দীনবন্ধু মিত্রের 'নীল দর্পণ' উদ্দেশ্যমূলক নাটক, স্বীকার কর কি

 দীনবন্ধু মিত্রের 'নীল দর্পণ' উদ্দেশ্যমূলক নাটক, স্বীকার কর কি

দীনবন্ধু মিত্রের 'নীল দর্পণ' উদ্দেশ্যমূলক নাটক, স্বীকার কর কি
 দীনবন্ধু মিত্রের 'নীল দর্পণ' উদ্দেশ্যমূলক নাটক, স্বীকার কর কি

উত্তর সাহিত্যিক কোন না কোন সমাজের মানুষ, ফলে সমাজের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা অনস্বীকার্য। তাই সাহিত্যে সমাজমনস্কতা স্বাভাবিক তথা লেখকের কিছু বক্তব্য উঠে আসেই। কোন সাহিত্যই এক অর্থে উদ্দেশ্যমূলকতা মুক্ত নয়। তবে লক্ষণীয় সাহিত্য যেন উদ্দেশ্য সর্বস্ব না হয়। সাহিত্যের নিজস্ব ধর্মরক্ষা করে উদ্দেশ্য সাধন করেও শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম হতে পারে ।

'নীল দর্পণ' নাটকের ভূমিকায় নাট্যকার বলেছেন— “নীলকর-নিকর করে নীল দর্পণ অর্পণ করিলাম। এক্ষণে তাহারা নিজ নিজ মুখ সন্দর্শনপূর্বক তাঁহাদিগের ললাটে বিরাজমান স্বার্থপরতা কলঙ্কতিলক বিমোচন করিয়া তৎপরিবর্তে পরোপকার শ্বেতচন্দন ধারণ করুন; তাহা হইলে আমার পরিশ্রমের সাফল্য, নিরাশ্রয় প্রজাব্রজের মঙ্গল এবং বিলাতের মুখ রক্ষা। 

অতএব স্পষ্ট যে- নিরাশ্রয় কৃষক সমাজকে নীলকরদের অত্যাচার ও অবিচারের হাত থেকে রক্ষা করাই নাটকটির উদ্দেশ্য। তবে লক্ষণীয় যে নীল আন্দোলন শেষ হলেও নাটকটির আবেদন রয়ে গেছে। তদুপরি নীল দর্পণের মত কোন গ্রন্থ বঙ্গ সমাজকে এতটা কম্পিত করতে পারে নি।

 নাটকটি বঙ্গ সমাজে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। অর্থাৎ নাটকটি সাময়িক উদ্দেশ্য সাধনে সার্থক ভূমিকা যেমন পালন করেছিল, তেমনি সাময়িকতাকে অতিক্রম করে এ যুগের পাঠক দর্শকের মনেও আবেদন সৃষ্টিতে সমর্থ হয়েছে।

 তাই 'নীল দর্পণ' উদ্দেশ্যমূলক নাটক হলেও উদ্দেশ্য সর্বস্বতা এ নাটকের ধর্ম নয়। দীনবন্ধু জীবনধারা ও জীবন সত্যের গভীরে প্রবেশ করে নাটকের চরিত্রগুলোকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে, সেগুলো সাময়িকতার গণ্ডি অতিক্রম করে চিরন্তনতার ঔজ্জ্বল্যে ভাস্বর হয়ে উঠেছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ