এই প্রাণদান আমরা ব্যর্থ হতে দেবো না কে কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছে
এই প্রাণদান আমরা ব্যর্থ হতে দেবো না। কে, কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছে?
![]() |
এই প্রাণদান আমরা ব্যর্থ হতে দেবো না। কে, কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছে? |
উত্তর:পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত নবাব সিরাজ-উ-দ্দৌলা রাজধানী রক্ষা করার জন্য সেনাপতি মোহনলালের পরামর্শে পালিয়ে এসেছিলেন মুর্শিদাবাদে। নবাব নাগরিকদের অভয়দান করে বোঝাতে চেষ্টা করেছেন যে, পলাশীর যুদ্ধে পরাজয় অর্থ চূড়ান্ত ব্যর্থতা নয়। এখনও যদি সম্মিলিত জনতা প্রতিরোধ গড়ে তোলে তবে দেশের স্বাধীনতা রক্ষা সম্ভব।
নবাব তাই জনতার কাছে আকুল আবেদন জানায় এবং তাদের মধ্যে দেশপ্রেম চেতনা ও মনোবল সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। কিন্তু নবাবের অভয়বাণীতে ভরসা পাচ্ছে না দরবারে উপস্থিত জনতা। তাদের মধ্যে থেকে একজন স্পষ্টতই বলেছে যে এত বড় সেনাবাহিনী যখন যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে গেছে তখন নিরস্ত্র জনতা কীভাবে শত্রুপক্ষকে মোকাবেলা করবে।
সিরাজ তাদেরকে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, পলাশীতে যুদ্ধ সংঘটিত হয় নি, হয়েছে যুদ্ধের অভিনয়, ষড়যন্ত্রকারীদের প্ররোচনায় সেনাবাহিনীর অধিকাংশই দেশবাসীর সঙ্গে, দেশের মাটির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আর যারা দেশের স্বার্থকে বড় নবাব করে দেখেছিলো, মুষ্টিমেয় সেই কজনই দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ করেছে।
সিরাজ-উ-দ্দৌলার দৃষ্টিতে এইসব আত্মোৎসর্গকারী যোদ্ধা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। এদের প্রাণদান ব্যর্থ হবে না। দেশের স্বাধীনতার জন্যে, দেশবাসীর জন্যে তারা জীবন দিয়ে যে আদর্শ রচনা করেছেন, সে আদর্শকে সমুন্নত রাখতে হবে। সিরাজ মনে করেন, স্বাধীনতা সংগ্রামীর বীরোচিত আদর্শ যাতে লাঞ্ছিত না হয় সে চেষ্টা করতে হবে। তাদের এ প্রাণদানকে ব্যর্থ হতে দেবেন না।
তাই সমগ্র জনতাকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে সহমর্মীদের সহযোগিতা নিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে, দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করবেন । এরই মধ্যে দিয়ে আত্মোৎসর্গীকৃৎ শহীদদের যথাযোগ্য মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে ।