মার্কিন ও ব্রিটেন দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন ও ব্রিটেন দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন ও ব্রিটেন দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

মার্কিন ও ব্রিটেন দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো
মার্কিন ও ব্রিটেন দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো

মার্কিন ও ব্রিটেন দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো

  • অথবা, মার্কিন ও ব্রিটিশ দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক সম্পর্ক বিস্তারিত বিবরণ দাও।
  • অথবা, ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দলীয় ব্যবস্থার একটি তুলনামূলক আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলব্যবস্থার মধ্যে তুলনামূলক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে উভয় দেশের দল ব্যবস্থার সংগঠন, প্রভৃতি ও বৈশিষ্ট্যের মধ্যে কতকগুলো ক্ষেত্রে সাদৃশ্য এবং কতকগুলো ক্ষেত্রে বৈসাদৃশ্য দেখা যায়। মার্কিন ও ব্রিটিশ দলব্যবস্থার মধ্যে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রসমূহে সাদৃশ্য বর্তমান।

→ সাদৃশ্যগত সম্পর্ক : মার্কিন ও ব্রিটিশ দলীয় ব্যবস্থার মধ্যে সাদৃশ্যগত সম্পর্ক নিচে আলোচনা করা হলো :

১. দ্বি-দলীয় ব্যবস্থা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেনে উভয় দেশেই দ্বি-দলীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত। সরকারি ক্ষমতা দখলের ব্যাপারে উভয় দেশে দুটি প্রধান বৃহৎ দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সীমাবদ্ধ থাকে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি দল হলো গণতন্ত্রী দল ও সাধারণতন্ত্রী দল এবং গ্রেট ব্রিটেনের দল দুটি হলো : রক্ষণশীল দল ও শ্রমিক দল। উভয় দেশেই দুটি প্রধান দল ছাড়াও অন্যান্য দল আছে। তাদের ক্ষমতা ও প্রভাব নেহাতই নগণ্য ।

২. শাসনতান্ত্রিক কাঠামোগত : উভয় দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার দলীয় ব্যবস্থা অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু উভয় দেশেই দলীয় ব্যবস্থা সংবিধানে স্বীকৃত হয়নি। 

উভয় দেশেই দলীয় ব্যবস্থা কাঠামোর বাইরে গড়ে উঠেছে। দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রয়োজন অনুসারে কালক্রমে দলীয় ব্যবস্থা রূপায়িত হয়েছে।

৩. আঞ্চলিক আনুগত্য : উভয় দেশেই দলীয় আনুগত্য কতকাংশে ভৌগোলিক দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড রক্ষণশীল দলকে সমর্থন করে। আর উত্তর ও মধ্যাঞ্চলগুলো শ্রমিক দলকে সমর্থন করে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি খামার অঞ্চল ও ক্ষুদ্র শহরাঞ্চল সাধারণতন্ত্রী দলকে সমর্থন করে। আর দক্ষিণ অঞ্চল ও বৃহৎ শহরাঞ্চলগুলো সাধারণ গণতন্ত্রী দলকে সমর্থন করে।

৪. রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা : উভয় দেশেরই দল দুটি প্রচলিত সমাজব্যবস্থা ও শাসনতন্ত্র সংরক্ষণের উদ্দেশ্য কৃতসংকল্প। ব্রিটেন শ্রমিক দল সীমিত ক্ষেত্রে-সংস্কারমূলক উদ্যোগ এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগকে সমর্থন করে। 

কিন্তু সামগ্রিক বিচারে রক্ষণশীল দলের মতো শ্রমিক দলও প্রচলিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা সংরক্ষণের পক্ষপাতী।

বৈসাদৃশ্যগত সম্পর্ক নিয়ে বৈসাদৃশ্যগত সম্পর্ক আলোচনা করা হলো :

১. সংখ্যাগরিষ্ঠের সাথে সম্পর্ক : ব্রিটেনে সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। ব্রিটেনের দুটি দলই প্রত্যেকে সাধারণত নির্বাচনের প্রাকালে ক্ষমতাসীন হওয়ার জন্য স্ব-স্ব কর্মসূচির ভিত্তিতে ভোটদাতাদের কাছে হাজির হয়। যে দল কমন্সসভার সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সেই দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী হন।

২. রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি এবং রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসনব্যবস্থা প্রচলিত আছে। এখানে দলীয় সরকার নেই। ব্রিটিশ সরকারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কোনো বিশেষ দলের দ্বারা গঠিত বা পরিচালিত হয় না।

৩. আদর্শ ও কর্মসূচির পার্থক্য : ব্রিটেনের রক্ষনশীল দল এবং শ্রমিক দলের মধ্যে আদর্শ ও নীতিগত সুস্পষ্ট পার্থক্য আছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রী ও সাধারণতন্ত্রী দলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এ রকম কোনো পার্থক্য অনুপস্থিত। 

ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্ভব এবং তাদের পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার পিছনে নীতিগত কারণ বর্তমান।

৪. কাঠামোর ক্ষেত্রে পার্থক্য : ব্রিটেনের রাজনৈতিক দল দুটির প্রকৃত ক্ষমতা সংগঠনের সর্বোচ্চ স্তরে কেন্দ্রীভূত। অর্থাৎ ব্রিটিশ দল দুটি কেন্দ্রীভূত। ব্রিটেন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত। 

তাই এখানে দলীয় কাঠামোও এককেন্দ্রিক। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুটি দলের প্রকৃত ক্ষমতা সংগঠনের নিম্নস্তরসমূহে বিক্ষিপ্তভাবে থাকে।

৫. দলীয় শৃঙ্খলার পার্থক্য : ব্রিটেনের প্রধান রাজনৈতিক দল দুটির মধ্যে শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা ও সংহতি পরিলক্ষিত হয়। ব্রিটেনে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা বর্তমান। 

কমলসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনের উপর সরকার নির্ভরশীল। দলীয় শৃঙ্খলা ও সংহতির ক্ষেত্রে বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হলে সরকারের স্থায়িত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে ।

৬. উদ্দেশ্যগত পার্থক্য : সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি ও নীতির ভিত্তিতেই ব্রিটেনের প্রধান দুটি দল নির্বাচনে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকে। 

সরকারি ক্ষমতা দখল করতে পারলে দল দুটি দলীয় নীতি ও কর্মসূচি ও নীতিগত তেমন কোনো পার্থক্য না থাকার জন্য কেবল ক্ষমতাসীন হওয়ার জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকে।

৭. দলীয় আনুগত্য : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধিকাংশ নাগরিক পারিবারিক ধারায় দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে ভোট দিয়ে থাকেন অর্থাৎ পিতৃপুরুষের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে মার্কিন ভোটদাতাগণ ভোট প্রদান করেন। 

গ্রেট ব্রিটেন কিন্তু পারিবারিক ঐতিহ্য দল আনুগত্যের নির্ণায়ক হিসেবে এমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে না।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এবং ব্রিটেনের দলীয় ব্যবস্থার উপরিউক্ত পার্থক্যগুলোর কারণ হলো এই যে, মার্কিন শাসনব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রীয়, রাষ্ট্রপতি শাসিত এবং ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত, আর ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থা এককেন্দ্রিক ও মন্ত্রিপরিষদ শাসিত এবং এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিকে অস্বীকার করা হয়নি।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন ও ব্রিটেন দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন ও ব্রিটেন দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন ও ব্রিটেন দলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ