এক পুত্রশোকে তুমি আকুলা, ললনে, শতপুত্রশোকে বুক আমার ফাটিছে দিবানিশি। — ব্যাখ্যা কর

এক পুত্রশোকে তুমি আকুলা, ললনে, শতপুত্রশোকে বুক আমার ফাটিছে দিবানিশি। — ব্যাখ্যা কর

এক পুত্রশোকে তুমি আকুলা, ললনে, শতপুত্রশোকে বুক আমার ফাটিছে দিবানিশি। — ব্যাখ্যা কর
এক পুত্রশোকে তুমি আকুলা, ললনে, শতপুত্রশোকে বুক আমার ফাটিছে দিবানিশি। — ব্যাখ্যা কর

উত্তর মেঘনাদবধ কাব্যে রাবণ রক্ষকুলপতি পৌরুষদীপ্ত লঙ্কারাজ। তারই ভগ্নিকে লক্ষ্মণ অপমান করলে রাবণ প্রতিশোধস্পৃহায় ফেটে পড়ে এবং পঞ্চবটী বন থেকে সীতাকে ধরে নিয়ে আসে। 

সীতাকে উদ্ধার করতে রাম তার বিশাল বাহিনী নিয়ে লঙ্কা আক্রমণ করে। রাবণপুত্র বীরবাহু লঙ্কার লাখ লাখ দেশসেবক নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং যুদ্ধে লাখ লাখ লঙ্কান বীরের সাথে বীরবাহুও মারা যায়

বীরবাহুর মা চিত্রাঙ্গদা, বাবা রাবণ। চিত্রাঙ্গদা পুত্র বীরবাহুকে স্বামীর কাছে নিরাপদে রেখে নিশ্চিন্তে ছিল। কিন্তু পুত্রের মৃত্যুর সংবাদ শুনে চিত্রাঙ্গদা শোকে ভেঙে পড়ে। অতঃপর স্বামীর কাছে গিয়ে কৈফিয়ত চায়। কেন তার পুত্র মারা গেল। 

চিত্রাঙ্গদা বীরবাহুর মৃত্যুর জন্য রাবণের কর্মফলকে দায়ী করে। রাবণ চিত্রাঙ্গদাকে বোঝাতে চায় যে, তাকে শুধু শুধু দোষ দিয়ে লাভ নেই – এটা তার ভাগ্যের লিখন। তা না হলে রাবণের মত বিশাল শক্তিধরকে ভিখারি রাঘব এমনভাবে ধ্বংস করে দেবে তা রাবণ ভাবতেও পারে নি। 

সজারু পানের বরজে ঢুকে যেমন বরজকে তছনছ করে দেয়, তেমনি রামের বাহিনী লঙ্কায় প্রবেশ করে লঙ্কার লাখ লাখ বীর সন্তানকে বধ করেছে। চিত্রাঙ্গদা তার এক পুত্র বীরবাহুর জন্য বিষণ্ণ বিমর্ষ শোকাকুলা ও উদভ্রান্ত। অথচ লঙ্কারাজ রাবণ লঙ্কার লাখো সন্তান হারিয়ে তার বুক বিদীর্ণ হয়ে গেছে। 

সে যদি ভেঙে না পড়ে তাহলে পুত্রশোকে কেন চিত্রাঙ্গদা ভেঙে পড়বে। এখানে কবি রাবণের মধ্য দিয়ে লঙ্কারাজকে লঙ্কার সকল সন্তানের জনক হিসেবে দেখিয়েছেন ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ