রাজা হর্ষবর্ধনের রাজ্যবিজয় আলোচনা কর
রাজা হর্ষবর্ধনের রাজ্যবিজয় আলোচনা কর |
রাজা হর্ষবর্ধনের রাজ্যবিজয় আলোচনা কর
- অথবা, বিজেতা হিসেবে হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব লিখ।
- অথবা, হর্ষবর্ধনের রাজ্যবিস্তারের বর্ণনা দাও।
- অথবা, হর্ষবর্ধনের রাজ্য জয় সম্পর্কে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : বড় ভাই রাজ্যবর্ধনের মৃত্যুর পর হর্ষবর্ধন ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দে থানেশ্বরের সিংহাসনে বসেন। তিনি যখন সিংহাসনে বসেন তখন থানেশ্বর রাজ্যের উপর এক মহাসংকট কাল যাচ্ছিল।
যাইহোক পরবর্তীতে হর্ষবর্ধন তার নিজ প্রতিভা বলে থানেশ্বর রাজ্যকে নিরাপত্তা বিধানসহ রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন।
- হর্ষবর্ধনের রাজ্য জয় : নিচে হর্ষবর্ধনের রাজ্য জয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. বাংলা জয় : গৌড়রাজ শশাঙ্কের মৃত্যুর পর হর্ষবর্ধন ৬৪১ খ্রিস্টাব্দে মগধ রাজ্য অধিকার করেন। ৬৪৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উড়িষ্যা ও কলোন বা গঞ্জাম অধিকার করেন। উড়িষ্যা জয়ের পর হর্য উড়িষ্যার একটি বৌদ্ধ সম্মেলন আহবান করেন।
২. বলতী রাজ্যজয় : ওর্গর ও মালবের বিদ্রোহী রাজাদের উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার জন্য হর্ষবর্ধন সৌরাষ্ট্রের বলবীরাজ ধ্রুবসেনের আনুগত্য লাভের চেষ্টা করেন।
কিন্তু ধ্রুবসেন এতে সাড়া না দেওয়ায় হর্ষবর্ধন তাকে পরাজিত করে বলতী রাজ্য অধিকার করেন। কিন্তু গুর্জররাজ দ্বিতীয় যুদ্ধের সহায়তায় ধ্রুবসেন তার রাজ্য পুনরুদ্ধার করেন।
তবুও হর্ণের সাথে বৈরিতা করা অনুচিত মনে করে তার কন্যাকে ধ্রুবসেন বিয়ে করেন এবং হর্ষের সামান্ত পরিণত হন।
৩. লিছু, নেপাল ও ফার্স্টরের সাথে সম্পর্ক : বিভিন্ন উৎস থেকে জানা যায় যে, হর্ষবর্ধন সিন্ধু, নেপাল ও কাশ্মীর অভিযান করেছিলেন। তিনি এ সমস্ত অঞ্চলের কিছু কিছু জায়গা দখলও করেছিলেন তবে এ মতামতগুলোর সম্পর্কে যথেষ্ট মতবিরোধ আছে।
৪. দ্বিতীয় পুলকেশীর সাথে দ্ব্য হর্ষবর্ধন : যখন উত্তর ভারতে তার রাজ্য বিস্তার করার জন্য মনোনিবেশ করেন। ঠিক সেই সময় দক্ষিণ ভারতেও চানক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর সমগ্র দক্ষিণাত্যে আপন অধিকার স্থাপনে তৎপর ছিলেন।
সে সময় পুলকেশীর প্রভাব খুব বিস্তৃত হয়েছিল। তাছাড়া ৬৩৭ সালে শশাঙ্কের মৃত্যুর পর গঞ্জাম পর্যন্ত হর্ষের রাজ্য সীমা বিস্তৃত হলে হর্ষের রাজ্যসীমা পুলকেশীর সীমান্তকে স্পর্শ করে।
৫. অন্যান্য রাজ্য জয় : হর্ষবর্ধন তাঁর রাজত্বকালে আরও কিন্তু রাজ্য জয় করেন। এগুলো হলো উত্তর ভারতের পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, বিহার উড়িষ্যা।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শশাঙ্কের মৃত্যুর পর হর্ষবর্ধন বীর বিক্রমে তাঁর রাজ্যসীমা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন। তিনি বিশাল এক সাম্রাজ্যের অধিপতি হয়ে স্বীয় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হন। তাই বলা যায় থানেশ্বরের শাসক হর্ষবর্ধনের রাজত্বকাল ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।