আলীবর্দী খানের রাজ্য শাসন সম্পর্কে আলোচনা কর

আলীবর্দী খানের রাজ্য শাসন সম্পর্কে আলোচনা কর
আলীবর্দী খানের রাজ্য শাসন সম্পর্কে আলোচনা কর

আলীবর্দী খানের রাজ্য শাসন সম্পর্কে আলোচনা কর

  • অথবা, আলীবর্দী খানের রাজ্য শাসন সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে নবাব আলীবর্দী খানের শাসনকাল একটি স্মরণীয় অধ্যায়। আলীবর্দী খান একজন অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন।

→ আলীবর্দী খানের রাজ্য শাসন : আলীবর্দী খানের রাজ্য শাসন সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :

১. বাংলার মসনদ অধিকার : নবাব সুজাউদ্দিনের মৃত্যুর পর তার পুত্র সরফরাজ খান ১৭৩৯ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার মসনদ লাভ করেন। শাসক হিসেবে তিনি দুর্বল হওয়ায় আলীবর্দী খান ও হাজি আহম্মদ মসনদ দখলের জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করেন। 

সরফরাজ খান এ সংবাদ জানতে পেরে মহাবিপদে পড়েন। যে সব আমির এ ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত ছিলেন তারা নবাবকে আলীবর্দীর সঙ্গে এক আপোষ মীমাংসায় আসার জন্য পরামর্শ দেন। 

কিন্তু অন্যান্য আমিরগণ যুদ্ধ ঘোষণার মন্ত্রণা দেন। ফলে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে। মুর্শিদাবাদের ২৬ মাইল উত্তরপশ্চিমে গিরিয়া নামক স্থানে ১৭৪০ সালের ৯ মে সরফরাজ খান ও আলীবর্দী খানের মধ্যে ঘোরতর যুদ্ধ শুরু হয়। 

গিরিয়ার যুদ্ধে সরফরাজ খান পরাজিত ও নিহত হন। যুদ্ধের ২ দিন পর আলীবর্দী খান মুর্শিদাবাদে প্রবেশ করেন এবং বাংলার মসনদে বসেন। এ সময়ে তার বয়স ছিল ৬০ বছর।

২. রাজ্যশাসন : আলীবর্দী খান যখন বাংলার মসনদে বসেন তখন তার বয়স ছিল ৬০ বছর। কিন্তু তার কর্মদক্ষতা ও নৈপুণ্য কোনো অংশে কম ছিল না। 

তিনি তার ভাতিজা ও জামাতা নওয়াজিশ মুহাম্মদ খানকে বাংলার সুবার দিওয়ান ও জাহাঙ্গীরনগরের নায়েব নাযিম নিয়োগ করেন। নবাব তার কনিষ্ঠ ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা জৈনুদ্দিনকে বিহারের নায়েব নিয়োগ করেন। 

তার বৈমাত্রেয় ভগিনী শাহখানমের স্বামী মীর মুহাম্মদ জাফর খান পুরাতন সৈন্যদলের বখশী পদে নিয়োগ করা হয় এবং নুরুল্লাহ বেগ খানকে নতুন সৈন্যদলের বখশী পদে নিয়োগ করা হয়। 

নবাব তার ২য় ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা সৈয়দ আহম্মদ খানকে রংপুরের ফৌজদার এবং আতাউল্লাহ খানকে আকবর মহল ও ভাগলপুরের ফৌজদারির দায়িত্ব অর্পণ করেন। 

কামান, বারুদ ও নৌবহরের দারোগা পদগুলোতে যোগ্য লোক নিয়োগ করা হয় । মসনদ অধিকারের কয়েক মাস পরে আলীবর্দী খান সম্রাট মুহাম্মদ শাহের নিকট হতে সনদ লাভ করেন। 

এ সনদের দ্বারা সম্রাট তাঁকে বাংলা ও বিহারের সুবেদার নিয়োগ করেন এবং তাকে ও পরিবারের লোকদেরকে উপাধি ও মনসব দান করেন। এর ফলে বাংলার মসনদের আলীবর্দীর অধিকার বৈধ বলে গণ্য হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে নবাব আলীবর্দী খান অতিসামান্য অবস্থা হতে সফলতার চরম শিখ,ে আরোহণ করে। তার রাজ্যশাসন প্রক্রিয়া জনগণের হিতৈষীমূলক ছিল। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ