গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় কারা । গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় সম্পর্কে কি জানো

গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় কারা । গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় সম্পর্কে কি জানো
গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় কারা । গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় সম্পর্কে কি জানো

গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় কারা । গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় সম্পর্কে কি জানো

  • অথবা, গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়ের কার্যকলাপ বর্ণনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় (Assassins) পারস্যের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। এ সম্প্রদায়ের লোক ছিল উগ্র ও চরমপন্থি। 

তারা একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে প্রায়ই ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে নিযুক্ত থাকত। আব্বাসীয় এবং মোঙ্গল উভয়ই জাতির জন্য তারা বাধাস্বরূপ ছিল । 

নিচে গুপ্তঘাতকদের পরিচয় ও কার্যকলাপ তুলে ধরা হলো :

১. গুপ্তঘাতকদের পরিচয় : মালিক শাহের রাজত্বকালে নিজামুল মুলকের অন্তরঙ্গ বন্ধু হাসান বিন সাবাহ গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিহাসে তিনি পর্বতের বৃদ্ধ লোক বা "The old man of the mountain' নামে পরিচিত। 

তিনি নিজেকে দক্ষিণ আরবের হিমারীয় রাজাদের বংশধর বলে মনে করতেন। তিনি সেলজুক সুলতান আলপ আরসালানের অধীনে চাকরি করতেন। 

কিন্তু সেলজুক দরবারে উচ্চপদ না পাওয়াতে এবং সহপাঠী নিজামুল মুলকের উন্নতিতে ঈর্ষান্বিত হয়ে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন।

২. গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়ের কার্যকলাপ : গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়ের প্রধান কাজ ছিল সমস্ত রাজ দরবারকে বিপর্যস্ত করা এবং রাজ্যে ত্রাসের সঞ্চার করা। 

এ সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা হাসান বিন সাবাহ রায় নামক শহরে বাতেনী তত্ত্বে শিক্ষা লাভ করেন এবং কিছুকাল ফাতেমীয় মিশরে বাস করে পারস্যে ফাতেমী ফিদাই বা যন্ত্রণাকারী হিসেবে বসবাস শুরু করেন। এখান থেকে তিনি পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রাহাজানি ও গুপ্তহত্যা দ্বারা ত্রাসের সৃষ্টি করতে থাকেন ।

৩. গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় ধ্বংস : আব্বাসীয়দের দুর্বলতার সুযোগে গুপ্তঘাদক সম্প্রদায় খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং সমগ্র পারস্য গুপ্তহত্যা ও নৈরাজ্যর সৃষ্টি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। 

সাম্রাজ্যর বিশৃঙ্খলা ও অসন্তোষ নিরসনের জন্য হালাকু খানের নেতৃত্বে গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ চালানো হয়। এতে তারা আত্মসমর্পণ করলে গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পারস্যর গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় ছিল একটি শক্তিশালী সম্প্রদায়। তারা নিজেদের ভিতকে এত শক্ত করে তুলেছিল যে, একমাত্র হালাকু খান ব্যতীত আর কারো পক্ষে সে ভিতে কাঁপন ধরানো সম্ভব ছিল না ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ