কবুলিয়ত ও পাট্টা কি। কবুলিয়ত ও পাট্টা বলতে কি বোঝায়

কবুলিয়ত ও পাট্টা কি। কবুলিয়ত ও পাট্টা বলতে কি বোঝায়
কবুলিয়ত ও পাট্টা কি। কবুলিয়ত ও পাট্টা বলতে কি বোঝায়

কবুলিয়ত ও পাট্টা কি। কবুলিয়ত ও পাট্টা বলতে কি বোঝায় 

  • অথবা, কবুলিয়ত ও পাটা সম্পর্কে যা জান লেখ। 
  • অথবা, কবুলিয়ত ও পাটা প্রথার প্রবর্তন কেন করা হয়?

উত্তর : ভূমিকা : ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে মুঘল শাসন আমলে শেরশাহের উত্থান একটি চমকপ্রদ ঘটনা। মুঘল শাসনকালে তিনি স্বাধীনভাবে রাজত্ব করেন। 

তিনি সম্রাট হুমায়ূনকে পরাজিত করে তাঁকে ক্ষণকালের জন্য ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। মাত্র পাঁচ বছরের রাজত্বকালে তিনি সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলভাবে শাসনব্যবস্থা কয়েম করেন। 

তিনি বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজ করেন। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো রাজস্ব সংস্কার। আর রাজস্ব সংস্কারের অন্যতম একটি দিক হলো কবুলিয়ত ও পাট্টা পদ্ধতি ।

কবুলিয়ত ও পাট্টা নিম্নে কবুলিয়ত ও পাট্টা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-

→ কবুলিয়ত : শেরশাহ রাজস্ব সংস্কারের মধ্যে কবুলিয়ত অন্যতম একটি পদ্ধতি। তিনি প্রথমে ভূমি জরিপের ব্যবস্থা করেন এবং জমির উৎপাদনের উপর নির্ভর করে রাজস্ব নির্ধারণ করেন। 

জমির কর্ষণনীতির অবস্থা অনুযায়ী উৎপন্ন ফসলের এক-তৃতীয়াংশ রাজস্ব নির্ধারণ করেন। শেরশাহ এ প্রথা অনুযায়ী কৃষকদের কাছ থেকে লিখিত চুক্তিপত্র আদায় করতেন এবং কৃষকরাও তাদের দাবি ও দায়িত্ব বর্ণনা করে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে দিত। আর এটিই শেরশাহের কবুলিয়ত প্রথা নামে পরিচিত। 

পাট্টা : শেরশাহের পাট্টা প্রথা ছিল প্রজাদের স্বত্ত্ব স্বীকার। মূলত সরকারের কাছ থেকে জমির উপর কৃষক বা প্রজাদের স্বত্ব স্বীকার ও খাজনা নির্দিষ্ট করে যে প্রাপ্তি পত্র দেওয়া হতো তাকে পাট্টা বলা হতো।

কবুলিয়ত ও পাট্টা প্রবর্তনের কারণ : শেরশাহের পূর্ব যুগে রাজস্ব আদায়ে দায়িত্বরত কর্মচারীদের দ্বারা প্রজাগণ নির্যাতিত হতো। মাঝে মাঝে তাদের কাছ থেকে একাধিক বার রাজস্ব আদায় করা হতো।

আবার কোনো কোনো সময় জনগণ ও কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য নানা কৌশলের আশ্রয় নিত। ফলে এসব অরাজকতা ও দুর্নীতি রোধে শেরশাহ কবুলিয়ত ও পাটা প্রথা প্রবর্তন করেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শেরশাহ কবুলিয়ত ও পাট্টা প্রথা প্রবর্তনের ফলে জনগণের সাথে সরকারের খুব ভালো সম্পর্ক স্থাপিত হয়। 

এছাড়া রাজ্যের রাজস্ব ব্যবস্থার দুর্নীতি দূরীভূত হয় এবং সরকারের রাষ্ট্রীয় আয় বেড়ে যায়। সুতরাং বলা যায়, কবুলিয়ত ও পাট্টা প্রথা ছিল অনেকটা যুগোপযোগী ও বিজ্ঞানসম্মত। এ প্রথা প্রবর্তনের মধ্যে দিয়ে শেরশাহের বুদ্ধিবৃত্তির পরিচয় পাওয়া যায়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ