টেকসই উন্নয়ন ও সবুজ অর্থনীতির সম্পর্ক আলোচনা কর
টেকসই উন্নয়ন ও সবুজ অর্থনীতির সম্পর্ক আলোচনা কর |
টেকসই উন্নয়ন ও সবুজ অর্থনীতির সম্পর্ক আলোচনা কর
উত্তর : টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে আজ সমস্ত পৃথিবীতে একটি জোরদার স্লোগান উঠেছে যে Go Green বা Back to Green. যদি অনেকে সবুজ অর্থনীতি বলতে শুধু বনায়নকে বঝায় বা কৃষির অগ্রগতিই বেশি প্রকাশ করে কিন্তু আজ গ্রিন হাউস প্রভাবের কারণে আবার পরিবেশবাদীরা সবুজ বলে আতচীৎকার করছে।
টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে বা ভবিষ্যত প্রজন্মের দিকে নজর দিয়ে সবুজ অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য সমস্ত পৃথিবীর মানুষ পরস্পরকে হুশিয়ার করে দিচ্ছেন।
১৯৯২ সালে আর্থ সামিটে বা ধরিত্রী সম্মেলনের মাধ্যমে সবুজ অর্থনীতির দিকে বিশেষ নজর দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
তাদের মতে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করে নতুন বনায়ন করে বিশ্বে বনায়ন বাড়াতে হবে তবে সবুজ অর্থনীতির প্রাথমিক বা প্রথম শর্ত পূরণ হবে এবং বিশ্বের টেকসই উন্নয়নের প্রথম শর্ত পালিত হবে।
সুতরাং ক্ষুদ্রতম অর্থে বা সংক্ষেপে সবুজ অর্থনীতি বলতে পরিবেশ অটুট রাখার জন্য বৃক্ষনিধন বন্ধ এবং বনায়ন সৃষ্টি করার মাধ্যমে পৃথিবীর সবুজের মাত্রা বৃদ্ধিকে বুঝায়।
কিন্তু পৃথিবীতে অর্থনীতি শুধুমাত্র আজ কৃষিভিত্তিক বা বনায়নের উপরই নির্ভরশীল নয়। আজ পৃথিবীতে শিল্পায়নের প্রভাব মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষিত করছে।
ডা. সুতরাং বর্তমান শিল্পায়নের আধুনিক যুগে সবুজ অর্থনীতির সংজ্ঞার নতুনত্ব সৃষ্টি হয়েছে বা হচ্ছে। পরিবেশের স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রেখে কোনোরূপ ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ব্যবস্থাকে সবুজ অর্থনীতি বলে।
বৃহৎ অর্থে প্রাকৃতিক সম্পদ, মানব সম্পদ ও শক্তির ভারসাম্য রক্ষার মাধ্যমে Sustainability Development অর্জনের প্রচেষ্টায় নিয়োজিত অর্থনীতিকে সবুজ অর্থনীতি বলে।
বর্তমানের গ্রীন হাউস ইফেক্ট, এসিড বৃদ্ধি, বায়ু দূষণ, পান দূষণ, মাটি দূষণ, শব্দ দূষণ মুক্ত অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য ব্যবস্থাকে সবুজ অর্থনীতি বলা যায় ।
সবুজ অর্থনীতি ভবিষ্যত প্রজন্মের চাহিদা সুতরাং সবুজ অর্থনীতি নিম্নরূপে গড়ে তোলা যেতে পারে :
১. নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার;
২. নবায়ন, উদ্যান, পুনঃবনায়ন, বন্যপ্রাণী, সামগ্রিক প্রাণী রক্ষা, নগর বনায়ন, পার্ক সৃষ্টি ।
৩. কৃষি ও জৈব কৃষি বৃদ্ধি;
৪. বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন;
৫. রিসাইক্লিং ব্যবস্থার উন্নয়ন;
৬. সবুজ দালান-কোঠা সৃষ্টি;
৭. বায়ু দূষণ রোধ;
৮. পানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন;
৯. মাটি দূষণ ও মাটি ক্ষয় রোধ;
১০. সবুজ পরিবহণ ব্যবস্থা;
১১. অনবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ।
১২. নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে অনবায়নযোগ্য শক্তির বিকল্প শক্তি উদ্ভাবন বা আবিষ্কার;
১৩. প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ও দক্ষতাপূর্ণ ব্যবহার;
১৪. মানব সম্পদের উন্নতির মাধ্যমে মানবীয় মূলধন সৃষ্টি;
১৫. জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ;
১৬. দরিদ্রতা দূর;
১৭. মাদকমুক্ত বিশ্ব গড়া ও
১৮. ধনবৈষম্য দূর ।