গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি আলোচনা কর
গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি আলোচনা কর

গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি আলোচনা কর

  • অথবা, গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর ।

উত্তর : ভূমিকা : ইতিহাসের বহুল পরিচিত একটি নাম হলো গিয়াসউদ্দিন তুঘলক। তিনি হাজারো চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে নিজ মেধা, যোগ্যতা ও কর্মকুশলতার মধ্য দিয়ে ইতিহাস বিখ্যাত তুঘলক রাজবংশের গোড়াপত্তন করেন। 

তার নাম ছিল গাজী মালিক তুঘলক। তার পিতামাতা কেউই বিখ্যাত ছিলেন না। অখ্যাত পিতামাতার সন্তান হয়ে তিনি যে অপূর্ব একটি ইতিহাস রচনা করেছেন, সত্যিই তা ইতিহাসে বিরল।

→ গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের পরিচিতি : তুঘলক বংশের প্রতিষ্ঠাতা গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের বাল্যকালের ইতিহাসেও নানা মতবিরোধ রয়েছে। 

প্রচলিত মত হচ্ছে তুঘলকগণ তুর্কি বংশের করুনার অধিবাসী। এই করুনা বংশোদ্ভূত জনসাধারণ সিন্ধু এবং তুর্কিস্ত গানের মধ্যবর্তী পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস করত।

নাম : গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রকৃত নাম হলো পাজী | মালিক ভুলক। ১৩২০ সালে শাসন ক্ষমতায় আরোহণের পর তার নাম পরিবর্তিত হয়। 

তিনি সুলতান গিয়াসউদ্দিন তুঘলক উপাধি ধারণ করে ইতিহাসে তুঘলক বংশের গোড়াপত্তন করেন। গাজী মালিকের পিতা গিয়াসউদ্দিন বলবনের ক্রীতদাস ছিলেন। মাতা ছিল জাঠ রমণী।

বংশ পরিচয় : গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের বংশ পরিচয় সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। তারিখ-ই-ফিরোজ শাহীর লেখক জিয়াউদ্দিন বারানি তার গ্রন্থে বংশ পরিচয় সম্পর্কে তেমন কিছু আলোচনা করেননি। পিয়াসউদ্দিনের জীবন শুরু হয় ক্রীতদাস প্রথা থেকে একজন স্বাধীন সমরনায়ক হিসেবে।

• প্রাথমিক কার্যাদি : গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাদি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :

১. সাধনা ও প্রচেষ্টা : গিয়াসউদ্দিন তুঘলক নিজ মেধা ও যোগ্যতার বলে শাসন ক্ষমতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তার বাল্যকাল শুরু হয়। 

যৌবনে অপূর্ব সাহস ও বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তিনি আলাউদ্দিন খলজির সুদক্ষ সেনানায়ক এর গৌরব অর্জন করেন। খলজি শাসনামলে তিনি ১২ বার মঙ্গলদের হাত থেকে মসজিদের রক্ষা করে তাদের সুনজরে আসেন।

২. উপাধি গ্রহণ : মঙ্গলদের অত্যাচার ও উৎপীড়ন থেকে খলজিদের রক্ষা করে গাজী মালিক উপাধিতে ভূষিত হন। 

অদম্য সাহস, বুদ্ধিমত্তার সফল প্রয়োগই কেবল নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই উপাধি এক সময় তাকে দিল্লি সালতানাতের শাসক বানিয়েছিল।

৩. গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের পুরস্কার : আলাউদ্দিন খলজির শাসনামলে গিয়াসউদ্দিন তুঘলক খলজি মালিকদের কয়েকবার বিশ্বাসঘাতক মঙ্গলদের হাত থেকে বাচিয়ে ছিলেন। 

খলজি মালিক এতে আনন্দিত হলেন এবং তাকে দিপালপুরের গভর্নর পদে নিয়োগ প্রদান করেন।

৪. সিংহাসনে আরোহণ : গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের দিল্লির শাসন ক্ষমতায় আরোহণ সত্যই ইতিহাসকে আলোকিত করছে। দিপালপুরের গভর্নর থাকাকালীন তিনি বেআইনিভাবে নিশ্চিত সিংহাসনে আরোহণকারী নাসিরউদ্দিনকে পরাজিত করেন। আমির-ওমরা এ জয়ের পুরস্কার হিসেবে তাকে দিল্লির সিংহাসনের সত্যিকার অধীশ্বর বলে ঘোষণা করেন।

৫. সিংহাসনে আরোহণের সময়কাল : গাজী মালিক যিনি | গিয়াসউদ্দিন উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন মূলত তার শাসন ক্ষমতায় আরোহণের সময়কাল ছিল ১৩২০ সাল। 

নাসিরউদ্দিন খসরুপ যিনি কুতুবউদ্দিনের পুত্র সুলতান মোবারক শাহকে হত্যা করে শাসন ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করেন। নাসিরউদ্দিনকে পরাজিত করে দিল্লির সালতানাতে তার ক্ষমতার স্থায়ী ব্যবস্থা করেন।

৬. সংকটজনক পরিস্থিতি : খলজি মালিকদের পরাজিত করে গিয়াসউদ্দিন তুঘলক যেমন দিল্লির সুলতানি শাসন রক্ষাকল্পে | সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন, তেমনি সুলতানি শাসনব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্য তাকে অনেক সংকটময় পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। 

দিল্লির সিংহাসন নিয়ে সাম্রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গভর্নর ও হিন্দু সামন্ত শ্রেণি নৃপতি বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এতে তাকে কঠিন পরিস্থিতির মাঝে পড়তে হয়।

৭. বিদ্রোহ দমন : সুলতান গিয়াসউদ্দিন তুঘলক একজন | উচ্চাভিলাষী শাসক ছিলেন। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক দিক থেকে বিচক্ষণ ছিলেন। 

প্রথমে দিল্লি ও পর্যায়ক্রমে দিল্লির পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলো অবমুক্ত করেন। এরপর প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিদ্রোহ দমন করেন।

৮. গিয়াসউদ্দিনের রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তা : রাজনৈতিক দিক থেকে গিয়াসউদ্দিনের অনেক বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। কেননা তিনি সামান্য ক্রীতদাস থেকে সমরনায়ক হওয়ার গৌরব ও কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম রাজবংশ তুঘলক বংশ। যার প্রতিষ্ঠা অদূর ভবিষ্যতের জন্য শাসনব্যবস্থা দৃঢ় করে ইতিহাসে চিরস্বরণীয় হয়ে আছেন গিয়াসউদ্দিন তুঘলক দিল্লি সালতানাতে তার অবদান অনস্বীকার্য।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের প্রাথমিক কার্যাবলি আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ