মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরের নাম | মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কয়টি ও কি কি

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরের নাম | মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কয়টি ও কি কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরের নাম | মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কয়টি ও কি কি ।

মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরের নাম  মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কয়টি ও কি কি
মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরের নাম  মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কয়টি ও কি কি

মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরের নাম | মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কয়টি ও কি কি

  • বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ১১টি সেক্টর সম্পর্কে আলোচনা কর
  • অথবা, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরসমূহ সংক্ষেপে বিবরণ দাও । 

উত্তর : ভূমিকা : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর থেকেই ঢাকা শহরসহ বাংলাদশের প্রায় প্রতিটি জেলা শহরে ই.পি.আর, আনসার, ছাত্র, শ্রমিক বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী এবং সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারীদের সমন্বয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে উঠে। 

কিন্তু অতর্কিত আক্রমণের মুখে যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল তা সুপরিকল্পিত ছিল না এবং কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিতও ছিল না। তাই ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগরে অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার গঠিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ চলেছিল স্বতঃস্ফূর্ত ও বিক্ষিপ্তভাবে। এরপর পেশাদার সৈন্যদের নিয়ে নিয়মিত, স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনী গঠিত হয়।

→ মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরসমূহের বর্ণনা : নিম্নে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সামরিক সংগঠনসমূহের বিবরণ দেয়া হলো :

১. নম্বর সেক্টর : চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ফেনী (ফেনী নদী পর্যন্ত)। ১৯৭১ সালের জুন মাস পর্যন্ত এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান। এরপর এ সেক্টরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ক্যাপ্টেন (পরে মেজর) মোহাম্মদ রফিক।

২. নম্বর সেক্টর : নোয়াখালী জেলা, আখাউড়া-ভৌরব রেলাইন পর্যন্ত কুমিল্লা জেলা, ঢাকা জেলার ঢাকা এবং ফরিদপুর জেলার কিছু অংশ। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর খালেদ মোশাররফ, পরে এখানকার দায়িত্ব গ্রহণ করেন মেজর এ.টি.এম. হায়দার।

৩. নম্বর সেক্টর : আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন থেকে পূর্বদিকে কুমিল্লা জেলা, সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমা, ঢাকা জেলার কিছু অংশ এবং মহয়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমা। মেজর কে. এম. শফিউল্লাহ ছিলেন এ সেক্টরের কমান্ডার, পরে মেজর এ. এন. এম. নুরুজ্জামান এ সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত হন।

৪. নম্বর সেক্টর : সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল, খোয়াই, শায়েস্ত াগঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট-ডাউকি সড়ক পর্যন্ত । এই সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর সি আর দত্ত (এপ্রিল থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত)।

৪. নম্বর সেক্টর : সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল, খোয়াই, শায়েস্ত 1গঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট-ডাউকি সড়ক পর্যন্ত । এই সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর সি আর দত্ত (এপ্রিল থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত)।

৫. নম্বর সেক্টর : সিলেট জেলার পশ্চিমাঞ্চল, সিলেট- ডাউকি সড়ক থেকে সুনামগঞ্জ-ময়মনসিংহ জেলার সীমান্ত পর্যন্ত । মেজর মীর শতকত আলী এ সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন ।

৬. নম্বর সেক্টর : রংপুর জেলা এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁও মহকুমা পর্যন্ত (পরে যুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার্থে রংপুর জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের অঞ্চল ১১ নম্বর সেক্টরের অধীনে আনা হয়। এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন উইং কমান্ডার এম.কে. বাশার ।

৭. নম্বর সেক্টর : দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল, রাজশাহী, পাবনা ও বগুড়া। মেজর কাজি নুরুজ্জামান ছিলেন এ সেক্টরের কমান্ডার।

৮. নম্বর সেক্টর : কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুরের অধিকাংশ এবং খুলনা জেলার দৌলতপুর, সাতক্ষীরা সড়ক পর্যন্ত। মেজর আবু ওসমান চৌধুরী আগস্ট মাস পর্যন্ত এ সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন। পরে মেজর এম. এ. মঞ্জুরের উপর এ সেক্টরের দায়িত্ব দেয়া হয় ।

৯. নম্বর সেক্টর : দৌলতপুর- সাতক্ষীরা সড়ক থেকে খুলনা জেলার দক্ষিণাঞ্চল, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা।

মেজর এম. এ জলিল ডিসেম্বর মাসের শুরু পর্যন্ত এ সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন। ডিসেম্বরের চূড়ান্ত যুদ্ধের শেষ কয়দিন মেজর জয়নাল আবেদীনকে এ সেক্টরের দায়িত্ব দেয়া হয় ।

১০. নম্বর সেক্টর : নৌ কমান্ডো সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পথ। নৌ-কমান্ডরা বিভিন্ন সেক্টরে নির্দিষ্ট মিশনে নিয়োজিত থাকা কালে সেক্টর কমান্ডারদের অধীনে কাজ করতেন ।

১১. নম্বর সেক্টর : কিশোরগঞ্জ মহকুমা বাদে ময়মনসিংহ জেলা এবং টাঙ্গাইল জেলা। মেজর আবু তাহের এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। নভেম্বর মাসে তিনি গুরুতরভাবে আহত হলে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম, হামিদউল্লাহ এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুজিবনগর সরকার ১১টি সেক্টরে বাংলাদেশের রণাঙ্গনকে ভাগ করে প্রত্যেকটির একজন করে সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত করে। 

যদিও ১০ নম্বর সেক্টরে স্থায়ী কোনো সেক্টর কমান্ডার ছিল না। সেক্টর কমান্ডারদের নেতৃত্বে প্রত্যেকটি সেক্টরে নিয়োজিত যোদ্ধারা তাদের জীবন বাজি রেখে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরের নাম | মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কয়টি ও কি কি

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরের নাম | মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কয়টি ও কি কি । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ