সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধর
সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধর

সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধর

উত্তর : ভূমিকা : ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ একটি রাজবংশ হলো তুঘলক বংশ। এ বংশের প্রতিষ্ঠাতা গিয়াসউদ্দিন তুঘলক মূলত নিজ মেধা, যোগ্যতা, শ্রম ও একনিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে এ রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

তুঘলক বংশের শাসকবর্গ প্রশাসন যন্ত্রকে পরিচালনা করতে গিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করেন ।

→ তুঘলক বংশের অবদান : ইতিহাস বিখ্যাত তুঘলক বংশ সামাজিক ও রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে অবদান রেখেছেন নিম্নে তা পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো :

→ সামাজিক উন্নয়ন : সামাজিক ক্ষেত্রে তুঘলক বংশের অবদান অনস্বীকার্য। নিম্নে সামাজিক উন্নয়নের তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধরা হলো :

১. জায়গীর প্রথার প্রবর্তন : তুঘলক শাসকদের মাঝে যিনি বেশি সমাজ জীবনের উন্নতি ঘটিয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো ফিরোজ শাহ তুঘলক । তিনি জায়গীর প্রথার পুনঃপ্রবর্তন করেন ।

২. ক্রীতদাস প্রথা : সুলতানি আমলের পর থেকেই ভারতে ক্রীতদাস প্রথার ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছিল এরই ধারাবাহিকতায় তুঘলকের শাসনামলে ক্রীতদাসদের ব্যাপক সম্মান প্রদান করা হয়।

৩. দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন : তুঘলক বংশের প্রতিষ্ঠাতা গিয়াসউদ্দিন তুঘলক ও ফিরোজ শাহ তুঘলকসহ অধিকাংশ শাসকরাই চেয়েছিলেন সমাজব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করতে এরই ধারাবাহিকতায় চিকিৎসাশাস্ত্রের উন্নতি এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য দারুস শিফা নামে দিল্লিতে একটি চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপিত হয়।

৪. সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ : তুঘলকরা ইসলামি ভাবধারায় উজ্জীবিত ছিল। যার জন্য তারা সমাজের সকল বৈষম্যমূলক নীতি পরিহার করতে সদা সচেষ্ট ছিলেন। 

সেনাবাহিনীতে মুসলমানদের | সাথে হিন্দুদের যোগদানের সুব্যবস্থা ছিল অন্যদিকে ধনী-গরিবের বৈষম্য দূরীকরণে তারাও ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন।

৫. তুঘলকদের রাজনীতিতে অবদান : শিক্ষা, সংস্কৃতি সামাজিক প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন তুঘলকদের অবদান স্মরণীয় তেমনি রাজনীতিতে তাদের অবদান ছিল চোখে পড়ার মতো। 

কেননা সামান্য ওসী থেকে মসী হয়ে তুঘলক বংশের প্রতিষ্ঠাতা গিয়াসউদ্দিন তুঘলক ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক, ইতিহাসকে আলোক সীমায় পৌঁছাতে সাহায্য করেন।

৬. অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন : অর্থনীতিতে তৃঘলকরা ব্যাপক উন্নয়ন করতে সম্ভবপর হয়েছিল। নিম্নে কিছু আলোচনা তুলে ধরা হলো ।

৭. প্রতীকী মুদ্রার প্রচলন : মুহাম্মাদ বিন তুঘলক একজন উচ্চাভিলাষী শাসক হওয়ার ফলে তিনি অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রতীকী মুদ্রার প্রচলন করেন। 

কেননা সেই সময়ে স্বর্ণের দুষ্প্রাপ্যতা ও রৌপ্যের স্বল্পতার ফলে তিনি তাম্রমুদ্রার প্রচলন করেন। এতে অর্থনৈতিক অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন করতে সহায়তা করেছিল।

৮. কর ব্যবস্থার নিয়ম শিথিল : সাম্রাজ্যের উন্নতি সাধনের জন্য জনসাধারণের উপর অতিরিক্ত আরোপিত কর হ্রাস করেন। এতে জনগণের বাহবা পেতে তুঘলকদের ব্যাপক সহযোগিতা করেছিল।

৯. যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি : একটি সাম্রাজ্যের উন্নতি সাধনের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন অপরিহার্য। এতটুকু বিষয় উপলব্ধি করে তুঘলকরা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালান। 

তার রাস্তব প্রমাণ হলো মুহাম্মদ-বিন-তুঘলকের রাজধানী স্থানান্তরের সময় তিনি রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করে ছিলেন।

১০. ব্যবসা-বাণিজ্যের পথ সুগম : ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন করার জন্য তুঘলকদের অধিকাংশ শাসক সচেষ্ট ছিল। কেনন তারা বহিঃদেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাণিজ্যের পথ সম্প্রসারিত করেন। 

ফলে দিল্লির সাথে নৌপথের অনেক দেশের যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তাছাড়া জনসাধারণের মধ্যে যারা উচ্চাভিলাষী তাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অর্থ প্রদান করা হতো।

১১. তুঘলকদের বিবিধ অবদান : সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতি তাছাড়াও তুঘলক বংশের শাসকরা শিক্ষা ও সংস্কৃতি ধর্মীয় জীবনে নানাবিধ অবদান রাখতে সক্ষম হন। 

তাদের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণের জীবনধারণের মৌলিক দিকগুলো বিশেষ বিবেচনা করা হতো এবং ধর্মীয় ব্যবস্থাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করা হতো।

উপসংহার : পরিশেষে বলতে পারি, তুঘলক বংশ ইতিহাসের বিখ্যাত একটি রাজবংশ যারা দীর্ঘ শাসন পরিচালনা করে অনেক উন্নয়ন সাধন করেন। 

কিন্তু বাস্তবতা হলো কোনো শাসকবংশেই দীর্ঘদিন তাদের শৌর্যবীর্য টিকিয়ে রাখতে পারে না। তাদের বেলায়ও ঠিক তেমনি হয়েছিল। এরই দরুন তুঘলকদের এক সময় পতনের মুখে পতিত হতে হয়।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধর । যদি তোমাদের আজকের সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে তুঘলক বংশের অবদান তুলে ধর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ