খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী । খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে

খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী । খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে
খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী । খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে

খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী । খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে

উত্তর : ভূমিকা : রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে রাজনীতি সম্পর্কে ব্যক্তির মাতমত, মনোভাব ও মূল্যবোধের সমষ্টি। 

রাজনৈতিক ব্যবস্থার সাথে জনসম্পৃক্ততার ভিত্তিতে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি অন্যতম ।

খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি : খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির ইংরেজি প্রতিশব্দ Fragmented political culture। খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি হলো রাজনৈতিক জীবন তথা রাজনৈতিক ব্যবস্থা কিভাবে পরিচালিত হবে এ বিষয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক ঐকমত্যের অভাববোধ (A fragmented political culture is one whose population lacks broad agreement upon the way in which political life should be conducted) খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বা নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ সীমিত হয়ে থাকে। 

কেননা রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনার বিষয়ে সমাজের জনগোষ্ঠী বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভাজিত এবং ভিন্ন ভিন্ন মতবাদে বিশ্বাসী। 

সরকার ও জনসাধারণের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান তৈরি হয় এবং তাদের মধ্যে রাজনৈতিক জীবনের প্রতি পরস্পরবিরোধী মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে। ফলে রাষ্ট্রীয় সংহতি ও একাত্মার ক্ষেত্রে সংকট দেখা দেয়। 

খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জনসধারণের মধ্যে জাতীয় প্রতিষ্ঠান, কর্তৃত্ব, প্রতীক ইত্যাদির প্রতি আনুগত্যের অভাব এবং সংকীর্ণ রাজনৈতিক আনুগত্যের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। 

একটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর অস্তিত্ব থাকায় তাদের মধ্যে বহু অমীমাংসিত বিরোধ বিরাজমান থাকে। 

এসব অমীমাংসিত বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অনেক সময় রাষ্ট্র নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতির পরিবর্তে হিংসাত্মক উপায়কে বেছে নেয়। 

ফলে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস কাজ করে। 

সরকারি কর্মকাণ্ডে জনসম্পৃক্ততা না থাকায় সরকার অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে কোন জাতীয় সরকারই স্থায়ী রূপ লাভ করে না। 

রাজনৈতিক সংস্কৃতির সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

প্রথমত, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে জনগণের মধ্যে ব্যাপক ঐকমত্যের অভাব পরিলক্ষিত হয়।

দ্বিতীয়ত, সাধারণত জনগণ বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভাজিত হয়ে পড়ে।

তৃতীয়ত, সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কেননা সরকারের প্রতি জনগণের কোন সমর্থক থাকে না।

চতুর্থত, গোষ্ঠীগত সমস্যার সমাধানে রাষ্ট্র অনেক সময় হিংসাত্মক উপায়কে বেছে নেয় ।

পঞ্চমত, মতাদর্শগত বিরোধ থাকায় রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, খণ্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত ও নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়। ফলে কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ