চন্দ্রবংশের পতনের কারণ আলোচনা কর

চন্দ্রবংশের পতনের কারণ আলোচনা কর
চন্দ্রবংশের পতনের কারণ আলোচনা কর

চন্দ্রবংশের পতনের কারণ আলোচনা কর

  • অথবা, রাজবংশ হিসেবে চন্দ্রবংশের পতনের কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ভূমিকা : যার জন্ম আছে তার মৃত্যু আছে যার সূচনা আছে তেমনি আবার শেষ আছে। তেমনি চন্দ্রবংশের সূচনা হয়েছিল। ত্রৈলোক্যচন্দ্রের হাত ধরে আবার সেই গৌরবান্বিত রাজবংশের পতন হয় তারই বংশ ধরের হাত ধরে। 

বলা যায় এটা কোনো স্বাভাবিক নিয়ম নয়। যখন কোনো কিছুর পতন হয় বা ব্যর্থতা আসে কিছু বদগুণের কারণেই তেমনি চন্দ্রবংশের পতন হয়েছিল কিছু উল্লেখযোগ্য কারণে।

→ চন্দ্রবংশের পতনের কারণ : একদিনে এক কারণে চন্দ্রবংশের পতন হয়নি যেসব কারণে চন্দ্রবংশের পতন হয়েছে নিচে তা উল্লেখ করা হলো :

১. প্রাকৃতিক নিয়ম : প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ইবনে খালদুনের মতে, কোনো রাজবংশের স্থিতিকাল একশত বছর। যেহেতু চন্দ্রবংশ ১৫০ বছর রাজত্বকাল অতিক্রম করেছে অতএব প্রাকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই এ রাজবংশের পতন অনিবার্য।

২. শাসকদের নরম মানসিকতা : শাসককে হতে হবে শক্ত আবার সময়ে নরম চন্দ্রবংশের শাসকদের দেখা যায় ওরা ছিল নবম মনের তেমন কঠোর কোনো পদক্ষেপ বা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তারা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল যার সুযোগে শত্রুপক্ষ এ রাজবংশের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়।

৩. পরিবারতান্ত্রিক শাসক : দেখা যায় চন্দ্রবংশের শাসকরা সবাই ছিল একে অপরের সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবে তারা ক্ষমতা গ্রহণ করত তাদের বাহিরে কেউ চন্দ্রবংশের ক্ষমতায় আসতে পারত না যার কারণে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং চরম পরিণতি হয় চন্দ্রবংশের পতন।

৪. উত্তরাধিকারীর অভাব : স্বাভাবিকভাবেই একজন শাসকের যদি একাধিক সন্তান থাকে তা হলে একজন অযোগ্য হলেও অন্যজন যোগ্যতার সাথে শাসনকার্য পরিচালনা করে সাম্রাজ্যকে এগিয়ে নিতে পারে তেমনি চন্দ্রবংশের শেষে শাসক গোবিন্দচন্দ্র যখন ব্যর্থ শাসন পরিচালনায় তখন তার কোনো উত্তরাধিকারী ছিল না। 

যিনি তার বিপদে হাত বাড়াবে যার কারণে চন্দ্রবংশের পতন হয়। শাসকদের বিলাসিতা চন্দ্রবংশের শাসকরা যোগ্য ছিল একথা সত্যি কিন্তু তারা যখন পর্যায়ক্রমে শাসন ক্ষমতায় আসতে থাকল তখন তাদের মনে ধারণা হয় তারা শাসক হবেই তার জন্য তাদের পরিশ্রম বা প্রতিযোগিতা করতে হবে না। ভালো শাসকরা বিলাসী। হতে থাকে ফলে চন্দ্রবংশের পতন হয় ।

৫. রাজ্য জয় স্পৃহা : তখন তারা একের পর এক রাজ্য জয়ের চিন্তা করতে থাকে তাদের যখন এমন মানসিকতা শুরু হয় তখন পরাজিতরা তাদের শত্রু হয়ে যায়। পরাজিতরা একত্রিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে তাতে চন্দ্রবংশের পতন হয়।

৬. উদাসীন শাসক : চন্দ্রবংশের অনেক শাসক ছিল উদাসীন। তারা গান, কবিতা নিয়ে থাকতো ফলে সাম্রাজ্যের দিকে তারা মনোনিবেশ করতে পারতো না যার দরুণ চন্দ্রবংশের পতন হয়।

৭. রাজা যখন সন্ন্যাস : স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় একজন শাসককে হতে হয় দূত চালাক সাহসি, এ গুণের বাহিরে রাজা যখন সন্ন্যাসবেশ ধারণ করে। তাহলে কি সে বংশের পতন না হয়ে পারে। মূলত বলা যায় এজন্য চন্দ্রবংশের পতন হয় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, চন্দ্রবংশ গৌরবের সাথে দীর্ঘদিন তাদের রাজবংশ পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু শাসকদের কতিপয় ভুল এবং শাসকের কিছু উদাসীনতার কারণে গৌরবান্বিত এ রাজবংশটির পতন হয়েছিল এবং এটা স্বাভাবিক । 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ