মুহাম্মদ বিন তুঘল কে উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় কেন আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুহাম্মদ বিন তুঘল কে উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় কেন আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুহাম্মদ বিন তুঘল কে উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় কেন আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

মুহাম্মদ বিন তুঘল কে উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় কেন আলোচনা কর
মুহাম্মদ বিন তুঘল কে উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় কেন আলোচনা কর

মুহাম্মদ বিন তুঘল কে উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় কেন আলোচনা কর

  • অথবা, মুহাম্মদ বিন তুঘলক কে কেন উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : সুলতানি আমলের বিখ্যাত শাসকদের মধ্যে মুহাম্মদ-বিন-তুঘলক ছিলেন অন্যতম। ইতিহাসে তিনি কল্পনাবিলাসী শাসক হিসেবে পরিচিত। গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের মৃত্যুর পর তুঘলক বংশের শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হন। 

দিল্লির সিংহাসনে তার মতো একাধারে দক্ষ ও বিন্ধান নরপতি সিংহাসনে আরোহণ করেছে কিনা তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মাঝে মত বিরোধ আছে। যোগ্যতা দিয়ে তুঘলক বংশকে সম্মানের আসনে আসীন করেছেন। নিম্নে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো :

→ মুহাম্মদ-বিন-তুঘলকের পরিচয় : মুহাম্মদ-বিন-তুঘলক এর প্রকৃত নাম ফখরুদ্দিন মুহাম্মদ জুনা বা উলুঘ খান। পিতা গিয়াসউদ্দিন তুঘলক ছিলেন তুঘলক বংশের প্রতিষ্ঠাতা। মাতার নাম নিয়ে অনেক মতবিরোধ পরিলক্ষিত হয়।

সিংহাসনে আরোহণ : গিয়াসউদ্দিনের মৃত্যুর পর উলুঘ খান বা ফখরউদ্দিন জুনা খান মুহাম্মদ-বিন-তুঘলক উপাধি ধারণ করে দিল্লির শাসনকর্তা নিযুক্ত হন ।

শাসনকাল : গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের মৃত্যুর পর ১৩২৫ সালে মুহাম্মদ-বিন-তুঘলক সিংহাসনে আরোহণ করেন। সিংহাসনে আরোহণকালে অত্যধিক জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে তার অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়। ১৩২৫-৫১ সাল পর্যন্ত মোট ২৭ বছর দিল্লির শাসন ক্ষমতা পরিচালনা করতে সমর্থ হন ।

প্রতিভা : সুলতান মুহাম্মদ-বিন-তুঘলক এর স্মরণ শক্তি ও মননশীলতা এবং সৃজনশীলতা ছিল প্রচুর। সমসাময়িককালের বিখ্যাত পণ্ডিতবর্গকে তার বহুমুখী প্রতিভা ভীত করে তুলে। 

তিনি জ্যোতিষশাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র, গণিত ও দর্শন বিদ্যায় সমানভাবে পারদর্শী ছিলেন।দয়ার সাগর ও রক্তপিপাসু শাসক। ঐতিহাসিকগণের নিকট হতে তার সম্পর্কে বিপরীতধর্মী মন্তব্য পাওয়া যায়।

মুহাম্মদ-বিন- তুঘলক ছিলেন সুলতানি আমলের সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যক্তি। তিনি সিংহাসনে আরোহণের পরপরই আমির-ওমরাহ ও অভিজাত শ্রেণি এবং আত্মীয়স্বজন দ্বারা ষড়যন্ত্রের শিকার হন।

আলাউদ্দিনের মতে তাদের উৎকোচ প্রদান করে তাদের বশে আনেন। তাকে দয়ার সাগর বলা হয়ে থাকে আবার রক্তপিপাসু বলা হয়। কেননা তার চাচাতো ভাই বাহাউদ্দিনকে চর্ম ছাড়িয়ে হত্যা করেছিলেন।

মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত মুহাম্মদ-বিন-তুঘলক অভ্যন্তরীণ গোলযোগের পাশাপাশি বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে সচেষ্ট হন। মোঙ্গলদের প্রতিহত করে তিনি বিশেষ সুনাম অর্জন করেছিলেন।

মুহাম্মদ-বিন-তুঘলককে কল্পনাবিলাসী বলার কারণ : ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন বারানি, আবুল ফজল, নিজামউদ্দিন আহম্মাদ, বাদায়ূনি তাকে কল্পনাবিলাসী শাসক বলে অভিহিত করেছেন। 

মুহাম্মদ-বিন- তুঘলক পঞ্চ মহাপরিকল্পনা করেছিলেন যার মধ্যে ছিল রাজাধানী দেবগিরিতে স্থানান্তর, তাম্র মুদ্রার প্রচলন, কারাচিল ও খোরাসান অভিযান এবং দোয়াব অঞ্চলে কর বৃদ্ধি।

তুঘলকের পরিকল্পনা গ্রহণ করার কারণ : ইতিহাস বিখ্যাত শাসক মুহাম্মদ-বিন-তুঘলক যে পাঁচটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। তার পিছনে যৌক্তিকতা যতটুকু ছিল তেমনি অযৌক্তিকতাও ছিল।

মধ্যযুগীয় শাসনব্যবস্থার অন্যতম দিক ছিল যে, নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে অনেক কল্পনাবিলাসী পরিকল্পনা করা। যেমন গিয়াসউদ্দিন তুঘলক তাকে এ পথ দেখিয়েছেন।

পঞ্চপরিকল্পনার ফলাফল : কল্পনাবিলাসী এবং বাস্তববাদী শাসক সুলতান মুহাম্মদ-বিন-তুঘলক ১৩২৫ সাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ ২৭ বছনা এর রাজত্বকালে প্রথম যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন তা হলো রাজধানী স্থানান্তর। 

নিম্নি হতে দেবগিরিতে রাজধানী স্থানান্তর হয়েছিল কারণ সাম্রাজ্যের মধ্যবর্তী স্কুল এবং মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য। দ্বিতীয়ত প্রতীকী তাম্র মুদ্রা প্রচলনের উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন সাধনের জন্য। 

তৃতীয়ত কারাচিল অঞ্চলের বিদ্রোহ দমন এবং চতুর্থ খোরাসানে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করা। সর্বশেষ পরিকল্পনা ছিল দোয়াব অঞ্চলে কর বৃদ্ধি করা। এর মূল কারণ ছিল অভিযান পরিচালনা করে সাম্রাজ্যের যে অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে তার ঘাটতি পূরণ করা। 

মুহাম্মদ-বিন-তুঘলকের মহাপরিকল্পনা সবগুলোই ব্যর্থতার মুখ দেখেছিল। সময় উপযোগী পরিকল্পনা ছিল না। প্রাকৃতিক বিরোধিতা, দূরবর্তী অঞ্চল, খোরাসানের উষ্ণ আবহাওয়া এবং দোয়াব অঞ্চলে এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে মুহাম্মদ-বিন- তুঘলকের সকল পরিকল্পনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল।

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, মুহাম্মদ-বিন-তুঘলক, যেমন ইতিহাসে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তেমনি একজন উঁচু মানের শাসক হতে পেরেছিলেন। বুদ্ধিমত্তার অভাব এবং প্রাকৃতিক কারণে তিনি ব্যর্থতার গ্লানি নিতে বাধ্য হন।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুহাম্মদ বিন তুঘল কে উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় কেন আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুহাম্মদ বিন তুঘল কে উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় কেন আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের মুহাম্মদ বিন তুঘল কে উচ্চাভিলাষী শাসক বলা হয় কেন আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ