পরমেশ্বর এ ভিটায় স্নান আহার করিতে দেন এমত বোধ হয় না কারণ কী
পরমেশ্বর এ ভিটায় স্নান আহার করিতে দেন, এমত বোধ হয় না। কারণ কী
![]() |
| পরমেশ্বর এ ভিটায় স্নান আহার করিতে দেন, এমত বোধ হয় না। কারণ কী |
উত্তর: স্বরপুর গ্রামে গোলকবসুর সাতপুরুষের বাস। পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া বিষয় সম্পত্তিকে ভিত্তি করে ক্রমান্বয়ে তার সাংসারিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে। ক্ষেতের চাল, ডাল, তেল তরিতরকারি, মাছের পুকুর নিজেদের হাতের দুধ- বেশ সুখকর তাদের জীবন কিন্তু সুখের দিনের মধ্যে অন্ধকারের আচড় কাটছে নীলকরেরা। নীলের ব্যবসা জমজমাট বলে স্বরগ্রামে নীলকুঠি স্থাপিত হয়েছে।
কৃষকদেরকে নীলচাষে বাধ্য করা হচ্ছে। কিন্তু নীল চাষের জন্য নীলকর তাদেরকে কোন টাকাই দিচ্ছে না। নীলকরের অত্যাচারে অনেক কৃষকই গ্রাম ছেড়েছে। গোলকবসুর সাতপুরুষের বাস সে এখন শিকড় গাড়া বৃক্ষ, তার দেশ ত্যাগ করাও কঠিন। নীলকরেরা গত বছর তার ৫০ বিঘা জমিতে নীল করিয়ে চারটি পয়সাও দেয় নি, এবার আবার ষাট বিঘাতে নীল চাষের নির্দেশ দিয়েছে।
নীল চাষে অসম্মত হলে ঘরবাড়ি ভেঙে বেত্রাবতীর জলে ফেলে দেবে বলে শাসিয়েছে। তাছাড়া তার বাড়ির পুকুর পাড় পর্যন্ত নীল চাষ বিস্তৃত করছে, মেয়েদের পুকুর ঘাটে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নীল চাষ না করলে নবীন মাধবকে জেলে দেবে। এমনি তাদের জীবনের হালচাল।
আদুরী তাদেরকে স্নান করে খাওয়ার জন্য বলছে, কিন্তু গোলকবসু ভাবছে যে নীলকরদের কারণে হয়ত এ ভিটায় থেকে আর আহার করার সুযোগ তাদের হবে না। কৃষক গোলকবসুর এ দীর্ঘশ্বাস এখানে বাঙ্ময় হয়ে উঠেছে।
