মুয়াবিয়ার পরিচয় দাও

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুয়াবিয়ার পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুয়াবিয়ার পরিচয় দাও  টি।

মুয়াবিয়ার পরিচয় দাও
মুয়াবিয়ার পরিচয় দাও

মুয়াবিয়ার পরিচয় দাও

উত্তর : ভূমিকা : মুয়াবিয়া (রা.) ৬৬১ খ্রি. ইসলামি খিলাফতে আরোহণ করে রাজতন্ত্রের সূচনা করেন। তিনি দক্ষতা, চাতুরতা, সাহসিকতা প্রভৃতি গুণের মাধ্যমে উমাইয়া বংশ সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। ঐতিহাসিক পি, কে হিট্টি বলেন, “মুয়াবিয়া কেবল নতুন এক সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতাই ছিলেন না। হজরত ওমর (রা.)- এর পরে খিলাফতের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন।”

→ মুয়াবিয়া (রা.)-এর পরিচয় : উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মুয়াবিয়া (রা.) চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। নিম্নে মুয়াবিয়ার পরিচয় তুলে ধরা হলো :

১. জন্ম ও বংশ পরিচয় : কুরাইশ বংশের উমাইয়া গোত্রে ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে মুয়াবিয়া জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন উমাইয়া দলপতি এবং কাবার রক্ষক আবু সুফিয়ান। তাঁর মাতা ছিলেন হৃদয়হীনা হিন্দা। রাসূল-এর চাচা আমীর হামজা উহুদের যুদ্ধে নিহত হলে তার হৃৎপিণ্ড ভক্ষণ করেন। ইসলামের চরম শত্রু আবু সুফিয়ানের পুত্র মুয়াবিয়াও রাসূলের তীব্র বিরোধিতা করেন। ৬৩০ খ্রি. মক্কা বিজয়ের পর তিনি তার পিতার সঙ্গে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ইসলামের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।

২. ইসলাম ধর্ম গ্রহণ : মুয়াবিয়া (রা.) ইসলাম গ্রহণের পূর্বে অনেক বার আবু সুফিয়ানের সাথে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। অবশেষে ৬৩০ (খ্রি.) মক্কা বিজয়ের সময় আবু সুফিয়ান মহানবি (সা.)-এর নিকট আত্মসমর্পণ করলে আবু সুফিয়ানের পুত্র মুয়াবিয়াও পিতার সাথে আত্মসমর্পণ করেন। এবং পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। মহানবি (সা.) তাঁকে ওহী লেখার জন্য ব্যক্তিগত সহকারী নিযুক্ত করেন। তার ভগ্নি উম্মে হাবিবার সাথে মহানবির বিবাহ সম্পাদিত হলে উভয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা হয়।

৩. সিরিয়ার শাসনকর্তা : হজরত ওমর (রা.)-এর খিলাফতে সিরিয়ার শাসনকর্তা নিযুক্তির পর হতে মুয়াবিয়ার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় । তার ভ্রাতা ইয়াজিদের মৃত্যুর পর খলিফা ওমর (রা.) তাঁকে সিরিয়া প্রদেশের প্রশাসক নিযুক্ত করেন। কর্ম দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও সাংগঠনিক ক্ষমতার বলে তিনি সমগ্র সিরিয়ায় সুশাসন কায়েম করেন ও বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তিনি নির্ভীকতা ও সামরিক দক্ষতার সঙ্গে সিরিয়াকে বাইজান্টাইন আক্রমণ হতে রক্ষা করতে সমর্থ হন। তিনি খলিফা ওসমানের সময়ে সর্বপ্রথম একটি ক্ষুদ্র নৌবাহিনী গঠন করেন। তার সুযোগ্য নেতৃত্বের ফলে মুসলমানরা সাইপ্রাস ও রোডস দ্বীপ দখল করেন।

৪. সিংহাসনে আরোহণ : ৬৬১ খ্রি. ইমাম হাসানকে খিলাফতের ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত করে মুয়াবিয়া ইসলামি সাম্রাজ্য তথা দামেস্কের সিংহাসনে আরোহণ করেন। মুইর বলেন, মুয়াবিয়ার দামেস্কের সিংহাসনে আরোহণ খিলাফতের সমাপ্তি এবং রাজতন্ত্রের সূচনা করে। মুয়াবিয়া (রা.) ছিলেন অভিজ্ঞ শাসক, সুনিপুণ কূটনীতিবিদ, নির্ভীক যোদ্ধা। ক্ষমতা লাভ করে দামেস্কে রাজধানী স্থাপন করেন। তিনি খারিজিদের বিদ্রোহ দমন এবং মুদারীয় ও হিমারীয়দের বিরোধ মীমাংসা করে কৃতিত্বের পরিচয় দেন।

৫. দামেস্কে রাজধানী স্থাপন : সিংহাসনে আরোহণ করেই মুয়াবিয়া উমাইয়া পতিপত্তির প্রাণকেন্দ্র প্রাদেশিক রাজধানী দামেস্কে ইসলামি সাম্রাজ্যের কেন্দ্রীয় রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেন। মুয়াবিয়া দামেস্কে রাজধানী প্রতিষ্ঠা সিরিয়া ও মিসরে শাসনকার্য পরিচালনা করেন।

৬. মৃত্যু : মুয়াবিয়া ৬৮০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি সুদীর্ঘ ২০ বছর সমগ্র মুসলিম বিশ্বের শাসনকার্য পরিচালনা করেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, তিনি উমাইয়া বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন। তিনি সর্ব প্রথম নৌবাহিনী এবং ডাক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে উমাইয়া বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক হিসেবে পরিগণিত হন। তিনি সাম্রাজ্যের সকল বিদ্রোহ দমন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। ঐতিহাসিক পি.কে. হিট্টি বলেন, “বিশৃঙ্খলার | ভিতর হতে মুয়াবিয়া শৃঙ্খলা আনয়ন করেন এবং একটি শান্তিপূর্ণ মুসলিম সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।”

আর্টিকেলের শেষকথাঃ  মুয়াবিয়ার পরিচয় দাও

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুয়াবিয়ার পরিচয় দাও  টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ