গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ কে নির্মাণ করেন

গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ সম্পর্কে কি জান লিখ
গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ সম্পর্কে কি জান লিখ

গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ কে নির্মাণ করেন

  • অথবা, ছোট সোনা মসজিদ সম্পর্কে লিখ। 

উত্তর : ভূমিকা : বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ হলো ছোট সোনা মসজিদ। প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড় নগরীর উপকণ্ঠে স্থাপনাটি নির্মিত হয়েছিল। 

বর্তমানে এ মসজিদটি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহের শাসনামলে ওয়ালী ’মাহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।

গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ : নিয়ে গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. নামকরণ : এই মসজিদকে বলা হতো 'গৌড়ের রত্ন'। এর বাইরে সোনালী রঙ এর আস্তরণ ছিলো, সূর্যের আলো পড়লে এ রঙ সোনার মত ঝলমল করতো। নুসরত শাহের তৈরি আরেকটি সোনা মসজিদ থাকায় এর নামকরণ করা হয় ছোট সোনা মসজিদ।

২. বহির্বিভাগ : মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে ৮২ ফুট লম্বা ও পূর্ব পশ্চিমে ৫২.৫ ফুট চওড়া। উচ্চতা ২০ ফুট। এর দেয়ালগুলো প্রায় ৬ ফুট পুরু। 

দেয়ালগুলো ইটের। কিন্তু মসজিদের ভেতরে বাইরে এরা পাথর দিয়ে ঢাকা। মসজিদের চারকোণে চারটি বুরুজ আছে। এগুলোর নকশা অষ্টাকোনাকার। 

বুরুজগুলোর উচ্চতা ছাদের কার্নিশ পর্যন্ত। মসজিদের পূর্বভাগে পাঁচটি খিলানযুক্ত দরজা আছে। খিলানগুলো বহুভাগে বিভক্ত ।

৩. অন্তর্ভাগ : মসজিদটির অভ্যন্তরভাগ কালো ব্যাসাল্টের ৮টি স্তম্ভ দ্বারা উত্তর-দক্ষিণে তিনটি ও পূর্ব-পশ্চিমে পাঁচটি সারি দ্বারা বিভক্ত। মসজিদের অভ্যন্তরের ৮টি স্তম্ভ ও চারপাশের দেয়ালের উপর তৈরি হয়েছে মসজিদের ১৫টি গম্বুজ।

৪. অলংকরণ : পুরো মসজিদের অলংকরণ মূলত পাথর, ইট, টেরাকোটা ও টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে। এদের মাঝে পাথর খোদাইয়ের কাজই বেশি। 

মসজিদের সম্মুখভাগ, বুরুজসমূহ, দরজা প্রভৃতি অংশে পাথরের উপর অত্যন্ত মিহি কাজ রয়েছে, যেখানে লতাপাতা, গোলাপফুল, ঝুলন্ত শিকল, ঘণ্টা ইত্যাদি খোদাই করা আছে । গম্বুজগুলোর অভ্যন্তর ভাগ টেরাকোটা সমৃদ্ধ।

৫. সৌন্দর্যবর্ধন : মূল মসজিদের আঙ্গিনায় ঢোকার পথে একটি তোরণ আছে। এর বাইরের দিকটি পাথর দিয়ে ঢাকা ছিল। তোরণটি মসজিদের মাঝের দরজা বরাবর অবস্থিত। 

তোরণের সামান্য পূর্বে কালো পাথর দ্বারা বাঁধানো দুটো কবর রয়েছে। মূল মসজিদের উত্তর দিকে একটি দীঘি রয়েছে।

এককালে এতে বাঁধানো ঘাট ছিল। বর্তমানে স্থাপনটির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের কবর রয়েছে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ছোট সোনা মসজিদ আলাউদ্দিন হুসেন শাহের স্থাপত্য শিল্প নিদর্শনের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। 

ছোট সোনা মসজিদ নির্মাণের ক্ষেত্রে স্থাপত্য নৈপুণ্য প্রদর্শন করা হয়েছে। মসজিদটি যুগ যুগ ধরে হুসেন শাহের মহান কীর্তির স্বাক্ষর বহন করছে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ