চন্দ্রবংশীয় রাজা ত্রৈলোক্যচন্দ্রের রাজত্বকাল সম্পর্কে যা জান লিখ

চন্দ্রবংশীয় রাজা ত্রৈলোক্যচন্দ্রের রাজত্বকাল সম্পর্কে যা জান লিখ
চন্দ্রবংশীয় রাজা ত্রৈলোক্যচন্দ্রের রাজত্বকাল সম্পর্কে যা জান লিখ

চন্দ্রবংশীয় রাজা ত্রৈলোক্যচন্দ্রের রাজত্বকাল সম্পর্কে যা জান লিখ

  • অথবা, ত্রৈলোক্যচন্দ্রের শাসনামল উল্লেখ কর? 

উত্তর : ভূমিকা : নবম শতকের শেষদিকে অথবা দশম শতকের শুরু থেকে এগারো শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় প্রতিষ্ঠিত শক্তিশালী, স্বাধীন ও সার্বভৌম বংশ হিসেবে চন্দ্রবংশ বাংলার ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। 

আর এই বংশের প্রথম রাজা ছিলেন ত্রৈলোক্যচন্দ্র। যেহেতু ত্রৈলোক্যচন্দ্র স্ববংশীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেন সেহেতু তার রাজত্বকাল ৯০০-৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ বলে অনুমান করা হয় ।

→ ত্রৈলোক্যচন্দ্র সম্পর্কে জানার উৎসসমূহ : চন্দ্রবংশের প্রতিষ্ঠাতা ত্রৈলোক্যচন্দ্র সম্পর্কে জানার ঐতিহাসিক উপাদানের সংখ্যা খুবই সীমিত। তবে নিন্মলিখিত উৎসসমূহ থেকে তার সম্পর্কে কিছুটা ধারণা লাভ করা যায় । সেগুলো হলো :

১. সিলেট জেলার পশ্চিম ভাগে প্রাপ্ত তাম্রশাসন;

২. কল্যাণচন্দ্রের ঢাকা তাম্রশাসন ও

৩. শ্রী চন্দ্রের তাম্রশাসন প্রভৃতি ।

→ ত্রৈলোক্য চন্দ্রের রাজত্বকাল : ত্রৈলোক্যচন্দ্র ছিলেন চন্দ্রবংশের প্রথম সার্বভৌম নরপতি। তার পুত্রের তাম্রশাসনে উল্লেখ আছে যে, তিনি ছিলেন চন্দ্রদ্বীপের অধিপতি এবং হরিকেল রাজলক্ষ্মীর আধার। 

ধারণা করা হয় তিনি প্রথম জীবনে হারিকেল রাজার অধীনে লালমাই অঞ্চলের একজন সামন্ত ছিলেন। ক্রমান্বয়ে তার শক্তি বৃদ্ধি পাই এবং তিনি হরিকেল রাজ্যের প্রধান শক্তির অবলম্বন হিসেবে বিবেচিত হন। পরবর্তী কালে কোনো এক সময়ে তিনি চন্দ্রদ্বীপের নৃপতি হন।

দীনেশচন্দ্র সরকারের মতে ত্রৈলোক্যচন্দ্র একজন সামস্ত রাজা ছিলেন। কারণ তার পুত্র শ্রী চন্দ্রের তাম্রশাসনে তাকে কেবলমাত্র মহারাজধিরাজ উপাধী দেওয়া হয়েছে।

ত্রৈলোক্যচন্দ্র সম্পর্কে প্রায় সকল চন্দ্রবংশীয় তাম্রশাসনে প্রশংসা করা হয়েছে। সিলেট জেলার পশ্চিমভাগে প্রাপ্ত একটি তাম্রশাসনে ত্রৈলোক্যচন্দ্র কর্তৃক বঙ্গ ও সমতট জয়ের উল্লেখ আছে।

কল্যাণচন্দ্রের ঢাকা তাম্রশাসন থেকে জানা যায়, ত্রৈলোক্যচন্দ্র গৌড় জয় করেছিলেন। খুব সম্ভবত এ সময়ে গৌড় কম্বোজদের অধিকারে ছিল এবং গৌড় বলতে কম্বোজদেরই বুঝানো হয়েছে। 

এ পর্যন্ত ত্রৈলোক্যচন্দ্রের কোনো তাম্রশাসন পাওয়া যায়নি। তবে পণ্ডিতদের অনুমান তিনি ২৬/৬০ বছর রাজত্ব করেছিলেন। সমতট ও বঙ্গে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠাই ত্রৈলোক্যচন্দ্রের সর্বশেষ্ঠ কৃতিত্ব।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সামন্তরাজার অবস্থান হতে একটি সক্ষম হয়েছিল ত্রৈলোক্যচন্দ্র স্বাধীন রাজ্য সক্ষম হয়েছিলেন ত্রৈলোক্যচন্দ্র আর যার দরুণ দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় চন্দ্রবংশ নামে একটি শক্তিশালী রাজবংশ প্রতিষ্ঠায় তার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ