নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা | নদীর তীরের দৃশ্য রচনা

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা | নদীর তীরের দৃশ্য রচনা জেনে নিবো। তোমরা যদি নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা | নদীর তীরের দৃশ্য রচনা টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা | নদীর তীরের দৃশ্য রচনা  টি।

নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা | নদীর তীরের দৃশ্য রচনা
নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা | নদীর তীরের দৃশ্য রচনা

নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা 

ভূমিকা: বিশ্বের হাজারো সৌন্দর্যের মধ্যে একটি অন্যতম সৌন্দর্যপূর্ণ মুহূর্ত হলো নদীতীরে সূর্যাস্তের দৃশ্য। কর্মব্যস্ত দিনের আলো মুছে গিয়ে পৃথিবীর বুকে একসময় সন্ধ্যা নেমে আসে। একটি আঁধার ধীরে ধীরে পৃথিবীকে গ্রাস করে ফেলে। দিন ও রাতের মধ্যবর্তী ক্ষণে সূর্যদেব যে অপরূপ সৌন্দর্যদান করে, তা সত্যিই অভাবনীয় । নদীতীরের এ সৌন্দর্য যে না দেখেছে, তার জীবনই যেন বৃথা। সূর্যাস্তের এ সময়টি নিঃসন্দেহে একটি উপভোগ্য সময় । এ সৌন্দর্য আমাদের চিত্তে শিহরণ জাগায় ।

নদী ও বাংলার রূপ: বাংলাদেশ নদীমাতৃক একটি দেশ। অসংখ্য নদীনালা জালের মতো দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে। বিভিন্ন ঋতুতে নদীর রূপ, নদীর জলরাশি, নদীতে চলমান নৌকা, নদী তীরের গাছপালা, দূরের আকাশের পাখি ইত্যাদি সব মিলিয়ে নদী যেন অপরূপ সৌন্দর্যে সজ্জিত থাকে সবসময়। দিনের শেষের গোধূলি লগ্ন নদীর এ সৌন্দর্যকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। সূর্যাস্তের সময় সূর্যের রক্তিম আভা এক বিচিত্র সৌন্দর্যে নদীকে রাঙিয়ে তোলে । নদীর এক অনন্য সুন্দর রূপ পরিলক্ষিত হয় তখন । সূর্যাস্ত মুহূর্তে দেখা নদীটির উভয় তীরের বর্ণনা: মোংলা বন্দরের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে পশুর নদী। নদীর এপারে বিস্তীর্ণ মাঠ বিভিন্ন গাছগাছালিতে পূর্ণ। মাঝে মাঝে ছোট আঁকাবাঁকা রাস্তা আর জাহাজ ভেড়ানোর জেটি। ওপারে বিস্তীর্ণ সুন্দরবনের মনোরম শোভা। অনেক দূরে সুন্দরবনের গাছগুলো ছোট আকারে দেখা যাচ্ছে। নদীতে ছোট-বড় জাহাজ আসা- যাওয়া করছে। এছাড়া সাম্পান, ছোট ছোট জেলে নৌকা নদীবক্ষে বয়ে চলেছে। এপারের বিল্ডিং এবং ছোট ছোট ঘরগুলো দূর থেকে দ্বীপের মতো মনে হয় । কিন্তু নদীর ওপারে শুধুই বন ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না ।

নদীতীরে সূর্যাস্তের শোভা: দিনের রৌদ্রোজ্জ্বল আলো আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে আসে। সূর্যের তাপ কমতে থাকে। তারপর একসময় সূর্য আস্তে আস্তে পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ে। সূর্যের অস্ত রশ্মিপাতে সারা পৃথিবী আগুনবরণ ধারণ করে। নদীর জলে সূর্যরশ্মি ছড়িয়ে সোনালি আর রক্তিম রং মেলে চিকচিক করে। এক রঙিন খেলায় মেতে ওঠে নদীর জল এবং সূর্যের রশ্মি। সূর্যটা যখন নদীতীরে অস্ত যায় তখন মনে হয় যেন সে নদীর জলে ডুব দিচ্ছে। তখন সূর্যটাকে অনেক বড় দেখায়। আকাশের মেঘের ফাঁক দিয়ে এ সূর্যরশ্মি বিকীর্ণ হয়। এক অপরূপ সৌন্দর্যে তখন নদীতীর সৌন্দর্যময় হয়ে ওঠে। দিগন্তজুড়ে লালিমা তখন আকাশের গায়ে আবির মেখে দেয়। আর সেই আবিরের রং লাগে নদীর জলে। ফলে ঝকমক করে ওঠে নদীর জল। রোমান্টিক কবি William Wordsworth এর কবিতা মনে পড়ে যায়—

'The world sleeps romantically On the eve of eventual time, There is hymn

For the world

When it is embelleshed With natural beauties."

সন্ধ্যার শোভা: ধীরে ধীরে সূর্য নদীর জলে ডুবে যায়। পৃথিবীর বুকে নেমে আসে শান্ত সন্ধ্যা। রাস্তাঘাটে, ঘরবাড়িতে আলো জ্বলে ওঠে। চারদিকে জোনাকিরা মিটিমিটি আলো ছড়ায়। নদীর তীরে হিমশীতল হাওয়া বইতে থাকে। ঝিঁঝিঁ পোকা চারদিক থেকে ডাকতে শুরু করে। তখন পশ্চিমাকাশের রক্তিম আভা শেষ হতে না হতেই আকাশে চাঁদ মামা উঁকি দেয়। শেষ হয়ে যায় সন্ধ্যা। শুরু হয় রাতের নিস্তব্ধতা

মনের অবস্থা: সৌন্দর্য ও রহস্যের প্রতি চিরকালই মানুষের দুর্বলতা রয়েছে। তাই সূর্যাস্তের যে সৌন্দর্য ও সন্ধ্যার যে রহস্যময়তা তা চিরকালই মানুষের মনের কোণে গভীর প্রভাব ফেলে। আর এ মুহূর্তটিকে সূর্যাস্তের অপরূপ সৌন্দর্য পৃথিবীকে অন্যরকম রঙে রাঙিয়ে দেয়। তাই এ সৌন্দর্য মানুষকে তীব্রভাবে আকর্ষণ করে। প্রকৃতি যেন সৌন্দর্যের ডালা সাজিয়ে ক্ষণিকের জন্য মানুষের মনকে রাঙিয়ে দিয়ে যায়। নদী তীরের এ সৌন্দর্য দেখে ঘরে ফিরে আসতে কারো মন সায় দেয় না। পৃথিবীর সমস্ত কর্মকোলাহল ভুলে, অতীত-বর্তমান ভুলে সেই সৌন্দর্যের সাথে একাত্ম হয়ে যেতে ইচ্ছে করে, মনে হয়-

“দিনের শেষে ঘুমের দেশে ঘোমটা পরা ঐ ছায়া

ভুলালো যে ভুলালো মোর সব'

উপসংহার: নদীতীরে সূর্যাস্তের শোভা একটি অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। এ শোভা হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়। এ সৌন্দর্য সকল সৌন্দর্য-পিপাসু মানুষের অন্তরে শিহরণ জাগায়। পৃথিবীর এ অপরূপ সৌন্দর্য যে প্রত্যক্ষ করেনি তার জীবন যেন বৃথা। পৃথিবীর এ অনির্বচনীয়-সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে প্রত্যেককেই একবার হলেও নদী তীরের সূর্যাস্তের দৃশ্য অবলোকন করা উচিত ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা | নদীর তীরের দৃশ্য রচনা

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা | নদীর তীরের দৃশ্য রচনা  টি। যদি তোমাদের আজকের এই নদীর তীরে সূর্যাস্ত প্রবন্ধ রচনা | নদীর তীরের দৃশ্য রচনা  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ