রঘুপতির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

রঘুপতির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও 

রঘুপতির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও
রঘুপতির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও 


উত্তর: বিসর্জন নাটকে মিথ্যা ধর্মবোধ ও অন্ধসংস্কার তার প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে ত্রিপুরা রাজ মন্দিরের পুরোহিত ব্রাহ্মণ রঘুপতির চরিত্রে রূপায়িত। রানী গুণবতীর স্বার্থ বিজড়িত সংস্কার এবং প্রথামূলক ধর্মবোধ তার সাহায্যকারী। রঘুপতি মনে করে ধর্মরক্ষার সম্পূর্ণ দায়িত্ব তার উপর অর্পিত।

 রাজ আদেশে বলি বন্ধ হলে তা তার অহংবোধে লেগেছে। রাজার সাথে তার দ্বন্দ্ব মূলত ধর্মরক্ষার জন্য নয়, বরং আত্মরক্ষার্থে, গর্ব-অহংকার ও দম্ভ রক্ষার্থে। বুদ্ধি ও সাহসে সে অসাধারণ, তেমনি উদ্দেশ্য সাধনে দৃঢ়চিত্ত, বদ্ধপরিকর ও অদ্ভুত কৌশলী। সে সত্য-মিথ্যা, পাপ-পুণ্য বর্জিত বিবেকহীন পাষণ্ড। 

সে নিজ স্বার্থ রক্ষার্থে মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে শিষ্য জয়সিংহকে এবং রাজভ্রাতা নক্ষত্রকে রাজহত্যায় অনুপ্রাণিত করে। সরলা রানীর বিশ্বাসকে পুঁজি করে রাজার বিরুদ্ধে রানীকেই সে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। সে প্রতিমার আড়ালে লুকিয়ে থেকে 'রাজরক্ত চাই' বলে চীৎকার করে জয়সিংহকে রাজার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে। 

সে নিজ হাতে প্রতিমার মুখ ঘুরিয়ে রেখে জনগণকে বোঝায় যে রাজা বলি বন্ধ করায় মা মুখ ফিরিয়ে রেখেছে। সে অবিচল। মাত্র একবার বিচলিত হয়েছে- আট বছরের নির্বাসন দণ্ড হলে। তার বুকে জ্বালা ধরে গিয়েছে তার সব গর্ব বিচূর্ণ হয়েছে কিন্তু সে হাল ছাড়ে নি। 

পুত্রতুল্য জয়সিংহকে হত্যায় যুক্তির পর যুক্তি দিয়েছে, তার উপর অভিমান করেছে। শেষ পর্যন্ত জয়সিংহ রাজরক্ত এনে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছে। তবে তার চেতনা হয়েছে পুত্রতুল্য জয়সিংহকে হারিয়ে। পাষাণ স্তূপ দেবীকে গোমতীর জলে নিক্ষেপ করে সে মানবী দেবী অপর্ণার হাত ধরে মন্দির ছেড়েছে। একমুখীন এ চরিত্রের সর্বৈব সাফল্য নাটকের শেষে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ