খলিফা আল মনসুর ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন। আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো খলিফা আল মনসুর ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন। আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের খলিফা আল মনসুর ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন। আলোচনা কর।

খলিফা আল মনসুর ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন। আলোচনা কর
খলিফা আল মনসুর ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন। আলোচনা কর

খলিফা আল মনসুর ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন। আলোচনা কর

উত্তর ভূমিকা : আবু জাফর আল মনসুর আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ খলিফাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় খলিফা। প্রথম খলিফা আবুল আব্বাস মৃত্যুবরণ করলে তার ভ্রাতা আল মনসুর আব্বাসীয় খিলাফতের শাসনভার গ্রহণ করে তার বংশকে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেন। 

তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম, অদম্য সাহস, দূরদর্শিতা ও কূটনৈতিক বলে অভ্যন্তরীণ ও বাইরের সকল শত্রুকে দমন করেন। তিনি শুধু বিদ্রোহ দমন করেননি, সাম্রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ সমাধা করেন। বিভিন্ন জনহিতকর কার্যাবলি। 

রাজ্য বিস্তার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, সেনাবাহিনী গঠন, গুপ্তচর নিয়োগ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, | স্থাপত্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নয়নে তিনি কৃতিত্বের পরিচয় দেন। এজন্য তাকে মুসলিম সভ্যতার স্বর্ণযুগের স্থপতি বলা হয়। 

অন্যদিকে তিনি আচরণে কঠোর মিতব্যয়ী ও ধর্মভীরু ছিলেন। তাছাড়া তার চরিত্রে কোমলতারও পরিচয় পাওয়া যায়। সার্বিক | বিচারে আব্বাসীয় খিলাফতে আল মনসুরের কৃতিত্ব তাৎপর্যপূর্ণ ।

আল মনসুরের পরিচয় : আল মনসুর ছিলেন আল আব্বাসের ছোট ভাই, মুহাম্মাদ ইবনে আলীর পুত্র। তাছাড়া তিনি মুহাম্মাদ (সা.) এর নিকট আত্মীয়। আবু জাফর আল মনসুর | ছিলেন আব্বাসীয় বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা।

সিংহাসন আরোহণ ও উপাধি গ্রহণ : ৭৫৪ খ্রিস্টাব্দে আবু আব্বাসের মৃত্যুর পর আবু জাফর কুফায় “আল মনসুর বা বিজয়ী উপাধি গ্রহণ করে আব্বাসীয় বংশের ২য় খলিফা হিসেবে সিংহাসন আরোহণ করেন।

→ খলিফা আল মনসুরের কৃতিত্ব ও চরিত্র : খলিফা আল | মনসুর আব্বাসীয় বংশের সুসংহতকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। নিম্নে খলিফা আল মনসুরের কৃতিত্ব ও চরিত্র মূল্যায়ন করা হলো :

১. বিদ্রোহ দমন : আবু আব্বাসের সকল প্রকার নিষ্ঠুরতা সত্ত্বেও আব্বাসীয় সিংহাসন তখনও সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত ছিল না। আল মনসুরের রাজত্বকাল নানা প্রকার বাধাবিরোধ ও বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়। 

তিনি প্রথমে আব্দুল্লাহ বিন আলীর বিদ্রোহ দমন করেন। তাছাড়াও আবু মুসলিমের পতন,রাওয়ানদিয়ার বিদ্রোহ, সানবাদের বিদ্রোহ, মেসোপটেমিয়া খোরাসানের বিদ্রোহ, গ্রিকদের সাথে যুদ্ধ, তাবারিস্তানের বিদ্রোহ, মুহাম্মাদ ও ইব্রাহিমের পরাজয়, আফ্রিকার বিদ্রোহ প্রভৃতি বিদ্রোহ তিনি কঠোর হস্তে দমন করেন। 

তাছাড়াও আর্মেনিয়া, খোরাসান, সিজিস্তান ও হামাদানের বিদ্রোহ দমন করেন। এসব বিদ্রোহ দমন করে সাম্রাজ্যের স্থিতি স্থাপন তার অনবদ্য কীর্তি।

২. তাবারিস্তান, গীলান ও দায়লাম জয় : আল মনসুর নানা প্রকার বিদ্রোহ কঠোর হস্তে দমন করেন। তিনি রাজ্য বিস্তারে মনোযোগ দেন। ইস্পাহেদ্দের নেতৃত্বে তাবারিস্তানের পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীরা মুসলিম সাম্রাজ্যের সীমান্তে নানা প্রকার অত্যাচার ও অবিচার করতো। 

তাই খলিফা এ অত্যাচার দমন করার জন্য পুত্র মাহদিকে প্রেরণ করেন। মাহদি এদের কঠোর দস্তে দমন করে তাবারিস্তান ও গীলান দখল করেন। এর পর মাহদি দায়লামের দিকে অগ্রসর হন ও সেখানকার বিদ্রোহ দমন করে দায়লাম দখল করেন।

৩. কুর্দি, জর্জিয়া ও মসুল জয় : তাঁর সময়ে কুর্দিস্তানের কুর্দি এশিয়ার মাইনরের জর্জিয়া, মসুল প্রভৃতি অঞ্চলের অধিবাসীরা আব্বাসীয় সাম্রাজ্যে গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। খলিফা আল মনসুর তাদেরকে দমনের জন্য খালিদ বিন বার্মাককে সেখানকার শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। 

তিনি এসব অঞ্চলের অধিবাসীদের কঠোর হস্তে দমন করেন। ফলে আব্বাসীয় শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। এসব অঞ্চল জয়ের মধ্য দিয়ে তার কৃতিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়।

৪. স্পেন জয়ের চেষ্টা : খলিফা আল মনসুর স্পেন জয়ের চেষ্টা করেন। তিনি খলিফার নির্দেশে উত্তর আফ্রিকার শাসনকর্তা স্পেনের বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করেন। 

স্পেনের শাসনকর্তা আব্দুর রহমান এ সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেন। তবে স্পেন ও আফ্রিকার কিয়দংশ ব্যতীত প্রায় সমগ্র আরব সাম্রাজ্যে আব্বাসীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

৫. প্রদেশের সীমানা নির্ধারণ : বিভিন্ন রাজ্যজয়ের পর তিনি প্রদেশের সীমানা নির্ধারণ করেন। আল মনসুর প্রত্যেক প্রদেশের সীমানা নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট প্রদেশে রাজস্বের পরিমাণ নির্ধারণ করেন। 

খলিফা নিজ রাজ্যের আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখতেন। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে হিসাবকার্য পরিচালনার জন্য তিনি “আবুদ্দাওয়ানিক” উপধিতে ভূষিত হয়েছিলেন।

৬. গুপ্তচর নিয়োগ : সাম্রাজ্যে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি গুপ্তচর নিয়োগ করেছিলেন। বিভিন্ন প্রাদেশিক দপ্তরের কার্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হচ্ছে কি না। কোনো অঞ্চল শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হচ্ছে কি না, 

প্রাসাদে ষড়যন্ত্রসহ কোনোরূপ রাষ্ট্রবিরোধী কাজ চলছে কি না, তা জানার জন্য গুপ্তচর নিয়োগ করেন। গুপ্তচর বিভাগের সাহায্যে তিনি সাম্রাজ্যের প্রত্যেক স্থানের খবরাখবর অবগত হতেন। ফলে সাম্রাজ্যে বিশৃঙ্খলা হ্রাস পায় ।

 ৭.সৈন্যদল ও পুলিশ বাহিনী গঠন : সাম্রাজ্যের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য তিনি স্থানীয় সৈন্যদল ও পুলিশ বাহিনী গঠন করেন। এ সৈন্যদল ও পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। 

সাম্রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা ও রাজ্য বিস্তারে সৈন্যবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল । তবে এ বাহিনী ছিল নিয়মিত এবং বেতনভুক্ত।

৮. বদলির রীতি প্রবর্তন : শাসনব্যবস্থা সুবিধার জন্য তিনি বদলির ব্যবস্থা করেন। শাসনকার্যে দুর্নীতি ও বিদ্রোহের সম্ভাবনাকে মোকাবিলার জন্য তিনি মূলত এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। 

সৈন্য ও পুলিশ বাহিনীরা যেন স্থানীয় প্রভাব-প্রতিপ্রত্তি বিস্তার না করতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রেখে বদলির ব্যবস্থা করেন। ফলে দুর্নীতি অনেকটা হ্রাস পায় ।

৯. উজির পদ সৃষ্টি : আল মনসুরের সময়েই উজির তন্ত্রের সূত্রপাত হয়। এটা ছিল মূলত পারসিক পদ। কিন্তু তার সময়ে আব্বাসীয় প্রশাসনে যুক্ত হয়। 

খালিদ ইবন বার্মাক ছিলেন এই পদমর্যাদার প্রথম ব্যক্তি। শাসন কার্য পরিচালনার উজির ছিলেন সকল কর্মচারীর শীর্ষে।

১০. ন্যায়বিচার : আল মনসুর ন্যায়বিচারের পক্ষপাতী ছিলেন এবং ন্যায়বিচারের প্রতি তার সুনজর ছিল। প্রদেশ ও কেন্দ্রীয় রাজধানীতে তিনি যথাক্রমে কাজী ও প্রধান কাজী নিয়োগ করেছিলেন। 

তার সময়ে মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান বাগদাদের প্রধান কাজী হিসবে প্রায় ২০ বছর বহাল ছিলেন। খলিফা মনসুর নিষ্ঠুর, বিশ্বাসঘাতক ও স্বেচ্ছাচারী হলেও বিচার ব্যবস্থার প্রতি তার ছিল শ্রদ্ধা। তাই বিচারকের স্বাধীনতাকে তিনি ক্ষুণ্ণ করতেন না ।

১১. জনকল্যাণ : খলিফা আল মনসুর অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ সাধন করেছিলেন জনগণের কল্যাণের জন্য তিনি অনেক সরাইখানা, নগরী, রাস্তাঘাট ও চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করেছিল। 

এ সময়ে কৃষি কার্যের উন্নতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হয়। কূপ ও পয়ঃপ্রণালি খনন এবং মাদরাসাও হাসপাতাল স্থাপন তার কল্যাণকামী রাজত্বকালের পরিচয় বহন করে ।

১২. জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য ও অনুবাদ গ্রন্থ : খলিফা আল মনসুরের সময়ে জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য চর্চা ও গবেষণা শুরু হয়। তার সময়ে বিভিন্ন বিদেশি গ্রন্থ আরবি ভাষায় অনুবাদ হয়। তার আদেশে বিদেশি সাহিত্য ও বিজ্ঞানের গ্রন্থাদি আরবি ভাষায় অনুবাদ করার জন্য একটি বিভাগ খোলা হয়। 

সে যুগে সাহিত্য, গণিত, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যার ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। তার পৃষ্ঠপোষকতায় মুহাম্মাদ বিন আল ফারাজী আরবিতে সংস্কৃতি ভাষায় লিখিত ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্রীয় গ্রন্থ “সিন্ধান্ত” এর অনুবাদ করেন। এছাড়াও “খোবাইনামা' নামক পাহলবী ভাষায় লিখিত পুস্তকটি “সিয়াব উলমূলক আল আজম” নামে আরবি ভাষায় অনুবাদ হয়। 

এ সময়ে এরিস্টটলের গ্রন্থাবলি, টলেমীর আলমাগেস্ত, ইউক্লিড ও অন্যান্য প্রাচীন গ্রিক চিন্তাবিদের রচনাবলি, বাইজেনটাইনীয়, ফারসি ও মিশরীয় গ্রন্থাবলি আরবি ভাষায় অনুদিত হয়।

১৩. বাগদাদ নগর স্থাপন : খলিফা আবু জাফর আল মনসুরের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো বাগদাদ নগরী প্রতিষ্ঠা। প্রশাসনিক কাঠামো সুবিন্যস্ত ও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে তিনি ৭৬২ খ্রিস্টাব্দে দামেস্ক থেকে রাজধানী বাগদাদে স্থানান্তর করেন। 

খালিদ বিন বার্মাকের দায়িত্বে তিনি বাগদাদ নগরী স্থাপন করেন। তিনি প্রায় ১,০০,০০০ জন শ্রমিক ও নির্মাণ শিল্পী দ্বারা দীর্ঘ ৪ বছরে প্রায় ৪৮,৮৩,০০০ দিরহাম ব্যয় করে এ নগরী প্রতিষ্ঠা করেন।

১৪. স্থাপত্য শিল্পে উন্নতি : আল মনসুর স্থাপত্য শিল্পে উন্নয়নে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। বিশ্ববিখ্যাত বাগদাদ নগরী ছাড়াও তিনি “রফীকা” নামক শহর নির্মাণ করেন। 

তার আমলে নির্মিত “বাবুল জাহাব”, “কাসেরুল খুলদ', ও রুসাফা রাজ প্রাসাদগুলো এবং জামে মসজিদে এ যুগের স্থাপত্য শিল্পের উন্নয়নের প্রমাণ দেয় । তিনি মক্কায় একটি রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করেন।

১৫. রাজনৈতিক প্রজ্ঞা : রাজনীতিবিদ হিসেবে আল মনসুর ছিলেন অসামান্য দূরদর্শিতার অধিকারী। তিনি অনুধাবন করেছিলেন যে, এই পৃথিবী ক্ষণস্থায়ী তাই ক্ষমতাও ক্ষণস্থায়ী। সে জন্য তিনি আব্বাসীয় খিলাফতের স্থায়িত্ব বিধানের জন্য খলিফার পবিত্র ক্ষমতার সাথে আধ্যাত্মিকতার সংযোগ সাধন করেন। 

তার পৃষ্ঠপোষকতায় সুন্নি মতবাদের ভিত্তি স্থাপন হয়। হানাফি ও মালেকি মাযহাব গঠনেও তিনি উৎসাহ যোগান। তাই প্রকৃতপক্ষে মনসুর আব্বাসীয় খিলাফতের শাসনতন্ত্রের রচনা করেন ।

১৬. শাসক হিসেবে : খলিফা আল মনসুর যোগ্য, উদ্যমী, বিবেচক, মিতব্যয়ী ও সুদক্ষ শাসক ছিলেন। তিনিই আব্বাসীয় শাসনব্যবস্থার রূপরেখা গড়ে তুলেছেন। খলিফা নিজে শাসনব্যবস্থা দেখাশুনা করতেন। 

পুলিশ বাহিনী গঠন, গুপ্তচর নিয়োগ, কাজী নিয়োগ, ভূমি জরিপ, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে উৎসাহ প্রদান প্রভৃতি কার্যাবলি শাসক হিসেবে তার কৃতিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। তাছাড়াও জনসাধারণের জন্য বহু নগরী, সরাইখানা, হাসপাতাল, মসজিদ, মাদরাসাও রাস্তাঘাট নির্মাণ করেন। 

তাই ঐতিহাসিক ম্যুর বলেন, “মোটামুটিভাবে তার শাসনব্যবস্থা বিচক্ষণতা ও ন্যায়পরায়ণতার সাক্ষ্য বহন করে।”এএ ধর্মভীরু : মুসমান হিসেবে আল মনসুর ধার্মিক ও আদর্শ স্থানীয় ছিলেন। কোনো প্রকার অপবিত্রতা তার দরবারে দেখা যায়নি। ন্যায়পরায়ণতা ছিল তার চরিত্রের ভূষণ।

১৭. কোমলতা ও নিষ্ঠুরতা : আল মনসুরের চরিত্র ছিল অদ্ভূতভাবে দোষগুণের সংমিশ্রণ। তিনি মিত্রের প্রতি যেমন কোমল ছিলেন। শত্রুর প্রতি ছিলেন নিষ্ঠুর ও নির্মম। তাছাড়াও মানুষ হিসেবে তিনি বিশ্বাসঘাতক ও নৃশংস হত্যাকারী ছিলেন। 

মুহাম্মাদ ও ইব্রাহিমকে হত্যা করে মনসুর ইতিহাসে এক জঘন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তবে তিনি অনুতপ্ত কর্মচারীদের ক্ষমা করে কোমলতার পরিচয় দেন।

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, খলিফা আল মনসুরের কৃতিত্ব অপরিসীম। তিনি অদম্য সাহস, পরিশ্রম, কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার ফলে ভিতরের ও বাইরের সকল বিদ্রোহ কঠোর হস্তে দমন করেন। 

তাছাড়া আব্বাসীয় শাসনকে সংহত করে রাজ্য বিস্তার, সেনাবাহিনী গঠন, শিক্ষা ও স্থাপত্য উন্নয়ন, বিভিন্ন গ্রন্থাবলি আরবি ভাষায় অনুবাদ এবং বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ সাধন করেন। 

এসব কার্য সাধনের মধ্য দিয়ে তিনি আব্বাসীয় বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতার মর্যাদা লাভ করেন । তাই তাকে আব্বাসীয় খিলাফতে স্বর্ণযুগের সূচনাকারী বলা হয় ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ খলিফা আল মনসুর ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন। আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম খলিফা আল মনসুর ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন। আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ