মুতাজিলা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় দর্শন সম্পর্কে একটি ধারণা দাও
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুতাজিলা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় দর্শন সম্পর্কে একটি ধারণা দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুতাজিলা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় দর্শন সম্পর্কে একটি ধারণা দাও ।
মুতাজিলা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় দর্শন সম্পর্কে একটি ধারণা দাও |
মুতাজিলা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় দর্শন সম্পর্কে একটি ধারণা দাও
উত্তর : ভূমিকা : গ্রিক দর্শনের প্রভাবে মুসলিম, দর্শনে যেসব সম্প্রদায়ের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে সেগুলোর মধ্যে মুতাজিলা সম্প্রদায় ছিল প্রথম। তারা ধর্মের এক যৌক্তিক ভিত্তি রচনার প্রয়াস পান। ধর্মান্ধ খারেজীদের উগ্রমতবাদ ও মুরাজিয়াদের নৈতিক শিথিলতার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ মুসলিম দর্শনে মুতাজিলাদের প্রধান উৎস হলো বুদ্ধি।
তাই তারা মুক্তবুদ্ধি দর্শনের বিচার করেছেন। তারাই ইসলামে স্বাধীন চিন্তাবিদ হিসেবে পরিগণিত হন। এবং প্রকাশ্যে মুক্তবুদ্ধির ভিত্তি স্থাপন করেন ।
→ মুতাজিলা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় দর্শন : নিম্নে মুতাজিলা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় দর্শন তুলে ধরা হলো :
১. আল্লাহর গুণাবলির স্বরূপ : মুতাজিলা সম্প্রদায় মনে করেন, আল্লাহর কোনো গুণ নেই। তারা বলেন, আল্লাহ এক ও দ্বিতী সত্তা। তার সমকক্ষ কেউ নেই। তা সত্ত্বেও কুরআন ও হাদিসে তার নিরানব্বইটি গুণের উল্লেখ করা হয়েছে।
তারা বলেন, আল্লাহর সত্তারা যদি একাধিক গুণাবলিকে মেনে নেয়, তাহলে একাধিক সত্তাকে মেনে নেওয়া হবে যা হবে শিরক। তাই তারা আল্লাহর গুণাবলির স্বরূপ কিছু মানতে চান না ।
২. মানুষের স্বাধীনতা : মুতাজিলারা মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দিত। তারা বলেন, মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা না থাকলে তাকে কর্মের জন্য দায়ী করা যায় না। আর মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা আছে বলেই তার কাজের জন্য ভালোমন্দ বিচার করে কৃতকার্য অনুযায়ী পরকালে সে পুরস্কার বা শান্তি লাভ করবে ।
৩. কুরআনের সৃজন : মুতাজিলা সম্প্রদায় বলেন, “যদি কুরআনকে চিরন্তন বলে গ্রহণ করা হয় তবে পাশাপাশি দুটি চিরন্তন সত্তাকে বিশ্বাস করা হবে। এক আল্লাহ এবং অপরটি | কুরআন। তাদের ভাষ্য হলো কুরআন আল্লাহর সৃষ্টি, কিন্তু এই সৃষ্টিকে আমরা চিরন্তন বলে ধরতে পারি না। তাহলে আল্লাহর সাথে শিরক হবে। যা হবে ইসলাম মৌলিক নীতি তৌহিদ বিরোধী । সুতরাং কুরআন চিরন্তন নয়, সৃষ্ট।
৪. জগত সৃষ্টি : মুতাজিলাগণ মনে করতেন, জগত চিরন্তন ও সৃষ্ট। অনন্তকাল ধরে জগত নিশ্চল নিস্তব্দ অবস্থায় ছিল। পরবর্তীতে আল্লাহ তাতে গতি সঞ্চার করেন। ফলে জগত নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমণ করতে থাকে।
৫. শুভ-অশুভ : মুতাজিলা সম্প্রদায় বিশ্বাস করতো প্রকৃতিতে যা কিছু ঘটে তাই মঙ্গলসূচক। তারা মনে করতো অনিষ্ট ও দুঃখ আল্লাহর সর্বদর্শিতা ও সর্বশক্তিমত্তার অভাবে হয়। মুতাজিলা সম্প্রদায়ের মধ্যে কেউ কেউ অনিষ্টকে অস্বীকার করেছে আবার কেউ কেউ অনিষ্টকে মানুষের সৃষ্টি বলে মনে করেছে।
আল্লাহ ইচ্ছা করলে যে কোন কাজ করার ক্ষমতা রাখেন, কিন্তু তিনি তার স্বভাব বিরোধী কোন কাজ করেন না। তাদের একজন অন্যতম চিন্তাবিদ নাজাম বলেছেন। আল্লাহ অনিষ্ট করেন না নয় । বরং তিনি অনিষ্ট করতে পারে না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুতাজিলা সম্প্রদায় তাদের যুক্তির মাধ্যমে আল কুরআন ও হাদিসকে ব্যাখ্যার মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেন। তারা মনে করেন কুরআনের বাণী আক্ষরিক অর্থে নেওয়া ঠিক না। একে বরং ব্যাখ্যা করতে হবে রূপক অর্থে।
কুরআনে যদি আল্লাহকে দেখার কথা বলে, তাহলে সে দেখা আত্মাধিক দেখা । তারা তাদের মতবাদে আকাঈদের বিষয়গুলো সত্যায়ন করার চেষ্টা করেছিলেন তারা আল্লাহর গুণের কথা স্বীকার করেছেন। মুতাজিলা সম্প্রদায় ধর্মতত্ত্বে মুক্তবুদ্ধির ভিত্তি স্থাপন করেন। তাই মুতাজিলা সম্প্রদায়ের গুরুত্ব মুসলিম দর্শনে অপরিসীম।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুতাজিলা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় মতবাদ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুতাজিলা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় মতবাদ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।