্ষে ৪০% নম্বর অর্জন করে খুব কমসংখ্যক ছাত্রই কৃতকার্য হতে পেরেছে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনের তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল। আর ছাত্র আন্দোলনে ছাত্ররা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়াস চালায়। এর জন্য সরকার বিরোধী তৎপরতা ছাত্ররা আরো বেশি চালাতে থাকে। ১৯৬৩ সালে সলিমুল্লাহ হলে একদল ছাত্র মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ছবি সংসদ ও কার্যালয় থেকে অপসারণ করে। আবার কায়েদে আজম কলেজ, সলিমুল্লাহ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ অনেক দিন বন্ধ থাকে। ছাত্রদের এ আন্দোলনে সবচেয়ে ভয়ানক আচরণ করেছিল পাকিস্তানের পেটোয়াবাহিনী তারপরে ছাত্ররা তাদের ধর্মঘট, অবরোধ হরতালসহ নিয়মিত কর্মসূচি চালিয়ে যায় অবশেষে তারা সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন কেন হয়েছিল

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন কেন হয়েছিল । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ