অসহযোগ আন্দোলন বলতে কি বুঝায় | অসহযোগ আন্দোলন কি ব্যাখ্যা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো অসহযোগ আন্দোলন বলতে কি বুঝায় | অসহযোগ আন্দোলন কি ব্যাখ্যা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের অসহযোগ আন্দোলন কাকে বলে ।
অসহযোগ আন্দোলন বলতে কি বুঝায় অসহযোগ আন্দোলন কি ব্যাখ্যা কর |
অসহযোগ আন্দোলন বলতে কি বুঝায় | অসহযোগ আন্দোলন কি ব্যাখ্যা কর
- অসহযোগ আন্দোলন কী?
- অথবা, অসহযোগ আন্দোলনের সংজ্ঞা দাও ।
- অথবা, অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।
- অথবা, শেখ মুজিব পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে কী আনা
উত্তর : ভূমিকা : স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে অসহযোগ আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালিরা যে স্বপ্ন দেখেছিল পাকিস্তান শাসকদের চক্রান্তের ফলে সে স্বপ্ন পূরণ হতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ হতে ২৫ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের সূচনা পর্ব হিসেবে পরিগণিত।
শেখ মুজিব কর্তৃক পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন : ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার ক্ষেত্রে সামরিক সরকারের গড়িমসির প্রেক্ষিতে অসহযোগ আন্দোলনের সূত্রপাত। শেখ মুজিব কর্তৃক পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
১৯৭০ নির্বাচনের পর থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত চলমান অসহযোগ আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের মুক্তি | সংগ্রামের প্রথম পর্ব। নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে আওয়ামী | লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের গড়িমসি ও প্রতারণা, পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতি জুলফিকার আলী ভুট্টোর সহযোগিতা ছিল এ অসহযোগ আন্দোলনের প্রধান কারণ। ফলে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতামূলক কর্মসূচির ঘোষণা দেন যা অসহযোগ আন্দোলন নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালের মার্চের প্রথম থেকেই আন্দোলন জোরদার হতে থাকে। আর ৭ মার্চ শেখ মুজিবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পরদিন থেকে দেশে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। নেতার নির্দেশ অনুযায়ী দেশের স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, কল-কারখানা সব বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ জনতা পাকবাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধ করতে থাকে। খাজনা ট্যাক্স আদায় বন্ধ হয়ে যায়। ইয়াহিয়া খান পরিস্থিতির পূর্বানুমান করতে পেরে ৭ মার্চ জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গর্ভনর করে পাঠান।
১০ মার্চ সরকার এক সামরিক আদেশ জারি করে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীকে কর্মসংস্থানে যোগ দেয়ার নির্দেশ দিলেও অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত থাকে। ১৩ মার্চ সরকার পুনরায় সামরিক আইন জারি করে ১৪ মার্চ শেখ মুজিব অসহযোগ আন্দোলনকে জোরদার করার জন্য ৩৫ দফা ভিত্তিক এক নির্দেশ জারি করেন। এতে বলা হয়-
১. সরকারি বিভাগসমূহ, হাইকোর্ট, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাসমূহ পূর্বের মতোই বন্ধ থাকবে।
২. বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ থাকবে।
৩. জেলা প্রশাসক ও মহকুমা প্রশাসকগণের অফিস বন্ধ থাকবে ।
৪. পুলিশ বিভাগ অনুরূপ কাজ পরিচালনা করবেন।
৫. কর খাজনা বন্ধ থাকবে বঙ্গবন্ধু এ ঘোষণার পর অসহযোগ আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষেত্রের পাশাপাশি বেসামরিক কর্মপ্রক্রিয়া শুরু হয়। এভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিটি ক্ষেত্রে সামরিক সরকার, অসহযোগিতার সম্মুীখন হতে থাকে। ইতিহাসে এ আন্দোলন অসহযোগ আন্দোলন নামে পরিচিত। ২৫ মার্চ পর্যন্ত এ অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি চলমান ছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে অসহযোগ আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় । ১৯৭০ সালের নির্বাচনের বাঙালিরা যে স্বপ্ন দেখেছিল পাকিস্তানি শাসকদের চক্রান্তের ফলে সে স্বপ্ন পূরণ হতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য অসহযোগ আন্দলনের ডাক দেন। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ হতে ২৫ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বে পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের সূচনা পর্ব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ১৯৭১ সালে পাক সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতামূলক আন্দোলন পরিচালনা করেছিলেন যা ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্ব।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ অসহযোগ আন্দোলন বলতে কি বুঝায় | অসহযোগ আন্দোলন কি ব্যাখ্যা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম অসহযোগ আন্দোলন কাকে বলে । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।