bangla data

তাহেরি বংশ প্রতিষ্ঠায় তাহির ইবনে হুসাইনের সাফল্য আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো তাহেরি বংশ প্রতিষ্ঠায় তাহির ইবনে হুসাইনের সাফল্য আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের তাহেরি বংশ প্রতিষ্ঠায় তাহির ইবনে হুসাইনের সাফল্য আলোচনা কর।

তাহেরি বংশ প্রতিষ্ঠায় তাহির ইবনে হুসাইনের সাফল্য আলোচনা কর
তাহেরি বংশ প্রতিষ্ঠায় তাহির ইবনে হুসাইনের সাফল্য আলোচনা কর

তাহেরি বংশ প্রতিষ্ঠায় তাহির ইবনে হুসাইনের সাফল্য আলোচনা কর

উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় খিলাফতের পূর্বাঞ্চলে যে সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে তার মধ্যে তাহির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ ছিল স্বশাসিত তার এই রাজবংশে আব্বাসীয় খলিফাদের কোনোপ্রকার হস্তক্ষেপ ছিল না। তিনি এক একটি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে নিজ নামে খুৎবা পাঠ করেন ।

পরিচয় : তাহিরের প্রকৃত নাম তাহির ইরন-আল-হুসাইন তিনি ৭৭৫-৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন আব্বাসীয় খলিফার অধীনে একজন কর্মচারী। তার পূর্বপুরুষেরা ছিলেন আব্বাসীয় খলিফার গভর্নর। সুতরাং জন্মগতভাবে তিনি ছিলেন অভিজাত পরিবারের সদস্য।

রাজবংশ প্রতিষ্ঠান : খলিফা মামুনের রাজত্বকালে তাহির ইবন হুসাইন খোরাসানে খারিজী বিদ্রোহ দমন করিয়া সমগ্র পারস্যের অঞ্চলে স্বীয় প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেন। ৮২১ খ্রিস্টাব্দে পূর্বাঞ্চলীয় শাসনকর্তা নিযুক্ত হতে মার্ভ হতে স্বাধীনভাবে রাজত্ব করিতে থাকেন। 

খুৎবা হতে খলিফার নাম বাতিল করে নিজে নামে খুৎবা পাঠ করেন। নিশাপুর ছিল তাহেরি রাজবংশের রাজধানী। তার নামানুসারে এই রাজবংশের নামকরণ করা হয় তাহেরি রাজবংশ। তাহির নিজ নামে খুৎবা পাঠ করলেও খলিফা আল মামুনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন ।

উপ কৃষ্ণ : আব্বাসীয় দুই খলিফা আল মামুন ও আমির এর দ্বন্দ্বের যুদ্ধে জয়লাভ করার জন্য আব্বাসীয় খলিফা আল মামুন সেনাপতি তাহির ইবনে হুসাইনকে ‘যু-আল ইয়ামিনাইন’ অর্থাৎ সচ্যসাচী উপাধি প্রদান করেন। কারণ এক চক্ষু বিশিষ্ট তাহির দুই হাতে সমানভাবে তরবারি চালাতে পারদর্শী ছিলেন ।

বিজয়াভিযান : তাহির আব্বাসীয় খিলাফতের গভর্নর ও সেনাপতি পদে নিয়োগ লাভ করে তিনি বিভিন্ন অভিযান প্রেরণ করেন এবং যেসব অভিযানে সাফল্য লাভ করেন।

ভ্রাতৃদ্বন্দ্বে জয়লাভ : আব্বাসীয় খলিফার ক্ষমতা গ্রহণ নিয়ে যে ৮২২ খ্রিস্টাব্দে খলিফা আল মামুন ও খলিফা আল আমিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। সেই দ্বন্দ্বে সেনাপতি তাহির বিজয় লাভ করেন। কাযবীন বিজয় : আমিনের সেনাপতিকে পরাজিত করে তাহির কাযবীন বিজয় করে।

হুলওয়ান বিজয় : তাহির কাযবীন বিজয় করে হলওয়ানের দিকে নজর দেন এবং তিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে হলওয়ান বিজয় করে ফেলেন।

আহওয়াব ও সুস বিজয় : তাহির হুলওয়ান বিজয় করে নিজেই আহওয়াব ও সুস বিজয়ের জন্য বেরিয়ে পড়েন এবং আহওয়াব ও সুস বিজয় লাভ করেন।

বাগদাদ আক্রমণ : তাহিরের বিজয় লাভের ফলে খলিফা আল আমিন এর ক্ষমতা খর্ব হতে থাকে। তাই তাহির বাগদাদ আক্রমণের পরিকল্পনা করেন এবং বাগদাদ আক্রমণ করে তিনি আমিনকে হত্যা করেন। যার ফলে তিনি ৮১৩ খ্রিস্টাব্দে বাগদাদ জয়লাভ করে ।

খোরাসানের শাসনভার গ্রহণ : আব্বাসীয় খলিফা আমিনকে পরাজিত করলে খলিফা মামুন তাকে খোরাসানে শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করেন কারণ যেহেতু তাহির মার্ভের শাসনকর্তা আমিনকে পরাজিত করেন সেহেতু সে কোনো সময় খলিফার নিজের জন্য হুমকি হতে পারেন।

খুৎবায় নাম সংযোজন : খলিফা মামুন যখন তাহিরকে খোরাসানের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন তখন তাহির নিজ নামে একটি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই রাজবংশের নামকরণ করেন তাহেরি রাজবংশ। এর রাজধানী নির্মাণ করেন নিশাপুরে। ৮২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি শাসনভার গ্রহণ করে নিজ নামে খুৎবা পাঠ করেন ।

আব্বাসীয় খলিফার সাথে সম্পর্ক : আব্বাসীয় খলিফা আল মামুনের সাথে তাহিরের সুসম্পর্ক ছিল কারণ তাহির নিজ নামে খুৎবা পাঠ ও স্বায়ত্তশাসিত রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করলে মামুন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করেনি। সেই সাথে তাহির কিন্তু রাজস্ব ও উপকৌটন পাঠাতেন খলিফার কাছে এবং আব্বাসীয় খলিফার প্রতি আনুগত্য ছিলেন।

তাহেরি রাজবংশ প্রতিষ্ঠার সাফল্য : সর্বোপরি তাহির নিজের যোগ্যতা, বিচক্ষণতা, বুদ্ধি ইত্যাদি দ্বারা আব্বাসীয় খিলাফতের পূর্বাঞ্চলে অর্থাৎ পারস্যের খোরাসানে তাহেরি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন ।

তাহিরের মৃত্যু : তিনি এই রাজবংশ প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর তাহির মৃত্যুবরণ করেন। তার এই প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ ৫২ বছর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পূর্বাঞ্চলীয় যে সকল রাজবংশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে তার মধ্যে তাহেরি রাজবংশ ছিল ইরানীয় সংস্কৃতির প্রভাবযুক্ত। এই রাজবংশ আব্বাসীয় কেন্দ্রীয় শাসকদের দুর্বলতায় প্রতিষ্ঠা হয় তাই এটি একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত রাজবংশ ছিল যা নিজ নামে খুৎবা পাঠ করেন।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ তাহেরি বংশ প্রতিষ্ঠায় তাহির ইবনে হুসাইনের সাফল্য আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম তাহেরি বংশ প্রতিষ্ঠায় তাহির ইবনে হুসাইনের সাফল্য আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ