সংক্ষেপে 'নীল দর্পণ' নাটকের পটভূমি আলোচনা কর
সংক্ষেপে 'নীল দর্পণ' নাটকের পটভূমি আলোচনা কর
সংক্ষেপে 'নীল দর্পণ' নাটকের পটভূমি আলোচনা কর
উত্তর রঞ্জন দ্রব্য হিসেবে পৃথিবীর সর্বত্রই নীলের ব্যবহার ছিল। উৎকৃষ্ট নীলের গাছ কেবল ভারত উপমহাদেশেই জন্মে। ফলে ১৭৭৭ সাল থেকে এ দেশে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে নীল চাষ শুরু হয়। উনিশ শতকের প্রথমদিকে এদেশে নীল ব্যবসা জমজমাট।
প্রথমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এ ব্যবসা করলেও পরে তা ইংরেজদের হাতে চলে যায়। প্রথমদিকে কৃষকদের তেমন ক্ষতি হয় না, তবে ইউরোপের বাজারে নীলের দাম পড়ে যাওয়ায় নীলচাষীরা মজুরি ফাঁকিতে পড়ে এবং কৃষকদেরকে নীলের দাদনে বাধ্য করা হয়। দাদনের ফাঁদে পড়ে কৃষকদের জীবন মরণ সমস্যার সৃষ্টি হয়।
নীল কুঠিয়ালদের অত্যাচারের মুখে বাংলার চাষী নীলচাষে বাধ্য হয়। ক্রমশ নীলকরদের অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। নীলকরের জুলুমের বিরুদ্ধে বাংলার চাষীরা ধীরে ধীরে সংগঠিত হতে থাকে।
শেষে ১৮৬০ সালে আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে নদীয়া, যশোর, বারাসাত, পাবনা, রাজশাহী, মালদহ, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রায় ৫০ লক্ষ কৃষক এ আন্দোলনে যুক্ত হয়।
এ আন্দোলনে কৃষকদের সাথে বুদ্ধিজীবীদেরও সমর্থন ছিল।খুলনা জেলার নীলকৃষকদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে বিশাল লাঠিয়াল বাহিনী গঠিত হয় এবং তারা নীলকরদের পরাস্ত করতে সক্ষম হয়।
এ সংঘর্ষ দীনবন্ধুকে 'নীল দর্পণ' নাটক লিখতে অনুপ্রাণিত করে। নাটকে নবীনমাধবের নেতৃত্বে নীলকরদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ কৃষ্ণনগরে বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস ও দিগম্বর বিশ্বাসের সংঘবদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়।
ক্ষেত্রমণির বিষয়টি নদীয়া জেলার কৃষককন্যা হরমণির প্রসঙ্গ অনুসরণ করে লেখা। মূলত বাংলার ওপর নীলকরদের যে অত্যাচার ও দৌরাত্ম্য, তারই পটভূমিতে দীনবন্ধু ‘নীল দর্পণ' নাটক রচনা করেছেন।
.png)