অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী। অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে

অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী। অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে
অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী। অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে

অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী। অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে

উত্তর : ভূমিকা : রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থার সদস্যদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক আচরণবিধি । 

রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে অখিণ্ডত রাজনৈতিক সংস্কৃতি অন্যতম।

অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি : অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির ইংরেজি শব্দ Integrated political culture। যে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে রাজনৈতিক পরিচিতি, জাতীয় আদর্শ, রাজনৈতিক জীবনপ্রণালি, কাঠামো, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠানাদি, মূল্যবোধ, দর্শন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অনুসৃতনীতি ও লক্ষ্য ইত্যাদি বিষয়ে জনগণের মধ্যে ঐকমত্য সমঝোতা বিরাজ করে তাকে অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলে। 

অর্থাৎ জনগণের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে গড়ে উঠা সংস্কৃতিই অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি। 

উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে এ ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়। যেমন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গ্রেট ব্রিটেনের সংস্কৃতি। 

জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের ভিত্তিতে এ ধরনের সংস্কৃতি গড়ে উঠে বিধায় দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটে। 

অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে রাষ্ট্র তথা সরকার এবং জনগণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। রাষ্ট্র কখনই সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক মনোভাব দেখায় না। 

জনসাধারণের মধ্যে একাত্মতাবোধ বিরাজ করে এবং রাষ্ট্রের বিপরীতে সহিংসতা পরিলক্ষিত হয় না। ফলে সরকার ব্যবস্থা স্থিতিশীলতা রূপ লাভ করে।

অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সমাজবদ্ধ মানুষের মধ্যে 'আমিত্ব' ভাব লোপ পায় এবং সামাজিক ভেদাভেদ ভুলে মানুষ সমাজ তথা রাষ্ট্রকে শান্তির নীড়ে পরিণতি করে। 

অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির কতিপয় সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা নিম্নরূপ :

প্রথমত, এ ধরনের সংস্কৃতি তুলনামূলকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পদসোপানভিত্তিক রাজনীতির পরিচায়ক।

দ্বিতীয়ত, জাতীয় পরিচয় ও জাতীয় কর্তৃত্বের প্রাধান্যতা পরিলক্ষিত হয়।

তৃতীয়ত, এ ধরনের সংস্কৃতিতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা সীমিত আকারে বিদ্যমান থাকে ।

চতুর্থত, সমঝোতা এবং বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়মনীতির প্রাধান্য থাকে ।

পঞ্চমত, রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি দৃঢ় ও স্থিতিশীল আনুগত্য এবং সরকারের প্রতি জনসমর্থন পরিলক্ষিত হয়। 

ষষ্ঠত, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গতিশীলতা ত্বরান্বিত হয়।

সপ্তমত, রাষ্ট্র হিংসাত্মক উপায় পরিহারপূর্বক সমঝোতার উপর গুরুত্বারোপ করে । 

অষ্টমত, সরকার ও জনগণের মধ্যে ঐক্যের সেতুবন্ধন তৈরি হয়।

নবমত, জনগণের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত হবার সম্ভাবনা থাকে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিপরীত হচ্ছে অখণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি। এ ধরনের সংস্কৃতি সরকার ও জনগণের ঐকমত্যের ভিত্তিতে গড়ে উঠে। ফলে কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ